অনলাইন ডেস্ক : একই রাতে শিলচর রংপুর, বাঁশকান্দি এবং উধারবন্দের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২টি বাইক ও ৯টি স্কুটি উদ্ধার করল শিলচর সদর থানা পুলিশ। এই ২০টি দ্বিচক্রযান উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে মোট ৮জনকে। যাদের মধ্যে রয়েছেন এআইইউডিএফ-এর এক কর্মকর্তা নন্দ বাবু সিংহ (৬০)ও।
রংপুর দ্বিতীয় খন্ডের বাসিন্দা নন্দবাবু ছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে শিলচরেরই মধুরবন্দ চিরুয়া এলাকার শাকিল লস্কর (২০), দিলোয়ার হোসেন লস্কর (২০), আফজল হোসেন লস্কর (১৮) ও আব্দুল হোসেন লস্কর (১৯), বাদ্রিপার তৃতীয়খন্ড বিনবস্তির রঞ্জিত রবিদাস (২৫), লক্ষ্মীপুর আলিপুর বাগান এলাকার ইউসুফ আলী (২০) ও শিলচর মধুরবন্দ নজরুল সরণীর রুবেল উদ্দিন লস্কর (২৮)।
জানা গেছে একটি বাইক চুরির তদন্তে নেমে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ রংপুর দ্বিতীয় খন্ড এলাকা থেকে প্রথম গ্রেফতার করে শাকিল লস্করকে। এরপর তার সূত্রে গ্রেফতার করা হয় নন্দবাবু সিংহকে। এরপর পর্যায়ক্রমে রাতভর অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় অন্যান্যদের। এদের কয়েকজনের আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয় বাইক ও স্কুটিগুলো। এরমধ্যে নন্দবাবুর আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে
৪ টি বাইক।
পুলিশ সুপার নূমল মাহাতো জানিয়েছেন, ধৃতরা এক বড়সড় আন্ত:রাজ্য বাইক ও স্কুটি চুরি চক্রের সঙ্গে জড়িত। প্রতিবেশী বিভিন্ন রাজ্যেও রয়েছে এদের সহযোগীরা। এমন কি দেশ ছাড়িয়ে, বিদেশেও এদের সংযোগ রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাও। অভিযানের সময় ধৃতদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কিছু “মাস্টার কি” সহ নম্বর প্লেট ও চুরিতে ব্যবহৃত অন্যান্য সামগ্রী।
পুলিশের অন্য এক সূত্র জানান, এই চোরচক্রে নন্দ বাবুর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। গোটা জেলা বা উপত্যকার বিভিন্ন স্থান থেকে চক্রের অন্যান্যরা বাইক- স্কুটি এসব চুরি করে আনার পর তার তত্ত্বাবধানে লুকিয়ে রাখা হতো বিভিন্ন জায়গায়। এরপর সুযোগ বুঝে সেসব পাচার করে দেওয়া হয় প্রতিবেশী মিজোরাম ও মনিপুরে থাকা তাদের সহযোগীদের কাছে।
নন্দ বাবু সম্পর্কে জানা গেছে, একসময় সেনাবাহিনীতে কর্মরত থাকা এই ব্যক্তিটি পরবর্তীতে কাজ করেন সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ায়। ওই চাকরি ছেড়ে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে উদারবন্দ আসনে এ আই ইউ ডি এফ- এর টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হলে তার পক্ষে ভোট পড়ে
২৫৮৮টি।
এ আই ইউ ডি এফ- এর টিকিটে নির্বাচনে অবতীর্ণ হওয়া দলীয় এক কর্মকর্তার নাম এভাবে বাইক চোর চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় এনিয়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র চাঞ্চল্যের।
যদিও দলের জেলা কমিটির সভাপতি সামিনুল হক বড়ভূঁইয়া দাবি করেছেন ২০১১ সালে নন্দ বাবু দলের টিকিটে বিধানসভা নির্বাচন করলেও পরবর্তীতে আর তাদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক থাকেনি। নন্দ বাবু বর্তমানে অন্য এক রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেন সামিনুল।
এদিকে এদিন ২০টি বাইক ও স্কুটি উদ্ধারের খবর পেয়ে অনেকেই হাজির হন সদর থানায়। এরমধ্যে ৩-৪ জন সনাক্ত করেন তাদের চুরি হওয়া বাইক ও স্কুটি। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্ধারিত প্রক্রিয়ার পর বাইক ও স্কুটিগুলো সমঝে দেওয়া হবে আসল মালিকদের কাছে।