অনলাইন ডেস্ক : শিলচর মেডিক্যাল কলেজে সিনিয়রদের রেগিং-এর শিকার এক নবাগত পড়ুয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্থাপিত হয়েছে এমন অভিযোগ। এর পরিপ্রেক্ষিতে খোঁজখবর শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ। “শিলচর ইয়্যুথ কনফেসনস” নামে সোশ্যাল মিডিয়ার এক গ্রুপে উল্লেখ করা হয়েছে,
ওই নবাগত পড়ুয়াকে ব্যাপক হারে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সিনিয়রদের হাতে। গ্রুপে উল্লেখিত পড়ুয়ার বয়ান অনুযায়ী মানসিক ও শারীরিকভাবে তিনি খুবই শক্তিশালী ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে ডিউটির ক্ষেত্রে একাংশ সিনিয়র তাকে নানাভাবে হয়রানি করা সহ ছোটখাটো কোনও ভুলের দরুনও তীব্র দুর্ব্যবহার করছেন । গ্রুপে পোস্ট করা অভিযোগনামায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে তার বাবা মা রয়েছেন বহু দূরে, সন্তানের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাওয়ার দরুন তারা খুবই খুশি। কিন্তু বর্তমানে তাকে যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে, এতে একদিন হয়তো তাদের কাঁদতে হবে তার মৃতদেহ নিয়ে। শারীরিক এবং মানসিকভাবে তিনি একসময় খুবই শক্তিশালী থাকলেও বর্তমানে সিনিয়রদের রেগিং এর দরুন পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছেন। আত্মঘাতী হওয়ার ভাবনা গেড়ে বসেছে তার মনে। কিন্তু এসব কথা যে সবাইকে খুলে বলবেন সেই অবস্থায়ও নেই তিনি। তিনি মুখ খুলেছেন জানতে পারলে হয়তো তাকে মেরে ফেলা হবে। তাই নাম পরিচয় সব গোপন করে যন্ত্রণার কথা তুলে ধরছেন, যাতে করে কেউ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসেন।পড়ুয়ার নামে সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে ব্যক্তি বিশেষকে হয়রানীর কথা বলে একসময় এও উল্লেখ করা হয়েছে, “আমাদের সঙ্গে কুকুরের মত আচরণ করা হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন বিভাগে নিয়মিত কাজ করি। কিন্তু তারা আমাদের সময় মত খেতেও দেয়না”। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে শুধু ওই পড়ুয়াই নয়, রেগিং এর শিকার হতে হচ্ছে আরও অনেককেই এভাবে অভিযোগ করা হলেও অভিযোগকারী নিজের নাম বা পরিচয় জাহির করেননি। এদিকে এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডা: ভাস্কর গুপ্তকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান ব্যাপারটা তাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছেন। তাঁর কথায়, বয়ান থেকে প্রতিয়মান হচ্ছে এটা পিজি কোর্সের কোনও নবাগত পড়ুয়ার অভিযোগ । যদি বাস্তবিকই এধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তবে নির্যাতিত পড়ুয়াকে খুঁজে বের করে সবকিছু অবগত হওয়ার জন্য বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট হোস্টেলের সুপারিনটেনডেন্টদের।
ডা: গুপ্ত সঙ্গে এও বলেন বাস্তবিকই এধরনের ঘটে থাকলে সেই পড়ুয়ার উচিত নিজে থেকে এগিয়ে এসে কর্তৃপক্ষকে সবকিছু অবগত করা। প্রয়োজনে তার পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রাখা হবে। সবকিছু খতিয়ে দেখে প্রমাণ পাওয়া গেলে যারা এ ধরনের কাজে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, তাদের কাছে সরাসরি অভিযোগ না হলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় যেহেতু চর্চা শুরু হয়েছে তাই তারা ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন। এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে গত বছর এমবিবিএস স্তরের আট জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাই এবার যে অভিযোগ উঠেছে তার প্রমাণ পাওয়া গেলে ছাড়া হবে না এর সঙ্গে জড়িতদের। রেগিং প্রতিরোধে ন্যূনতম শিথিলতাও প্রদর্শন করতে রাজি নন কর্তৃপক্ষ।