অনলাইন ডেস্ক : উত্তর পূর্বাঞ্চলকে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে সাম্প্রতিক কালে “চিকেন নেক”-এ নাশকতা চালানোর হুমকি দিয়েছে বিভিন্ন জেহাদি সংগঠন। বাংলাদেশ থেকে সংগঠনগুলোর নেতারা যে মুখে হুমকি দিয়েই থেমে নেই গত কয়েকদিনে অসম ও পশ্চিমবঙ্গে ধৃত জেহাদিদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে এর প্রমাণ পেয়েছে দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো।
জেহাদিদের হুমকির জেরে অসমের এই প্রান্তিক অঞ্চল বরাক উপত্যকায়ও সতর্ক হয়ে উঠেছে নিরাপত্তা বাহিনী। গোয়েন্দা সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী জেহাদিরা “চিকেন নেক”-এ নাশকতা ঘটানোর লক্ষ্যে মায়ান্মার হয়ে
ভারতে আমদানি করতে চাইছে অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক। আর এই পরিকল্পনার মূলে রয়েছে আল কায়দার ভারত উপমহাদেশীয় শাখা আনসারউল্লা বাংলা টিম (এবিটি)। যদিও আলকায়দা বা এবিটি সরাসরি অস্ত্র ও বিস্ফোরক আমদানি করছে না। এক্ষেত্রে তারা কাজে লাগাচ্ছে, উত্তর পূর্বাঞ্চল বিশেষত মনিপুরে সক্রিয় এনএসসিএন, পিএলএ, কেএনএফ,প্রিপাক ও কেসিপি (পি ডব্লু জি)-এই ৬ জঙ্গি সংগঠনকে। মায়ান্মার থেকে মনিপুর ও মিজোরাম হয়ে বিভিন্ন অবৈধ সামগ্রীর পাচার বাণিজ্যে এসব সংগঠন জড়িত রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। সংগঠনগুলোর এই নেটওয়ার্ককে কাজে লাগাতেই এবিটি অস্ত্র ও বিস্ফোরক পাচারের ক্ষেত্রে সংগঠনগুলোকে ব্যবহার করতে চাইছে। এই ডামাডোলে স্বাভাবিকভাবেই কাছাড়কে ঘিরেও চিন্তিত হয়ে উঠেছে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো।
জঙ্গি সংগঠনগুলোর মায়ান্মার থেকে মনিপুর ও মিজোরাম হয়ে পাচার বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অন্যতম রুট এই কাছাড় জেলা। কাছাড়ের বুক হয়েই দেশের অন্যান্য অংশে পাচার করা হয়ে থাকে বিভিন্ন সামগ্রী। এনিয়ে কাছাড়ের পুলিশ সুপার নূমল মাহাতোকে জিজ্ঞেস করলে তিনি স্পষ্টভাবে কিছু না বলে উত্তর দেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতির জেরে এবং এর সূত্র ধরে জেহাদি সম্পর্কিত সব কার্যকলাপ
নিয়েই সতর্ক রয়েছে পুলিশ। গোটা জেলা জুড়ে চলছে সতর্ক নজরদারি।
এদিকে গোয়েন্দা সূত্রের খবর অনুযায়ী, এবিটি এনএসসিএন, পিএলএ সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের যে ৬ জঙ্গি সংগঠনকে অস্ত্র আমদানির জন্য নিয়োজিত করেছে এদের দায়িত্ব আমদানি করা অস্ত্র অসম পার করে দেওয়া। এরপর বাংলাদেশ হয়ে ফের সুবিধামত স্থানে সীমান্ত পার করে সেসব পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে অসমের ধুবড়ি সহ পশ্চিমবঙ্গের মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং কোচবিহারে। সেসব এলাকায় অস্ত্র মজুত করে “চিকেন নেক”-কে অশান্ত করে তোলাই জেহাদিদের লক্ষ্য। বাংলাদেশে একবার অস্ত্রশস্ত্র পৌঁছে যাওয়ার পর সেসব ফের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকানোর জন্য অবশ্য এবিটি নিজেদের নেটওয়ার্ককেই কাজে লাগাচ্ছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর মনিপুরের পূর্ব ইম্ফল জেলার বোংজাং ও ইথাম গ্রামের কাছে মনিপুর পুলিশ এবং সেনাবাহিনী বাজেয়াপ্ত করে ২৮’৫ কেজি ওজনের শক্তিশালী ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি)। এর আগে ৭ ডিসেম্বর মিজোরামের সিংসাই এলাকায় বাজেয়াপ্ত করা হয় ৭৭৫ গ্রাম বিস্ফোরক। এনএসসিএন, পি এল এ-র মতো জঙ্গি সংগঠনগুলো এবিটি-র হয়ে এসব পাচার করছিল বলে গোয়েন্দাদের অনুমান।