অনলাইন ডেস্ক : এ যেন রূপালি পর্দায় মল্লিকা শেরাওয়াত বা মালাইকা আরোরাদের “আইটেম” নৃত্যকেও ছাপিয়ে যাওয়ার মত ব্যাপার। মঙ্গলবার বর্ষবরণের রাতে শিলচর পার্ক রোডের এক অভিজাত হোটেলে এমন অশ্লীল নৃত্যকে ঘিরে শহর জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়ার।
পুলিশি কড়াকড়ির জেরে শিলচরে এবার বর্ষবরণের রাত পার হয়েছে কোনও বড়ধরনের অঘটন বিনেই। এতে বিভিন্ন মহল থেকে সন্তোষ ব্যক্ত করা হলেও শহরের পার্ক রোডের ওই অভিজাত হোটেলে স্বল্পবসনা নর্তকীর অশ্লীল নৃত্যকে ঘিরে বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়।
বর্ষবরণ উপলক্ষে ওই হোটেলে রাতে অর্থের বিনিময়ে পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। ঢালাও খানাপিনার মাঝে মনোরঞ্জনের জন্য পেশ করা হয় স্বল্পবসনা ওই নর্তকীকে। যার রগরগে অশ্লীল নৃত্য যুরাদের ভিড়ে উপচে পড়া পার্টিতে শীতের রাতেও ছড়িয়ে দেয় যৌনগন্ধী তীব্র উত্তাপ। নর্তকীর তালে তাল মিলিয়ে পার্টিতে যোগদানকারী যুবারাও মেতে উঠে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিতে। গভীর রাতে যখন পার্টি শেষ হয় তখন স্বল্পবসনা নর্তকীর উদ্দাম নৃত্যে বিমোহিত যুবাদের উচ্ছ্বাসের যেন কোনও সীমা ছিল না। “পয়সা উসুল”-ভাবনা নিয়ে তারা ফিরে গেছে যে যার গন্তব্যে।
পার্টিতে যোগদানকারী যুবারা যতই উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠুক না কেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই নর্তকীর নৃত্যশৈলীর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর শহরের বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।
হিন্দুত্ববাদী এক সংগঠনের কর্মকর্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে লিখেছেন, হোটেল কর্তৃপক্ষ মদ্যপান করিয়ে ও অশ্লীল নৃত্য দেখিয়ে শিলচরের যুব সমাজকে কোন পথে নিয়ে যেতে চাইছেন। শিলচরে এমন কার্যকলাপ চলবে না।
অন্য একজন লিখেছেন ,কয়েক মাস আগে বরাক ভ্যালি হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি শিলচরে একটি রিসোর্টে ঝামেলা করার জন্য এক মহিলাকে নিষিদ্ধ করেছিল। গতরাতে যে হোটেল কর্তৃপক্ষ অশ্লীল নাচের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে একই সংগঠন কি ব্যবস্থা নেবে। এছাড়াও আমাদের তথাকথিত সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য সংগঠন এ ধরনের কাজের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেবে? ভাষা শহীদদের পবিত্র ভূমিতে এমন কার্যকলাপ মেনে নেওয়া হবে না।
মালুগ্রাম এলাকার এক মহিলা লিখেছেন, হোটেল কর্তৃপক্ষকে মনে রাখতে হবে এটা শিলচর, উত্তর প্রদেশ বা বিহার নয়। এখানে এসব অশ্লীলতা চলতে পারে না। এটা শিলচরের সংস্কৃতি নয়।
আমরা বাঙালির কর্মকর্তা সাধন পুরকায়স্থ বলেন আমরা অশ্লীল সংস্কৃতির বিরোধী। বরাক উপত্যকা বাঙালি প্রধান অঞ্চল। বাঙালির যে সংযমী ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি রয়েছে কেউ তা কলুষিত করবে এটা মেনে নেওয়া যায় না।
আইনজীবী তথা বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ইমাদ উদ্দিন বুলবুল বলেন, অশ্লীলতা সমাজদেহে এক ব্যাধি। এ ধরনের অশ্লীলতাকে সামাজিক এবং প্রশাসনিকভাবে মোকাবিলা করা প্রয়োজন।