অনলাইন ডেস্ক : সোমবার থেকে গ্যামন ব্রিজে ফের বন্ধ হচ্ছে ভারী যান চলাচল। তবে এবার তিরিশ কিংবা পঁয়ত্রিশ টন নয়, মাত্র কুড়ি টনের ছাড়পত্র দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর থেকে এক টনও বেশি ওজনের কোনও বাহনকে যাতায়াত করতে দেওয়া হবে না। এই নির্দেশ বলবৎ থাকবে ১৩ জানুয়ারি,২০২৫ পর্যন্ত। কাটিগড়ার গ্যামন সেতু বেশ কয়েকদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেতুর একাধিক বিয়ারিং বিকল হয়ে পড়ায় সেতুটি এখন বিপদজনক। তবে ওই বিকল বিয়ারিং কিংবা অন্যান্য যন্ত্রাংশ সারাইয়ের কাজ কিছু দিন ধরে করছে ন্যাশনাল হাইওয়েজ এন্ড ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল)। ফলে গত ৪ অক্টোবর সেতু সারাইয়ের জন্য এক মাসের জন্য ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তারা। তখন ৩৫ টনের বেশি ওজন পারাপারে নিষেধ করেছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ওই সময়সীমায় সেতু মেরামতের কাজ শেষ হয়নি। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে গ্যামন সেতু আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে।
স্থানীয় অনেকে জানান, আগে গ্যামন সেতু শুধু উপর-নিচে দুললে এখন ডানে-বামেও দুলছে। পায়ে হেঁটে যারা সেতুটি নিয়মিত পারাপার করেন, তাদের কাছে এটি এখন ডান্সিং ব্রিজ! অনেকে সেতুর এমন কার্যকলাপকে বিপদজনক বলেও মনে করছেন।
এদিকে, দ্বিতীয় দফায় সেতু মেরামতে হাত লাগাতে গিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এনএইচআইডিসিএল। ১৩ ডিসেম্বর নির্মাণ সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর কৃষাণ কুমার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেন, আসছে বছরের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত গ্যামন সেতু দিয়ে কোনও ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। ওই সময়সীমার ভেতর সর্বাধিক ২০ টন ওজনের যানবাহন চলাচল করতে পারবে। কৃষাণ কুমার তাঁর নির্দেশনামায় কোন কোন ধরনের গাড়ি সেতু দিয়ে যাতায়াত করবে, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। জানা গেছে, ওই সময়সীমায় এনএইচআইডিসিএল পুরোদমে সেতু মেরামতের কাজ করবে। ফলে কোনও ধরনের যানজট কিংবা অতিরিক্ত বোঝা সেতুর উপর চাইছেন না তাঁরা। তাই বিষয়টি কাছাড় জেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবগত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সেতু মেরামতের জন্য ভারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছেন সেতুর দু’পারের সাধারণ মানুষ। এই সেতুটি যে কেবল বরাক উপত্যকা কিংবা ত্রিপুরা, মিজোরামের প্রধান ভরসা, এমন নয়। বরং কাটিগড়া ও বদরপুরের মানুষের লাইফ লাইন। অসংখ্য ছাত্রছাত্রী সহ সাধারণ মানুষ প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন। ফলে সেতু অকেজো হয়ে সব ধরনের যাতায়াত বন্ধের পক্ষপাতী নন, এলাকার মানুষ। তাই ভারী যানবাহন বন্ধ করে সেতুর প্রয়োজনীয় সংস্কার তারা চাইছেন। তাই গ্যামন সেতু রক্ষার্থে সাধারণ মানুষ কাছাড় পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাদের দাবি, কঠোর পুলিশি প্রহরায় আটকানো হোক ওভার লোড সব বাহন।