অনলাইন ডেস্ক : অসমের সচিবালয়ের নাম ব্যবহার করে, সরকারি কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার নাম করে গোটা দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে ঠকিয়ে গ্রেফতার হয়েছিল বিজেপি নেতা অসীম কুমার দাস। টাকার বিনিময়ে অসীমকে সরকারের বহু তথ্য সরবরাহ করার অভিযোগে এবার গ্রেফতার হয়েছেন মন্ত্রী যোগেন মোহনের ব্যক্তিগত সহকারি এবং তার কার্যালয়ের পিয়ন।
অসমের সরকারি কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার নামে অসীম কুমার দাস উত্তরপ্রদেশের নয়ডার প্রনটেস্টিক আইটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির কর্ণধার সানি ব্রেজা এবং তার ভাইয়ের কাজ থেকে ৪ কোটি টাকার সামগ্রী নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিল। পরবর্তীতে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং বিজেপি তার প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিল করে। পুলিশের তরফে এব্যাপারে বহু তথ্য পরবর্তীতে জনসমক্ষে তুলে ধরা হয়।
এবার মন্ত্রী যৌগের মোহনের পিএ মন্মথ দাস এবং মন্ত্রীর কার্যালয়ে থাকা পিয়ন প্রফুল্ল ডেকাকে গ্রেফতার করার পর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এই দুই ব্যক্তি দিসপুরের জনতা ভবন থেকে তারা অসীম কুমার দাসকে বহু তথ্য সরবরাহ করেছে এবং এর বিনিময়ে অর্থসহ সংগ্রহ করেছে। আধিকারিকরা জানিয়েছেন মন্মথ দাস শিকার করেছে, সে তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে বহু তথ্য অসীম কুমার দাসের কাছে তুলে দিয়েছিল যা ব্যবহার করে অসীম দেশের বহু কোম্পানির লোকেদের ঠকিয়েছে।
রাজ্য পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ দুজনকে গ্রেফতার করার পর প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ চালায় এবং পরবর্তীতে তাদের আদালতে পেশ করা হয়। এছাড়া তাদের মোবাইল ল্যাপটপ ইত্যাদি জব্দ করা হয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গোটা বিষয় তদন্তের আওতায় রয়েছে এবং তাদের কাছে ইতিমধ্যে বহু তথ্য উঠে এসেছে। ২৫ সেপ্টেম্বর গুয়াহাটির পুলিশ কমিশনার দিগন্ত বরা জানান, ব্যবসায়ীদের অসম সচিবালয়ে নিয়ে গিয়ে নকল সরকারি আধিকারিক দেখিয়ে ভুঁয়া কন্ট্রাক্ট স্বাক্ষর করিয়েছিল অসীম। নয়ডার এক ব্যবসায়ীর মামলার ওপর ভিত্তি করে গোটা কেলেঙ্কারি হাতেনাতে ধরেছে পুলিশ।নয়ডার প্রনটেস্টিক আইটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির কর্ণধার সানি ব্রেজা এবং তার ভাই সম্প্রতি অসীম কুমার দাসের বিরুদ্ধে মামলা করেন এবং এর উপর ভিত্তি করেই অসমের পুলিশ গোটা বিষয় তদন্ত করে।
তিনি বলেন, ‘তাদের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে রাজ্য পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ আইপিসির অন্তত দশটি ধারায় মামলা গ্রহণ করে এবং শুরু হয় তদন্ত। রাজ্য সরকারের একটি বিশেষ প্রকল্পের আওতায় আড়াইশো কোটি টাকার কাপড় কেনার একটি প্রকল্প রয়েছে বলে প্রনটেস্টিক আইটি প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে অন্তত ৪ কোটি টাকার সামগ্রী সংগ্রহ করে অসীম কুমার দাস এবং তার সহযোগিরা। তারা ওই কোম্পানিকে ৮৫ লক্ষ টাকা দিয়ছিল এবং বিনিময়ে কোম্পানি তাদের ৪ কোটি টাকার কাপড়-চোপড় পাঠায়। তবে এরপর অসীম এবং তার সহযোগীরা নিখোঁজ হয়। অনেক চেষ্টা করেও তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং শেষমেষ কোম্পানির কর্ণধার পুলিশের দ্বারস্থ হন।’