সাময়িক প্রসঙ্গ অনলাইন ডেস্ক : স্বাধীনতার ৭৫ বছর পুর্তি উপলক্ষে ১৪ আগস্ট সিপিএম কাছাড় জেলা কমিটি এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনার বিষয় ছিল ‘ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলন ও কমিউনিস্টদের ভূমিকা। দলের কার্যালয় শহীদ স্মৃতি প্রাঙ্গণের এবিজিআর ভবনে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভার শুরুতে কাছাড় জেলার দলের প্রয়াত নেতা তথা স্বাধীনতা সংগ্রামী অচিন্ত্য ভট্টাচার্য, বীরেশ মিশ্র, গোপেন রায়, দিগেন দাশগুপ্ত, ইরাবত সিংহ, দ্বিজেন্দ্রলাল সেনগুপ্ত, জীবন ব্যানার্জী প্রমুখের স্মরণে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। আলোচনা সভার অন্যতম বক্তা দলের কাছাড় জেলা সম্পাদক দুলাল মিত্র বলেন, একটা সময় দেশের অনেক সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামী মার্ক্সবাদই সঠিক পথ ভেবে এবং রুশ বিপ্লবে অনুপ্রানিত হয়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেয়। এমনকি অনেক কংগ্রেস নেতা এবং কর্মী কমিউনিস্ট পার্টিই সঠিক পথ ভেবে এই দলে যোগ দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলন চালিয়ে যান। কাছাড় জেলাও তার ব্যতিক্রম ছিল না। অরুণকুমার চন্দ যখন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি, অচিন্ত্য ভট্টাচার্য তখন সম্পাদক। সশস্ত্র সংগ্রামী গোপেন রায় আন্দামান সেলুলার জেলে বন্দি ছিলেন। ১৯৩৮ সালে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে শিলচরে এসে কমিউনিস্ট পার্টিতে যুক্ত হয়ে শ্রমিক কৃষক তথা স্বাধীনতা আন্দোলন চালিয়ে যান।
তিনি বলেন, কমিউনিস্টরা তখন শুধু স্বাধীনতার জন্যই লড়াই করেনি, শোষিত কৃষকদের মুক্তির জন্য ব্রিটিশের দোসর জমিদারদের বিরুদ্ধেও লড়াই করেছে। তাদের নেতৃত্বে কাছাড় জেলায়ও তেভাগা আন্দোলন সংগঠিত হয়। ১৯৩৬ সালে অরুনাবন্দ চা বাগানে যখন ধর্মঘট সংগঠিত হয় তখন একদিকে যে ভাবে কংগ্রেসের নেতা অরুণকুমার চন্দ শ্রমিকদের পক্ষে এগিয়ে আসেন, একই ভাবে কমিউনিস্ট পার্টি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। দুলাল মিত্র এ কথাও বলেন যে ব্রিটিশ সরকার কমিউনিস্টদের বড় বিপদ ভাবত বলেই ১৯২৪ সালে তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে কানপুর ষড়যন্ত্র মামলা, ১৯২৯ সালে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে অনেক নির্যাতন করেছে। প্রতিটি মামলার একটাই অভিযোগ ছিল যে কমিউনিস্টরা ব্রিটিশ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছিল। যারা স্বাধীনতা আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে তারাই এখন কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার ও কুৎসা রটাচ্ছে।
আলোচনা সভার অপর বক্তা দলের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সমীরণ আচার্য বলেন, স্বাধীনতা আন্দোলনে ১৯২১ সালে কংগ্রেসের আহমেদাবাদ অধিবেশনে কমিউনিস্ট নেতা হাসরথ মোহানি ও স্বামী কুমারানন্দই পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি তুলে ছিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলনে সারা দেশে যে ভাবে শ্রমিক ধর্মঘট হয়েছে তার নেতৃত্বে ছিল কমিউনিস্ট পার্টি। স্বাধীনতা আন্দোলনে যে ভাবে সহিংস ও অহিংস ধারা ছিল, ঠিক একই ভাবে তৃতীয় ধারা ছিল কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে সাম্রাজ্যবাদ ও সামন্তবাদের বিরুদ্ধে লড়াই। এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের জেলা সম্পাদকমন্ডলী তথা রাজ্য কমিটির সদস্য রেজামন্দ আলী বড়ভুইয়া।