অনলাইন ডেস্ক : বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মূল স্রোতে ফেরাতে লোকসভা ভোটের আগে বড় পদক্ষেপ করল সরকার। আলফার আলোচনাপন্থীদের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করল অসম সরকার ও কেন্দ্র। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনে অপর একটি শাখা আলফা (স্বাধীন) এই চুক্তির অংশ হয়নি। ফলে সরকার যতই দাবি করুক না কেন এই চুক্তির ফলে অসমে শান্তি স্থায়ী হবে, সেই দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আটের দশকের গোড়া থেকেই সার্বভৌম অসমের দাবিতে উত্তপ্ত হয়েছিল উত্তর পূর্বের রাজ্য। পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বে আগুন জ্বলেছিল রাজ্যে। শেষপর্যন্ত ১৯৯০-এ আলফাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। তার পরেও চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে গিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। এদিকে শেষ ১২ বছর ধরে অরবিন্দ রাজখোয়ার নেতৃত্বাধীন আলফা গোষ্ঠীর সঙ্গে নিঃশর্ত আলোচনা চালাচ্ছিল কেন্দ্র। শেষপর্যন্ত তাঁদের মূল স্রোতে ফেরাতে এদিন ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হল। এই চুক্তিকে অসমের ‘নতুন ভোর’ বলে আখ্যায়িত করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর দাবি, এই চুক্তির ফলে অসম-সহ গোটা উত্তর পূর্ব ভারতে শান্তির নয়া অধ্যায় রচিত হল। চুক্তির প্রতিশ্রুতি পালনের জন্য কেন্দ্রের তরফে একটি কমিটি গঠন করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে শাহের দাবি, আলফা ভেঙে যাবে।
সম্প্রতি যোরহাটের সেনা শিবির চত্বর-সহ অসমের চার জায়গায় বিস্ফোরণ হয়। যার দায় স্বীকার করে পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন আলফা (স্বাধীন) শাখা। আবার এই গোষ্ঠী ত্রিপাক্ষিক চুক্তির অংশ হয়নি। সূত্রের দাবি, বর্তমানে মায়ানমারে রয়েছেন পরেশ বড়ুয়া। লোকসভা ভোটের আগে কি তাঁর নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী অসমে নতুন করে আগুন জ্বালাবে? এই প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে। শুধু লোকসভা নয়, বছর ঘুরলেই বাংলাদেশেও নির্বাচন। হাসিনা সরকারের আমলে বাংলাদেশে আলফার শিবির গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার যদি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না ফেরেন তাহলে কি ফের সে দেশেও সক্রিয় হবে আলফা? সেই সমস্ত প্রশ্ন উত্তর অধরা রেখেই স্বাক্ষরিত হল ত্রিপাক্ষিক চুক্তি।