অনলাইন ডেস্ক : নারী দিবসের সকালে বিরাট ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। এক ধাক্কায় ১০০ টাকা কমে গেল রান্নার গ্যাসের দাম। নারী দিবসে মা-বোনেদের জন্য ‘উপহার’ হিসাবে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। টুইটে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আমাদের সরকার এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১০০ টাকা করে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশের লক্ষ লক্ষ পরিবারের আর্থিক বোঝা লাঘব হবে। বিশেষভাবে উপকৃত হবে দেশের নারী শক্তি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রান্নার গ্যাসকে আরও সস্তা করে আমাদের সরকার দেশের সব পরিবারের স্বচ্ছ্বলতা এবং সুস্থ পরিবেশ রক্ষার কাজেও সাহায্য করার চেষ্টা করছে। এটা আমাদের নারীদের ক্ষমতায়ন এবং তাঁদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষে আরও একটা প্রচেষ্টা।’
গত ছ’মাসে দ্বিতীয়বার রান্নার গ্যাসের দামে বড়সড় কাটছাঁট করল কেন্দ্র। এর আগে গত ২৯ আগস্ট একধাক্কায় ২০০ টাকা করে রান্নার গ্যাসের দাম কমায় মোদি সরকার। সেবার উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় থাকা গ্রাহকদের আরও ২০০ টাকা ভরতুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। তার সঙ্গে শুক্রবার আরও ১০০ টাকা করে দাম কমল। অর্থাৎ, আগস্ট মাসে যে দরে আমজনতাকে গ্যাস কিনতে হত, এখান তার চেয়ে ৩০০ টাকা কমে মিলবে সিলিন্ডার। আর উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় থাকা গ্রাহকেরা আগস্ট থেকে ৫০০ টাকা কমে গ্যাস পাবেন। আপাতত কলকাতায় রান্নার গ্যাসের দাম দাঁড়াল ৮২৯ টাকা।
আসলে করোনাকালে লকডাউন শুরুর পর থেকেই হু হু করে বেড়েছে রান্নার গ্যাসের দাম। পাল্লা দিয়ে কমেছে ভরতুকির পরিমাণ। যার জেরে একটা সময় রান্নার গ্যাস কিনতে গেলেই ছ্যাঁকা খেতে হচ্ছিল। ভোটের মুখে দাম কমানোটা বিজেপির জন্য বাধ্যবাধকতাও হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রান্নার গ্যাসের দাম কমে যাওয়ায় আরও একটি হাতেগরম ইস্যু হাতছাড়া হল বিরোধীদের।
মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্রেফ ‘নির্বাচনী জুমলা’ বলে দেগে দিল বিরোধী শিবির। একযোগে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীদের প্রশ্ন, গ্যাসের দাম এতদিন কমানো হল না কেন? ঠিক ভোটের মুখেই কেন এই চমক? যদিও বিরোধী শিবির বলছে, শেষ মুহূর্তে গ্যাসের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত লোকসভায় কোনও প্রভাব ফেলবে না। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ বলছেন, ‘দেশের মহিলারা যখন মূল্যবৃদ্ধির কোপে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছিলেন, তখন বিশ্বের বাজারে গ্যাসের দাম কম হওয়া সত্ত্বেও রান্নার গ্যাসের দাম কমায়নি কেন্দ্র। ঠিক ভোটের আগে গ্যাসের দাম কমানো হল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজন। নির্বাচনমন্ত্রী নয়।’
এনসিপির শরদ পাওয়ার গোষ্ঠীর নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে বলছেন, ‘কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে আমি অবাক নই। ওরা ৯ বছর ক্ষমতায়। এতদিন গ্যাসের দাম কমানোর কথা কেন ভাবেনি। ভোট ঘোষণার ৫-৬ দিন আগে আরও একটা জুমলা দিল। আমাদের সরকারের আমলে গ্যাসের দাম ৪৩০ টাকা ছিল।’ কংগ্রেসের এক মুখপাত্র বলছেন, ‘বিজেপি খুব চালাক দল। ওরা ৩৭৫ টাকার সিলিন্ডার ১০০০ টাকায় বেচে। আর ভোট এলেই ১০০ টাকা কমিয়ে দেয়।’