অনলাইন ডেস্ক : নাবালিকাকে অপহরণের পর যৌনাচারের মামলায় ২ যুবককে কারাবাসের সাজা শোনালো কাছাড়ের স্প্যাশাল জাজ(পকসো) নারায়ণ কুরির আদালত। সাজাপ্রাপ্ত ২ যুবকের একজন লালমোহন পাসি ওরফে সঞ্জু লক্ষীপুর থানা এলাকার বড়মামদা, অন্যজন মঞ্জু পাশি ছোটমামদার বাসিন্দা।
অপহরণের পর যৌনাচারের মামলা হলেও, লক্ষীপুর থানা এলাকার রূপাইবালি তেমাথার বাসিন্দা যৌনাচারে অভিযুক্ত লালামিয়া ওরফে আলাউদ্দিন পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। লালমোহন ও মঞ্জু
জড়িত ছিল নাবালিকাকে অপহরণে। তাই তাদের দুজনকে অপহরণে জড়িত থাকার দরুন ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৬ ধারায় ৪ বছর করে কারাবাসের সাজা শোনানো হয়েছে। সঙ্গে জরিমানা করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা করে। জরিমানা অনাদায় তাদের ভোগ করতে হবে আরও ৩ মাস করে কারাদণ্ড।
নির্যাতিতার বাড়ি লক্ষীপুর থানা এলাকার কোনও এক স্থানে। ২০১৭ সালে যখন তার বয়স ছিল ১৪, তখন তাকে অপহরণ করে তার উপর যৌনাচার চালানো হয়। তাকে অপহরণ করা হয়েছিল ২০১৭ সালের ১৮ মে। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ সে বাড়ির কাছে এক দোকানে কেনাকাটা করতে গিয়েছিল। দোকান থেকে ফেরার পথে তাকে অপহরণ করা হয়। পরদিন ধলাই এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। তখন নির্যাতিতা কাছেই একটি দোকানে গিয়ে তার পরিজনদের ফোন করে। এরপর পুলিশ সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে।
উদ্ধার হওয়ার পর নাবালিকা জানায়, সে দোকান থেকে বাড়ি ফেরার সময় হঠাৎ করে বাইকে চড়ে তার সামনে হাজির হয় লালমোহন, মঞ্জু ও লালা মিয়া। তারা তার মুখে কাপড় চাপা দিয়ে ধরে। এরপর তাকে জবরদস্তি বাইকে উঠিয়ে নেয়। সেসময় মঞ্জু সেখান থেকে সরে যায়। লালমোহন ও লালামিয়া বাইকে করে তাকে নিয়ে যায় ধলাই ভাগা বাজার এলাকায়। সেখানে পৌঁছে লালমোহন বাইক থেকে নেমে যায়। এরপর লালা মিয়া কাছেই নিজের এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যায় তাকে। সেখানে রাতে লালামিয়া তার উপর বলপূর্বক যৌনাচার চালানোর চেষ্টা চালায়। এভাবে রাত পার হওয়ার পরদিন লালামিয়া তাকে ধলাই থানার কাছে ছেড়ে যায়। তখন সে কাছের একটি দোকানে গিয়ে দোকানীর সহায়তায় ফোন করে বাড়িতে সবকিছু জানায়।
নাবালিকা উদ্ধার হওয়ার পরবর্তীতে পুলিশ গ্রেফতার করে লালমোহন ও মঞ্জুকে। তবে লালামিয়া পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে লালমোহন এবং মঞ্জু জামিনে মুক্তি পায়। লালামিয়া পালিয়ে গেলেও পুলিশ তার খোঁজ চালাতে থাকে। যদিও তাকে আর পাওয়া যায়নি।
পুলিশি তদন্ত প্রক্রিয়ার পর মামলা গড়ায় আদালতে। লালামিয়া পালিয়ে যাওয়ায় তাকে পলাতক ঘোষণা করে লালমোহন ও মঞ্জুর বিরুদ্ধে আদালতে শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। বিচার প্রক্রিয়ার পর আদালত গত বুধবার লালমোহন ও মঞ্জুকে দোষী বলে সাব্যস্ত করে। এরপর শুক্রবার তাদের সাজা ঘোষণা করা হয়।