অনলাইন ডেস্ক : বিজেপি রাজ্যিক মহিলা মোর্চার সদস্য সন্ধ্যা রানী আচার্য ও মধ্য শহর মন্ডলের সহ-সভাপতি দেবাশীষ সোমকে শিলচর পুরসভায় সরকার মনোনীত পুরসদস্য হিসেবে নিযুক্তিকে ঘিরে বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়ার মাঝে এবার মুখ খুলল বিরোধী দল কংগ্রেসও। এই দুজনের নিযুক্তি সম্পূর্ণ বেআইনি বলে অভিহিত করে শিলচর জেলা কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ পাল সহ অন্যান্যরা হুশিয়ারি দেন, শীঘ্র এই নিযুক্তি বাতিল করা না হলে তারা আইনের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হবেন।
মঙ্গলবার শিলচর জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে আহুত এক সাংবাদিক সম্মেলনে অভিজিৎ পাল, প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি অরুন দত্ত মজুমদাররা অভিষোগ করেন, পুরনিগমের নির্বাচন না করে বর্তমানে পুরসভাকে ঘিরে সরকারি অর্থ এবং পুরবাসীর প্রদেয় করের টাকা লুণ্ঠন করছেন শাসকদলের একাংশ কর্মকর্তা। এই লুণ্ঠনের পথ আরও প্রশস্ত করতে এবার দেবাশীষ ও সন্ধ্যা রানীকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে সরকার মনোনীত পুরসদস্য করা হয়েছে। অভিজিৎবাবুরা এ নিয়ে সরাসরি শিলচরের সাংসদ ডা: রাজদীপ রায় এবং বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তীর নাম উল্লেখ করে তোপ দাগেন।
তারা বলেন, ব্যাপারটা খুবই আশ্চর্যের যে ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গেজেট নোটিফিকেশনে শিলচর পুরসভাকে নিগমে উন্নীত করার কথা ঘোষণা করা হয়। এই বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন আবাসন ও নগর বিষয়ক বিভাগের
আয়ুক্ত-সচিব কবিতা পদ্মনাভন। অথচ সেই কবিতা পদ্মনাভনই আবার গত ২১ জুলাই এক নির্দেশে দেবাশীষ সোম ও সন্ধ্যা রানী আচার্যকে সরকার মনোনীত পুরসদস্য হিসেবে নিযুক্তি দিয়েছেন। আসলে শাসক দল বর্তমানে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আইন- কানুন, নিয়ম- নীতি কিছুরই তোয়াক্কা করছে না।
কথাপ্রসঙ্গে তারা আরও বলেন, গত ২১ জুলাই জারি করা কবিতা পদ্মনাভনের নির্দেশে শিলচর পুরসভার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের অন্যান্য পুরসভায়ও বেশ কয়েকজনকে সরকার মনোনীত পুর সদস্য করা হয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে এতে দেখা গেছে, শিলচর পুরসভাকে দেখানো হয়েছে হাইলাকান্দি জেলায়। আর কাছাড় জেলার ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়েছে শুধু সোনাই এবং লক্ষ্মীপুর পুরসভার কথা। এ থেকেই বোধহয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, বর্তমানে সরকারি কাজকর্ম চলছে কিভাবে।
তারা আরও বলেন, পুরনিগমের নির্বাচন এতোদিন ধরে না করানোর পেছনে রয়েছে সেই লুণ্ঠনের ষড়যন্ত্র। তাই দেবাশীষ এবং সন্ধ্যারানীর মনোনয়ন বাতিল করার সঙ্গে সঙ্গে শীঘ্র পুরো নির্বাচন করানোরও দাবি জানান তারা। সঙ্গে আরও জানান, দেবাশীষ ও সন্ধ্যারানীর মনোনয়ন বাতিল করার দাবিতে আগামীকাল মঙ্গলবারই জেলাশাসকের মারফত রাজ্যের আবাসন ও নগর বিষয়ক বিভাগের আয়ুক্ত -সচিবের কাছে স্মারকপত্র প্রেরণ করবেন। এরপর যদি দুজনের মনোনয়ন বাতিল করা না হয় তবে তারা দারস্থ হবেন হাইকোর্টের। এ দিনের সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সূর্যকান্ত সরকার, আলতাফ হোসেন লস্কর, জ্যোতি লাল দাস ও ইফতিকার আলম লস্কর প্রমুখ।