অনলাইন ডেস্ক : শিলচরে থাকাকালেও ‘মেজাজ হারানোর’ দায়ে জড়িয়ে ছিলেন একাধিক বিতর্কে। এবার বরপেটা জেলা পরিষদের সিইও’র সঙ্গে অভব্য আচরণ এবং তাঁকে শারীরিক নিগ্রহের দায়ে শোকজ নোটিশের সম্মুখীন হলেন সে জেলার (বরপেটা) ডিস্ট্রিক্ট কমিশনার রোহন কুমার ঝা। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার পর তাঁকে এই নোটিশ জারি করেছেন রাজ্য সরকার নিযুক্ত তদন্তকারী অফিসার। জানিয়ে দিয়েছেন, উত্তর সন্তোষজনক না হলে ডিস্ট্রিক্ট কমিশনারের বিরুদ্ধে কড়া অনুশাসনমূলক ব্যবস্থা নেবে সরকার।
ঘটনা ২৯ নভেম্বরের। অভিযোগ, এদিন বরপেটা জেলা পরিষদের এক সহকারী প্রকৌশলীকে বদলি করা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সিইও অরূপ পাঠকের সঙ্গে কার্যালয়ের ভেতর অভব্য আচরণ এমনকি টানাহেঁচড়া এবং শারীরিক হেনস্তা পর্যন্ত করেন জেলাশাসক রোহন কুমার ঝা। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন জেলাপরিষদের নির্যাতিত সিইও অরূপ পাঠক নিজে। একজন আইএএস আধিকারিকের এহেন আচরণকে ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় রাজ্যে। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা’র হস্তক্ষেপ দাবি করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায় আসাম সিভিল সার্ভিস অফিসারস অ্যাসোসিয়েশন (এসিএসওএ)। এমন পরিস্থিতিতে তদন্তের নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকার। ইতোমধ্যে তদন্তের কাজ গুটিয়ে এনেছেন রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক সচিব মুকেশ চন্দ্র সাহু। বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিইও অরূপ পাঠককেও। এদিকে, গুয়াহাটি থেকে সম্প্রচারিত একটি স্যাটেলাইট চ্যানেলে দাবি করা হয়েছে, তদন্তে অভিযুক্ত জেলাশাসক রোহন কুমার ঝা’র বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তিনি যে জেলাপরিষদের সিইও অরূপ পাঠকের সঙ্গে অভব্য আচরণ এবং শারীরিক নিগ্রহের মতো কাণ্ড ঘটিয়েছেন, ওইদিনের সিসিটিভি ফুটেজ-এ প্রমাণ মিলেছে তারই। উল্লেখ্য, বদলি হয়ে বরপেটায় যাওয়ার আগে কাছাড়ের জেলা শাসকের দায়িত্বে ছিলেন রোহন কুমার ঝা। এর আগে তিনি ছিলেন হাইলাকান্দির জেলাশাসক। দায়িত্বে থাকাকালে এ দুই জেলায়ও তাঁর ‘মেজাজ হারানোর’ ঘটনাবলী নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। বিশেষ করে ২০২২ সালের ২১ আগস্ট চতুর্থ শ্রেণির নিযুক্তি পরীক্ষাকে ঘিরে শিলচর কাছাড় কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষক স্বদেশ রঞ্জন দাসকে ‘চড় মেরে ওঠবস’ করানোর অভিযোগে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় উপত্যকার শিক্ষক মহলে। এরপরও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি তাঁর। শিক্ষকদের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগে বারবার বিদ্ধ হয়েছেন। শিলচর থেকে বদলির দিন কয়েক আগে জেলাশাসক কার্যালয়ে জনৈক শিক্ষিকার সঙ্গে তাঁর আচরণ সমালোচিত হয় শিক্ষক মহলে। এবার বরপেটার জেলা পরিষদের সিইও পদে নিযুক্ত এসিএস আধিকারিকের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে।