সাময়িক প্রসঙ্গ, শিলচর, ২৫ ডিসেম্বর : প্রকাশিত হল কবি বিজয়কুমার ভট্টাচার্যের চতুর্দশ কাব্যগ্রন্থ ‘নরকেও সূর্যোদয় হয়’। শিলচরে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে গ্রন্থটির মোরক উন্মোচন করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আলাউদ্দিন মন্ডল, কথা সাহিত্যিক মিথিলেশ ভট্টাচার্য এবং চিত্রশিল্পী শিপ্রা দত্ত চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তপোধীর ভট্টাচার্য বলেন, কবিতা নিয়ে বক্তব্য রাখার কিছু নেই। কবিতা অনুভব করতে হয় এবং এটা একা একা মনোনিবেশ করেই পড়তে হয়, তাহলেই কাব্যগ্রন্থের ভেতর ঢোকা সম্ভব।
তিনি বলেন, আমরা যে ভূখণ্ডে বসবাস করি এখানে নানা সমস্যা রয়েছে। আমরা যা ভাবি, তা বলি না, আর যা বলি তা ভাবি না। এ ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে কবি তার অনুভূতিকে কাব্যের মাধ্যমেই ব্যক্ত করে থাকেন। জীবনের ঘাত প্রতিঘাত থেকেই সবকিছু নিংড়ে নিয়ে কবিরা কবিতা লেখেন। আর গ্রন্থের নাম নামকরণের সূত্র ধরেই তিনি বলেন, ‘নরকেও সূর্যোদয় হয়’ বলেই আমরা বেঁচে আছি। কেউ যদি কবিতা বুঝতে না পারেন, তাহলে সেটা কবির দোষ নয়, পাঠকের নিজের অজ্ঞতা। কবি বিজয়কুমার ভট্টাচার্য বরাক উপত্যকা থেকে তার যা প্রাপ্য সেটা এখনও পায়নি বলে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক আলাউদ্দিন মন্ডল বলেন, কবিতায় সত্যের প্রকাশ হয়ে থাকে। কবিতার নান্দনিক দিকটি অনুভব করতে হলে দর্শনশাস্ত্র অনুযায়ী যে শুদ্ধ চৈতন্যের কথা বলা হয়েছে সেখানে পৌঁছতে হবে। বিশিষ্ট কবি জপলসত্র বলেছিলেন, কবিরা প্রায় ঈশ্বর। এর সূত্র ধরেই তিনি বলেন, কবিতা নামক সৃজনে সাধনায় মগ্ন হয়ে চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছাতে হয়। যেহেতু মানুষ একটি শ্রেষ্ঠ জীব তাই মানুষের মনে স্বয়ং স্রষ্টাকে নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। এই বিশ্বে ধর্মের আগেই মানুষ এসেছে। তাই ধর্ম থাকুক আর না থাকুক, মানুষ কিন্তু এ পৃথিবীতে থাকবে।
আলাউদ্দিন বলেন, অনেকে আজকাল বলেন আধুনিক কবিতা বোঝা যায় না। আসলে আধুনিক মানুষের মধ্যে যে জটিলতা তাতে আধুনিক মানুষকেই বোঝা যায় না। কাজেই এ সমসাময়িক সময় নিয়ে যে আধুনিক কবিতা তা বুঝতে হলে মানুষকে তার চেতনা জটিলতা মুক্ত করে তুলতে হবে। নবোদয় বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ওসমান গনি চৌধুরী, লেখিকা স্বাগতা চক্রবর্তী ও শিপ্রা দত্ত চৌধুরী প্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখেন।