অনলাইন ডেস্ক : হোজাইর প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা শিলাদিত্য দেব সম্প্রতি বরাকে এসে চরম সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করায় বরাক জুড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে এবার সরব হল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। বিডিএফের মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, সারা আসাম বাঙালি পরিষদের উপদেষ্টা হিসেবে প্রাক্তন বিধায়ক শিলাদিত্য দেব সম্প্রতি বরাকের তিন জেলায় যে সভা করেছেন, তাতে সমস্যা ছিল না। কিন্তু এইসব সভা সমিতি তথা সংবাদ মাধ্যমে যেভাবে তিনি হিন্দু মুসলিম সংক্রান্ত সাম্প্রদায়িক বক্তব্য রেখেছেন তা নিয়ে অনেকেই ক্ষুব্ধ। প্রথমে তাঁরা তাকে গুরুত্ব না দেবার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে জনগনের অনুরোধে মুখ খুলতে বাধ্য হচ্ছেন।
প্রদীপবাবু বলেন, বিধায়ক হবার সময় থেকেই শিলাদিত্য এমন চূড়ান্ত সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করে বেড়াচ্ছেন। মুসলমানদের প্রতি বিষোদগার করাই তার অন্যতম কাজ এবং সম্ভবতঃ এই কাজের জন্যই তাঁকে বিজেপি দলে রাখা হয়েছে। প্রদীপবাবু বলেন, এবারে বরাকে এসে তিনি যেসব মন্তব্য করেছেন তাতে মনে হচ্ছে তিনি এখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে চাইছেন। বরাক উপত্যকা শান্তির দ্বীপ। এখানে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, বাঙালি, জনজাতি সবাই একসাথে শান্তিতে বসবাস করছেন। বিভাজনের বহুচেষ্টা সচেতন জনগন এখানে প্রতিহত করে আসছেন। তাই শিলাদিত্য দেবের এ ধরণের অপচেষ্টা বরাকবাসী কোনও অবস্থায় মেনে নেবেন না।
প্রদীপবাবু আরও বলেন, শিলাদিত্য দেব যদি এতই হিন্দু দরদি হয়ে থাকেন তবে এনারসিতে যে বারো লক্ষ হিন্দু বাঙালি বাদ পড়েছেন, যাদের আধার কার্ডকে এতোদিন ধরে অকেজো করে রাখা হয়েছে, তাদের সম্পর্কে সম্পূর্ণ নীরব কেন? তার দল বাঙালি হিন্দুদের স্বার্থে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল উভয় সংসদে পাশ করিয়েও বছরের পর বছর ধরে বাস্তবায়ন করে না – এই ব্যাপারে তাঁর কোনও বক্তব্য নেই কেন? যখন নির্দোষ বাঙালি হিন্দুদের বারবার ডি নোটিশ দেওয়া হয়, তখন তিনি মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকেন কেন? আসামের সরকারি চাকরিতে বাঙালি হিন্দু প্রার্থীদের ইচ্ছাকৃতভাবে বঞ্চনা করা হলে তার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় না। প্রদীপবাবু চাঁচাছোলা ভাষায় এদিন শিলাদিত্য দেবকে বরাকে এসে এসব দালালি না করে বরং ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার আশি লক্ষ বাঙালির স্বার্থে মনোযোগ দেবার পরামর্শ দিয়েছেন।