অনলাইন ডেস্ক : দুজনেই দূধর্ষ অপরাধী। তবে এতো সল্প সময়ে হিফজুর ও দীপের মধ্যে কিভাবে সম্পর্ক এতোটা ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠল যে একসঙ্গে তারা জেল থেকে পালানোর মতো দুঃসাহসিক পরিকল্পনা করে বসলো। ব্যাপারটা অনেকটাই চমকে দিয়েছে পুলিশকে।
শিলচর ঘুঙ্গুর ভেটেরিনারি হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা দীপ নুনিয়া ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে খুন করেছিল তার বন্ধু ধোয়ারবন্দ এলেনপুর এলাকার বাসিন্দা রাজু কালিন্দী (২৮) কে। নিজের বাড়িতে ডেকে এনে খুন করার পর দীপ রাজুর মৃতদেহ পুতে রেখে দেয় শৌচাগারে মাটির নিচে। পরবর্তীতে দীপের মা-ই ব্যাপারটা পুলিশকে জানিয়ে দেন। আর পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে। এরপর ১৮ নভেম্বর তাকে প্রেরণ করা হয় জেল হাজতে। সেই থেকে সে বন্দী ছিল জেলে। জেলে বন্দী থাকতে থাকতেই আদালত তাকে যাবজ্জীবন করাবাসের সাজা শোনায়।
আর নাজ হত্যা ও অপহরণ মামলায় বেশ বছর আগে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে হিফজুর বন্দি ছিল করিমগঞ্জ জেলে। তাকে শিলচর জেলে স্থানান্তরিত করা হয় গত ৭ এপ্রিল। এই এক মাস সময়ের মধ্যেই দীপের সঙ্গে তার জেল থেকে পালানোর পরিকল্পনা মতো এতটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক কিভাবে গড়ে উঠলো ব্যাপারটা অবশ্যই ভাবার মতো।
দীপ সম্পর্কে জানা গেছে, সে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্মের পাশাপাশি পলায়ন বিদ্যায়ও বেশ রপ্ত । ঘুঙ্গুর এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, বিগত দিনে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন অপরাধের ক্ষেত্রে এলাকাবাসী সম্মিলিতভাবে তাকে ধরার চেষ্টা চালালেও সম্ভব হয়ে ওঠেনি। বারবারই সে বিভিন্ন উপায়ে সবাইকে ধোঁকা দিয়ে সরে পড়তে সক্ষম হয়েছে। পলায়নের ক্ষেত্রে রয়েছে তার এমনই বিশেষ ক্ষমতা। আর গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে যখন আদালতে বিচার প্রক্রিয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হতো তখনও একদিন সুযোগ বুঝে সে পুলিশকে ধোঁকা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। তার মা তাকে ধরিয়ে দেওয়ায় মায়ের বিরুদ্ধে বদলা নিতে পালিয়ে ছিল সে। যদিও ওইদিন রাতেই তাকে বাড়ি থেকে ফের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। তাই সন্দেহ করা হচ্ছে হয়তো হিফজুরের পলায়নের পথ প্রশস্ত করতেই কেউ হয়তো মধ্যস্থতা করে পলায়ন বিদ্যায় বিশেষ পারদর্শী দীপের সঙ্গে কেউ তাকে মিলিয়ে দিয়েছিল।
দীপের অপরাধের রেকর্ড ঘেটে দেখা গেছে, বন্ধু রাজু কালীন্দিকে হত্যার আগে অন্যান্য বহু অপরাধে জড়ানোর পাশাপাশি শিলচর ইন্ডিয়া ক্লাব ময়দান সংলগ্ন এলাকায় বিচার বিভাগীয় এক ম্যাজিস্ট্রেটের বাড়িতে ডাকাতি করার মতো দুঃসাহসিক কাজেও জড়িয়ে পড়েছিল। সেই ঘটনায়ও গ্রেফতার করা হয়েছিল তাকে।
এবার দীপ ও হিফজুর ধরা পড়লেই হয়তো উন্মোচিত হবে তাদের পলায়ন কাহিনীর পিছে লুকিয়ে থাকা রহস্য।