অনলাইন ডেস্ক : হাতি জাতীয় ঐতিহ্য, তাদের সংরক্ষণও জাতীয় দায়িত্ব। তাছাড়া হাতি-মানব সংঘর্ষের দায়িত্বও মানুষকেই নিতে হবে। আজ শুক্ৰবার কাজিরঙা জাতীয় উদ্যানে ‘গজ উৎসব’-এর উদ্বোধন করে বলেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। রাষ্ট্রপতি মুর্মু র ব্যাখ্যা, মানুষের হস্তক্ষেপে প্রাকৃতিক আবাসস্থল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, হাতির চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। এগুলোই সংঘাতের মূল কারণ। অসমের কাজিরঙা জাতীয় উদ্যানে আজ ৭ এপ্রিল গজ উৎসব উদযাপন করেছে। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু উৎসবের উদ্বোধন করে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি জোরের সঙ্গে বলেন, মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনের দায়িত্ব মানব সমাজকেই নিতে হবে। তিনি ভারতের ঐতিহ্য এবং ঐতিহ্যবাহী জাতীয় প্রাণী হিসাবে হাতির তাৎপর্য তুলে ধরে দেশের ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য তাদের রক্ষা করার গুরুত্বের উপর জোর দেন।
রাষ্র্ পতি বলেন, হাতি-মানব সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের সঙ্গে মানবজাতিকে নিতে হবে। প্রজেক্ট এলিফ্যান্টের লক্ষ্য হাতিদের রক্ষা করা, তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণ করা এবং তাদের করিডোরগুলিকে বাধা থেকে মুক্ত রাখা। তিনি এই প্রকল্পের সাফল্যের জন্য সকল স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
অসমের কাজিরঙা, মানস জাতীয় উদ্যানগুলি শুধুমাত্র ভারতের জন্যই নয়, সমগ্র বিশ্বের কাছে অমূল্য। ইউনেসকো কর্তৃক ‘বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান’ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে এই উদ্যান, বলেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, কাজিরঙা ভারতে বন্য হাতির দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যা সহ গজ উৎসব আয়োজনের জন্য একটি উপযুক্ত স্থান। তদুপরি হাতি এবং তাদের আবাসস্থল সংরক্ষণের পারস্পরিক সুবিধার প্ৰতি ইঙ্গিত করেছেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, তারা কার্যকর কার্বন সিঙ্ক হিসাবে কাজ করে, জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় সহায়তা করে এবং প্রকৃতি ও মানবতার মধ্যে একটি পবিত্র সম্পর্ক গড়ে তুলে। তিনি প্রকৃতি এবং এর বাসিন্দাদের সংরক্ষণের প্রচেষ্টায় সমাজকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু জোর দিয়ে বলেন, হাতি ছাড়াও অন্যান্য প্রাণীর প্রতি আমাদের একই সহানুভূতি এবং শ্রদ্ধাবোধ থাকা উচিত যেমন আমাদের মানুষের জন্য রয়েছে। কারণ তারা সামাজিক প্রাণী এবং নিঃস্বার্থ ভালোবাসা প্রদর্শন করে। তিনি বলেন, প্রকৃতিকে সম্মান করার সংস্কৃতি ভারতের পরিচয় এবং প্রত্যেককে তা বজায় রাখতে উৎসাহিত করে।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী বলেন, আমাদের ঐতিহ্যবাহী সব উৎসবই প্রকৃতির ছন্দের সঙ্গে জড়িত। অসমের রঙালি বিহুও প্রকৃতির উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। তিনি সবাইকে রঙালি বিহুর আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এছাড়া গজ উৎসব এবং প্রজেক্ট এলিফ্যান্টের সাফল্যের জন্য শুভকামনা ব্যক্ত করেছেন তিনি। আজকের ‘গজ উৎসব’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একটি স্মরণিকাও প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি এবং উপস্থিত বিশিষ্টরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অসমের রাজ্যপাল গুলাবচাঁদ কাটারিয়া, অসমের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে, অসম সরকারের কৃষি ও পশু দফতরের মন্ত্রী অতুল বরা, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি এবং অর্থমন্ত্রী অজন্তা নেওগ সহ বিপুল সংখ্যক জনতা।