অনলাইন ডেস্ক : দ্বিতীয় শ্রেণীর পড়ুয়ার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করলো শিলচর রংপুর রাসবিহারী সরকারি নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে। ইমদাজ হোসেন লস্কর (৪২) নামে এই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে মঙ্গলবার।
জিৎ সিংহ নামে বছর আটেকের ওই পড়ুয়ার মায়ের নাম সুকৃতি পাল, বাবা রঞ্জিত সিংহ। মা সুকৃতি পাল ঘটনা নিয়ে রংপুর পুলিশ পেট্রোল পোস্টে এজাহার দায়ের করেন সোমবার। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, সোমবার তার ছেলে জিৎ স্কুলে গেলে শিক্ষক ইমদাজ হোসেন সামান্য কারণে তাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন। এভাবে মার খেয়ে জিৎ শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
এজাহার দায়ের করার পাশাপাশি সুকৃতি পাল সহ অন্যান্য অভিভাবকরা মঙ্গলবার সকালে স্কুলে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছেও এনিয়ে কৈফিয়ত তলব করেন। এরপর গ্রেফতার করা হয় ইমদাজ হোসেনকে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, স্কুলে হইচই শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর দেখা যায় হাজির হয়েছে পুলিশ। এরপর পুলিশ নিয়ে যায় ইমজাদ হোসেনকে।
পুলিশ সুপার নূমল মাহাতো জানিয়েছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ ইমদাজকে তাদের হাতে সমঝে দিয়েছেন। এরপর এজাহারের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এবার তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জিৎ সিংহের মা সুকৃতি পাল সহ অন্য কয়েকজন অভিভাবক এদিন অভিযোগ করেন, ইমদাজ হোসেন পাঠদানে মোটেই আগ্রহী নন। স্কুলে এসে তিনি মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত থাকেন সর্বক্ষণ। আর শুধু জিৎ নয়, এর আগেও অন্যান্য কয়েকজন পড়ুয়াকে তিনি এভাবে মারপিট করেছেন। সুকৃতি পাল অভিযোগ করেন, শুধু গতকালই নয় তার ছেলেকে এর আগেও বেশ কয়েকদিন মারপিট করেছেন ইমদাজ। ওই শিক্ষকের হাতে মার খাওয়ার ভয়ে ছেলে স্কুলেই যেতে চায় না। তাকে জোর করে পাঠাতে হয় স্কুলে।
স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি উমা দাসও জানান, ইমদাজের বিরুদ্ধে এর আগেও পড়ুয়াদের মারপিট করার অভিযোগ পেয়েছেন। এভাবে মারপিট না করার জন্য ইমদাজকে বুঝালেও তিনি নিজেকে শুধরাননি। সোমবার জিৎ সিংহকে মারপিটের খবর পেয়ে তিনি স্কুলে যান। গিয়ে দেখেন, জিৎকে হাঁটু মুড়ে বসিয়ে রেখেছেন ইমদাজ। তাকে মারপিট করা নিয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, জিৎ পেছন দিক দিয়ে এসে তার (ইমদাজের) প্যান্টে কিছু আঁকতে শুরু করেছিল। তাই বাধ্য হয়ে তিনি তাকে মারপিটের পর শাস্তিস্বরূপ হাঁটু মোড়ে বসিয়ে রেখেছেন।
এদিকে অভিযোগ নিয়ে ইমদাজ হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। বলেন এই মুহূর্তে সংবাদমাধ্যমের কাছে কিছু বলবেন না। প্রয়োজন হলে মুখ খুলবেন পরবর্তীতে।