অনলাইন ডেস্ক : বরাকের ভাষা সংগ্রামের এক বিশিষ্ট সেনানি লোকমান আলি । রবিবার রাত ১০-৪৫ মিনিটে উধারবন্দ ডুমুরঘাটস্থিত বাড়িতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । কিছুদিন থেকে বার্ধক্যজনিত উপসর্গে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। মৃত্যুকালে রেখে গেছেন স্ত্রী , পাঁচ পুত্র, তিন কন্যা ,জামাতা ,পুত্রবধূ নাতি নাতনি সহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণমুগ্ধ। রবিবার রাতে সামাজিক মাধ্যমে তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মানুষ ছুটে যান তাঁর বাড়িতে। সোমবার সকালেও গুণমুগ্ধরা তাঁকে শেষবারের মতো দেখতে ভিড় করেন। ১৯৭২ এর ভাষা সংগ্রামে বরাকে যে কয়জন ব্যক্তি সক্রিয়ভাবে ঝাঁপিয়ে ছিলেন, লোকমান ছিলেন তাঁদের অন্যতম। লোকমান আলি নামে তিনি সুপরিচিত হয়ে ওঠেন সমকালীন এবং পরবর্তী প্রজন্মের কাছে। ১৯৯১ সালে তিনি উধারবন্দ বিধানসভা আসনে জনতা দলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দিতা করেন কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে এবং পরাজিত হলেও বিপুল ভোট পান। সদালাপী, সাহিত্য- সংস্কৃতি অনুরাগী লোকমান বাবু ছিলেন ক্রীড়াপ্রেমীও।
রুচিশীল ব্যবহারের জন্য তাঁকে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা ও সম্মান করতো। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ব্যক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে। বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন, মাতৃভাষা ঐক্যমঞ্চ, উধারবন্দ সাংবাদিক মঞ্চ, ক্লাব রেনেসাঁ, উধারবন্দ স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন সহ অনেক সংগঠন গভীর শোক ব্যক্ত করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। লেখক -শিক্ষাবিদ শুভঙ্কর চন্দ, শরদিন্দু ভট্টাচার্য, ব্রজেশ্বর সিংহ, সীমান্ত ভট্টাচার্য, প্রাক্তন মন্ত্রী অজিত সিংহ, দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গ সম্পাদক তৈমুর রাজা চৌধুরী, আইনজীবী ইমাদ উদ্দিন বুলবুল প্রমুখ লোকমান বাবুর মৃত্যুকে এক অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
এদিকে প্রয়াতের বাড়িতে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান তৈমুর রাজা চৌধুরী ,ইমাদ উদ্দিন বুলবুল, আকমল আলি বড়ভুইয়া, ব্রজেশ্বর সিংহ, নীহারকান্তি রায়, বিধায়ক মিহিরকান্তি সোম, সুমন্ত্রসারথি এন্দো, বিজন দেব সহ বহু বিশিষ্ট জন। সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশাল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে বেলা আড়াইটায় জানাজা সম্পন্ন হয়। নামাজ পাঠ করান সোনাপুরের মওলানা জয়নাল আবেদিন বড়ভুইয়া। উধারবন্দ সাংবাদিক মঞ্চের উপদেষ্টা মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য লোকমান আলির বাড়িতে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান মঞ্চের পক্ষে শিবাশিস চক্রবর্তী ও রাফিউল আলম রিন্টু।