অনলাইন ডেস্ক : জামিন পেতে লুকোচুরির খেলা। এবার এমন ঘটনায় জড়ালো সুরঞ্জন দাস চৌধুরী ওরফে সুরজিৎ ওরফে সুজিতের নাম। শিলচর চেংকুড়ি রোডের বাসিন্দা বরাক উপত্যকা কৈবর্ত সমাজ উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি সুজিতের আগাম জামিনের জন্য সম্প্রতি গৌহাটি হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে এই আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
সুজিতের হয়ে জামিনের আবেদন জানানো হয়েছিল গত ডিসেম্বর মাসে। তার পক্ষে জামিনের আবেদন জানান দুই আইনজীবী ডি কে বৈদ্য ও এম এস হোসেন। বিচারপতি সুস্মিতা ফুকন খাউন্ডের আদালতে এই আবেদন নিয়ে শুনানি গ্রহণ করা হয়। তবে শুনানির তৃতীয় দিন ১৯ ডিসেম্বর আইনজীবী ডি কে বৈদ্য আদালতে উপস্থিত হয়ে আবেদন প্রত্যাহার করে নেন।
জামিনের আবেদন জানিয়ে তা প্রত্যাহার করে নেওয়াকে ঘিরে আইনী মহলে শুরু হয় জোর চর্চা। খবর অনুযায়ী, এর আগে ২ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট সুজিতের জামিনের আবেদন খারিজ করে তাকে স্থানীয় আদালত (কাছাড়ের জেলা আদালত)-এ আত্মসমর্পণে নির্দেশ দিয়েছিল। তবে সুপ্রিমকোর্টের
এই নির্দেশের কথা গোপন করে হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল জামিনের জন্য। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হাইকোর্টের নজরে এসে যায়। এতে সুজিতের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন প্রত্যাহারে বাধ্য হন।
প্রসঙ্গত গত ২৫ মে শিলচর ন্যাশনাল হাইওয়ে রামগড় এলাকায় সুকান্ত কর ওরফে বাপি নামে এক ব্যবসায়ীকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত সুজিত গ্রেফতারি এড়াতে পর্যায়ক্রমে কাছাড়ের জেলা আদালত এবং, গৌহাটি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানিয়ে ব্যর্থ হন। এর পরবর্তীতে সুপ্রিমকোর্টে জামিনের জন্য আবেদন জানান।তবে সুপ্রিমকোর্টের দুই বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া ও এহসানউদ্দিন আমানুল্লাহর ডিভিশন বেঞ্চ গত ২ সেপ্টেম্বর সুজিতের জামিনের আবেদন খারিজ করে সংশ্লিষ্ট আদালতে (কাছাড়ের সিজেএম আদালত) আত্মসমর্পণ করে “রেগুলার” জামিনের জন্য আবেদন জানাতে নির্দেশ দেয়।
সুজিতের বিরুদ্ধে সুকান্ত কর ওরফে বাপি নামের যে ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে, কাছাড়ের জেলা আদালতে তার হয়ে সওয়াল করেছিলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর। কাছাড় আদালতে সুজিতের হয়ে যখন জামিনের আবেদন জানানো হয়েছিল তখন এর তীব্র বিরোধিতা করে সওয়াল করেন নীহারেন্দ্রবাবু। এবার দ্বিতীয় দফায় হাইকোর্টে সুজিতের জামিনের জন্য আবেদন জানানোর পর তা প্রত্যাহার করে নেওয়া নিয়ে নীহারেন্দ্রবাবু জানান, সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশের কথা গোপন করে ফের জামিনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল। ব্যাপারটা জানার পর হাইকোর্টে সুকান্ত করের পক্ষ থেকে আইনজীবী জে এম চৌধুরী সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা তুলে ধরেন। কাছাড় আদালতে আত্মসমর্পণ করার জন্য সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পরও কিভাবে ফের হাইকোর্টে জামিনের জন্য আবেদন করা হয়, নথি পেশ করে এনিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী চৌধুরী। এতে বাধ্য হয়ে সুজিতের আইনজীবী জামিনের আবেদন প্রত্যাহার করে নেন।