অনলাইন ডেস্ক : খসড়া ডিলিমিটেশন ইস্যুকে ঘিরে ক্রমেই ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে বিরোধী শিবির। ইতিমধ্যে আগামী ২৭ জুন মঙ্গলবার ১২ ঘন্টার সর্বাত্মক বরাক বনধের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস।
শিলচর ইন্দিরা ভবনে এক বৈঠকে মিলিত হবার পর শনিবার এ কথা ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ ছাড়াও এদিন উপস্থিত ছিলেন উপত্যকার তিন জেলার দলীয় কর্মকর্তারা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, একমাত্র এআইইউডিএফ ছাড়া বরাকের সব-কটি রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক দল সংগঠনকে নিয়ে আন্দোলন করবে কংগ্রেস। উল্লেখ্য, এর আগে ৩০ জুন বনধ পালনের আহ্বান জানিয়েছিল কংগ্রেস। তবে বিডিএফ সহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে আলোচনার পর তা পরিবর্তন করা হয়।
বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিজেপিকে একহাত নেন কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। তিনি বলেন, মুখে ডবল ইঞ্জিনের সরকার স্লোগান দিলেও ডিলিমিটেশনের নামে বরাকের দু’টি আসন কমিয়ে দেওয়া হল। এটা এই উপত্যকার বিজেপি নেতৃত্ব এবং শাসকদলীয় জনপ্রতিনিধিদের ব্যর্থতা। সম্প্রতি এই উপত্যকার বেকার ছেলেমেয়েরা নিয়োগ বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। কিন্তু সামান্যতম প্রতিবাদ করেননি বরাক বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা। তাই তাঁদের (বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের) উচিত উপত্যকার বিজেপি কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে তাতে দোকান খোলার বন্দোবস্ত করে দেওয়া। এতে অন্তত উপত্যকার কয়েকজন বেকার ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান হবে। কাছাড় জেলা কংগ্রেস কমিটির সভাপতি অভিজিৎ পাল স্পষ্ট করেন, ডিলিমিটেশন বা সংরক্ষণের বিরোধী নয় কংগ্রেস। তাঁদের আপত্তি ডিলিমিটেশন-এর ধরন নিয়ে। তিনি বলেন, শেষবার ডিলিমিটেশন হয়েছিল ১৯৭৬ সালে। তারপর বরাকের জনসংখ্যা বেড়ে প্রায় ৪২ লক্ষেরও অধিক হয়েছে। ভোটারের সংখ্যা ২৫ লক্ষ। এই হিসেবে আরও ৫ টি আসন বাড়ানোর কথা। কিন্তু সেটা না করে এক ঝটকায় কমিয়ে দেওয়া হল ২টি আসন। আর জনসংখ্যা তুলনামূলক কম হওয়া সত্ত্বেও (১৬ লক্ষ) বড়োল্যান্ড-এ ১২ থেকে বাড়িয়ে আসন সংখ্যা করা হল ১৯। এটা কি বরাকের প্রতি বৈষম্য নয়, প্রশ্ন ছুড়েন জেলা সভাপতি।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালেও ডিলিমিটেশন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উগ্রপন্থী সমস্যা সহ কিছু অনিবার্য কারণে তা স্থগিত রাখা হয়। বলা হয়, ২০২৬ সালে সর্বভারতীয় স্তরে ডি লিমিটেশন হবে। বর্তমানে প্রস্তুতি চলছে তারই। কিন্তু হুট করে ডিলিমিটেশন কমিটিকে সরিয়ে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে অসমে এই পদক্ষেপের কারণ কী ! জেলা সভাপতির আশঙ্কা, বর্তমানে একদফা ডিলিমিটেশন করে বরাকের ২টি আসন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর ২০২৬ সালে সর্বভারতীয় স্তরে ডিলিমিটেশন হলে বরাকের ৫টি আসন কমিয়ে দেওয়া হতেও পারে। তাঁর কথায় বরাক উপত্যকাকে রাজনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেওয়ার লক্ষ্যেই সরকারের এই ‘দুরভিসন্ধিমূলক’ পদক্ষেপ। এই পরিস্থিতিতে উপত্যকার অস্তিত্ব রক্ষার জন্য রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে বনধ সমর্থন এবং আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ার আহবান জানান কংগ্রেস নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সীমান্ত ভট্টাচার্য, শরিফুজ্জামান লস্কর, কংগ্রেস সংখ্যালঘু বিভাগের সভাপতি আনসার হোসেন বড়লস্কর সহ অন্যান্যরা।