নয়াদিল্লি, ৩১ ডিসেম্বর : ২০২২ সালের শেষ দিন হঠাৎ করেই জাতীয় স্তরের বিরোধী রাজনীতিতে কোলাহল শুরু হয়ে গেল। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা কমল নাথ ফের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসাবে ভাসিয়ে দিলেন রাহুল গান্ধীর নাম। বছরের শেষদিন আসরে নামলেন রাহুল নিজেও। দাবি করলেন, দেশজুড়ে বিজেপি বিরোধী চোরাস্রোত তৈরি হয়েছে। আর দিনের শেষ রাহুলের প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবিকে সমর্থন করে কংগ্রেসকে অক্সিজেন দিয়ে দিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও।
কমল নাথ দাবি করেন, ‘২০২৪ সালের লোকসভায় বিরোধী মুখই কেবল নন, প্রধানমন্ত্রিত্বের মূল দাবিদারও রাহুল গান্ধী। রাহুল ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেন না, করেন দেশের মানুষদের জন্য। তাঁরাই ওঁকে ক্ষমতায় আনবেন।’ কার্যত, একতরফাভাবে রাহুলকে বিরোধী শিবিরের মুখ হিসাবে ঘোষণা করে দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী শিবিরের অন্য নেতারা এ প্রসঙ্গে কী প্রতিক্রিয়া দেন, সেটা দ্রষ্টব্য বিষয় ছিল। শেষবেলায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, যিনি নিজেও বিরোধী শিবিরের মুখ হওয়ার দাবিদার, কংগ্রেসের এই অবস্থানকে কার্যত সমর্থনই করেছেন। তিনি বলে দিয়েছেন, কংগ্রেস যদি রাহুলকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসাবে সামনে আনতে চায়, তাতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। নীতীশ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজে বিরোধী শিবিরের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার দাবিদার নন।
তবে, নীতীশ কুমার কংগ্রেসকে অক্সিজেন দিলেও বিরোধী শিবিরের অন্য একাধিক দল এখনও কংগ্রেসের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছে। যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ উত্তরপ্রদেশের দুই হেভিওয়েট দল সমাজবাদী পার্টি এবং বিএসপির শীর্ষনেতাদের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় যোগ না দেওয়া। তৃণমূল এবং আম আদমি পার্টি তো একপ্রকার কংগ্রেসের ছায়া মাড়ানো বন্ধ করে দিয়েছে। বিজেপিকে হারাতে হলে এই অবস্থার যে পরিবর্তন প্রয়োজন, সেটা মেনে নিয়েছেন রাহুল গান্ধী নিজেও। শনিবারই এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি দাবি করেছেন, দেশে বিজেপি বিরোধী একটা চোরাস্রোত বইছে। তবে, সেই চোরাস্রোত কাজে লাগাতে হলে বিরোধীদের যে একজোট হতে হবে, সেটাও মেনে নিয়েছেন রাহুল।
কংগ্রেস নেতা এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘বিরোধী শিবির যদি কার্যকরীভাবে একটা দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে পারে, তাহলে বিজেপির জন্য নির্বাচন জেতাটা কঠিন হবে। তবে বিরোধীদের সঠিকভাবে নিজেদের মধ্যে সমন্বয়সাধন করতে হবে। বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মানুষের কাছে যেতে হবে।’