অনলাইন ডেস্ক : ফিন্যান্স কোম্পানির মারফত গাড়ি ক্রয়ের পর চুরি হয়েছে দেখিয়ে বীমার সূত্রে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ডিমাপুরে আটক করা হলো আরও দুজনকে। বর্তমানে তদন্তের সূত্রে সেখানে যাওয়া কাছাড় পুলিশের এক আধিকারিক ডিমাপুর পুলিশের সহায়তায় সেই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছেন।
কাছাড় পুলিশ এই চক্রের সন্ধান পাওয়ার পর ইতিমধ্যে এ জেলায় গ্রেফতার করা হয়েছে পাঁচজনকে। শ্রীকোনা আলমবাগ এলাকার আনোয়ার উদ্দিন লস্কর (৩১) ও অজিত দাস (৩০), দুধপাতিলের আমিরুল রহমান বড়ভূঁইয়া ওরফে বাবলু (৩৬), রংপুর কদমতলার আবেদ রাসুল বড় লস্কর (৩০) ও হাইলাকান্দি ব্রজপুরের জামিল আহমদ চৌধুরী (৩৩)-এই পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর আদালতের অনুমতিতে হেফাজতে নিয়ে পুলিশ বর্তমানে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে। এর পাশাপাশি এক ফিন্যান্স কোম্পানির স্থানীয় ফ্রেঞ্চাইসি সংস্থার দুই কর্মকর্তাকেও পুলিশ ইতিমধ্যে শিলচরে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েছে ।
পুলিশের এক উচ্চপদস্থ সূত্র জানান, যোদ্ধা মডেলের যে গাড়ি চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে এই চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে সেই গাড়িটি বর্তমানে রয়েছে ডিমাপুরে। গাড়ি নিয়ে আসতেই কাছাড় পুলিশের একটি দল সেখানে গিয়ে ডিমাপুর পুলিশের সহায়তায় দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে। ওই উচ্চপদস্থ সূত্র আরও জানান এই চক্রের “কিংপিন” মনিপুরের সেনাপতি জেলার বাসিন্দা। বর্তমানে তারও খোঁজ চলছে। চক্রের জাল বরাক উপত্যকা সহ ছড়িয়ে রয়েছে নাগাল্যান্ড এবং মনিপুরে।
এদিকে শিলচরে ফিন্যান্স কোম্পানির যে দুই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এদেরও গ্রেফতারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। সঙ্গে বীমা কোম্পানির কয়েকজনও রয়েছেন পুলিশের সন্দেহের তালিকায়।
প্রসঙ্গত এই চক্রের সঙ্গে জড়িতরা খুব কায়দা করে গাড়ি ক্রয়ের পর চুরি হয়েছে বলে দেখিয়ে বীমার সূত্রে অর্থ আত্মসাৎ করে। প্রথমত তারা কোনও একজন লোককে ধরে তার নথিপত্র ও নাম দিয়ে ফিনান্স কোম্পানি মারফত গাড়ি ক্রয় করে। এর বিনিময়ে যে লোকের নথিপত্র ও নাম ব্যবহার করে গাড়ি কেনা হয়ে থাকে তাকে দেওয়া হয় কিছু টাকা। গাড়ি কেনার পর কিছুদিন ফিন্যান্স কোম্পানিকে কিস্তির টাকা দেওয়া হয় যথারীতি। এরপর হঠাৎ করে একদিন গাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় নাগাল্যান্ড বা মণিপুরে। আর এ জেলার কোনও থানায় রিপোর্ট করা হয় গাড়ি চুরি হয়েছে। এর ভিত্তিতে পরবর্তীতে বীমা কোম্পানি থেকে হাতে এসে যায় গাড়ির মূল্য। এভাবে বেশ কয়েক বছর ধরে কারবার চালিয়ে এই চক্রের লোকেরা বীমা কোম্পানি থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।