অনলাইন ডেস্ক : নভেম্বর মাস থেকেই নগাঁওর বাসিন্দা ওয়াহিদা বেগমের কোনও খোঁজখবর ছিল না। ছিল না তার দশ বছরের ছেলেরও। কিন্তু গত ডিসেম্বরে মা ও ছেলের সন্ধান পাওয়া গেল ঠিকই, কিন্তু দু’জনের ঠিকানা রীতিমতো সবাইকে চমকে দিয়েছে। বর্তমানে ওয়াহিদা বেগম ও তার দশ বছরের ছেলের ঠিকানা হল কারাগার। প্রায় দু’মাস ধরে কুয়েট্টা কারাগারেই তিনি। বিনা পাসপোর্টে ঘটনাটি নিয়ে নগাঁওর অবৈধভাবে পাকিস্তানে প্রবেশ করার পুলিশসুপার লীনা দোলে বলেন,অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে ছেলে সহ ওয়াহিদাকে বছর দুয়েক আগে গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। বছর দুয়েক আগে স্বামীহারা হয়েছিলেন ওয়াহিদা। এরপর এক আফগান যুবকের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং ওই আফগান যুবক বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল ওয়াহিদাকে। এরপর কোটি টাকায় নিজের বাড়ি-জমি বিক্রি করে নিয়ে সেই যুবকের সঙ্গে নগাঁও ছেড়ে চলে যান ওয়াহিদা। এরপর ওয়াহিদ এবং বছরের ছেলের কোনও সন্ধানই ছিল না। কিন্তু গত ডিসেম্বরে ওয়াহিদার মা আজিফা খাতুনের কাছে পাকিস্তানের একটি ল-ফার্ম থেকে পত্র প্রেরণ করা হয় | সেই পত্রেই জানানো হয়, বর্তমানে ওয়াহিদা এবং তার দশ বছরের ছেলে পাক কারাগারে রয়েছেন। এরপর ওয়াহিদার মা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এমনকী, একদিন হঠাৎ করে মা আজিকার সঙ্গে ফোনে কথাও বলেন ওয়াহিদা। কুয়েটা কারাগারের কোনও কর্মীর ফোনের সাহায্যে সামাজিক মাধ্যমে মা-র সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছিলেন ওয়াহিদা। ফোনে তিনি মা-কে জানান, ‘বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ভুয়ো নথিপত্র দেখিয়ে তাকে প্রথমে সৌদি আরব এবং তারপর সেখান থেকে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশসুপার দোলে জানান, ওয়াহিদার সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। কিন্তু কেমন করে ওয়াহিদা পাকিস্তানে পৌঁছলেন, তা স্পষ্ট নয়। তবে মনে হচ্ছে, ভূয়ো নথিপত্র দেখিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশ করার জন্যই পাকিস্তান পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে। পুলিশসুপার দোলে জানান, কুয়েটা কারাগারে ওয়াহিদা এবং তার ছেলেকে পৃথক জেল ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। সম্ভবত ওই যুবক আফগানিস্তানের বাসিন্দা হবে বলেও সন্দেহ করছেন দোলে। তবে কুয়েটা কারাগারে ওয়াহিদা এবং তার ছেলে বর্তমানে ভালই আছে।
পুলিশসুপার দোলে জানান, ওয়াহিদা এবং তার ছেলেকে পাকিস্তানের কারাগার থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন বিভাগের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।