অনলাইন ডেস্ক : শিলচর ইটখোলাঘাট এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে এক বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ভস্মিভূত হল দুটি বাসগৃহ। এতে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে ওই ঘর দুটির বাসিন্দা চারটি পরিবার।
অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে শাহানারা বেগম মজুমদার ও পারবিন বেগম মজুমদার নামে দুই মহিলার বাড়িতে। স্বামীহীনা এই দুই মহিলা সম্পর্কে জা। দুজনে তাদের পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে থাকতেন পাশাপাশি দুটি আসাম টাইপের ঘরে। শাহানারার ঘরের একপাশে অন্য ঘরে থাকতেন ভাড়াটে দীপক দাসের পরিবার। একইভাবে পারবিনের ঘরের পাশে অন্য ঘরে ছেলেকে নিয়ে ভাড়ায় থাকতেন মহেশ চৌধুরী নামে এক ফুচকা বিক্রেতা।
শাহানারার পরিবারে রয়েছেন তার উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া মেয়ে নাসিমা আক্তার সহ পেশায় যান চালক পুত্র শাহিল আহমদ ও পুত্রবধূ।নাসিমা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তারা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখেন, ঘর জ্বলছে দাউ দাউ করে। তখন আর কিছু বের করার উপায় ছিল না। শহরের ডিএনএনকে গার্লস হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের পড়ুয়া নাসিমা জানান আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে তার উচ্চমাধ্যমিক চূড়ান্ত পরীক্ষা। পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা এডমিট কার্ড এনে রেখেছিলেন বাড়িতে। আগুনে বইপত্র এবং অন্যান্য সামগ্রী সহ পুড়ে গেছে তার এডমিট কার্ডও। এতে তার পক্ষে এবার পরীক্ষায় বসা সম্ভব হবে কিনা এ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তিনি। তাদের ঘরের লাগোয়া ভাড়াটে পরিবারের দীপক দাসের পত্নী ভবানী দাস জানান দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ সূত্রপাত ঘটে আগুনের। তখন তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন নিজের ঘরে। শুরুতে কিছুই টের পাননি। হইচই শুনে বেরিয়ে এসে দেখেন আগুন জ্বলছে। তখন আর ঘরে ঢুকে কিছু বের করার সাহস গোটাতে পারেননি।
পারবিন বেগম জানান, তিনি কাজ করেন সদরঘাট এলাকায় এক প্রতিষ্ঠানে। দুপুরে কাজের সূত্রে ছিলেন সেখানে। বাড়িতে ছিল শুধু তার ১২ বছরের ছেলে মেহতাব হোসেন মজুমদার। পাশের ঘরের ভাড়াটে মহেশ চৌধুরী এবং তার ছেলেও ছিলেন বাইরে। পারবিন জানান, তিনিও কর্মস্থলে খবর পান তার বাড়িতে আগুন লেগেছে, জল ছিটাচ্ছে দমকল বাহিনী। তার পক্ষেও কিছু বের করা সম্ভব হয়নি ।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন আগুন প্রথম জ্বলতে দেখা যায় পারবিন বেগমের ঘরের দিকে। তবে ঠিক কিভাবে আগুন লেগেছে তা কেউই বলতে পারছেন না। পারবিনের ঘরে বৈদ্যুতিক সংযোগ ছিল, তবে শাহানারা বেগমদের ঘরে ছিল না তা। কেউ কেউ অনুমান ব্যক্ত করেছেন শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে থাকতে পারে ।
এদিন ঘটনার পর বিধায়ক মিহির কান্তি সোম ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোর লোকেদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে তাদের যথাসম্ভব সাহায্যের আশ্বাস দেন।সেই সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নাসিমা আক্তারের যাতে পরীক্ষায় বসা না আটকায়, এনিয়ে উদ্যোগী হবেন বলেও জানান তিনি।