অনলাইন ডেস্ক : রাস্তার দুদিকে নালা, দীর্ঘদিন ধরে এসব নালা ব্যবহৃত হয়ে আসছে প্রস্রাবগার হিসেবে। যার দরুন অন্যান্য অসুবিধার পাশাপাশি দুর্গন্ধে ওই এলাকা দিয়ে চলাফেরাটাই
হয়ে পড়েছে মুশকিল। শিলচর সদর থানার সামনের থানা রোডে এমন কাণ্ডকারখানার জেরে শনিবার অভিযানে নামে পুলিশ। আর অভিযানে নেমে আটক করা হয় ২৬ জনকে।
এদিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় অনেকেরই প্রকৃতির ডাক আসছিল ঘন ঘন। এই ডাকে সাড়া দিয়ে শরিরী তরল বর্জ্য নির্গমন করতে গিয়ে আটক হন ২৬ জন। পুলিশের এদিনের অভিযান শুরু হয় বিকেল থেকে। থানা কর্তৃপক্ষ এই অভিযানে নেমে এক অদ্ভুত পন্থা নিয়েছিলেন । সাদা পোশাকে কয়েকজন পুলিশ কর্মীকে নামিয়ে দেওয়া হয় ময়দানে। যারাই প্রস্রাব করতে আসছিলেন, প্রস্রাবরত অবস্থায় ভয় দেখাতে তাদের কিছুটা দূরত্বে
পটাকা ফাটিয়ে এরপর পাকড়াও করা হয়।
এসবের মাঝেই কয়েকজন পুলিশ কর্মীদের নাগাল এড়িয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা চালান। যদিও তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কয়েকজন আবার ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে, আর কখনও করবেন না-এমন সব কথা বলে তাদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুনয় বিনয় করতে থাকেন। যদিও পুলিশ কর্মীরা এদের কথায় কান দেননি। হিসেব কষে থানায় একেকজনকে এক ঘণ্টা করে আটকে রেখে এরপর মুক্তি দেওয়া হয়।
সদর থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অনেক বুঝিয়ে শুনিয়েও কাজ হচ্ছিল না। ওই পুলিশকর্মীর কথায়, দেখা গেছে যারা নিয়মিত প্রস্রাব করতে আসেন তাদের বেশিরভাগই আশপাশ এলাকার ছোট ছোট দোকানী। আর এদের দেখাদেখি পথ চলতি লোকেরাও অনেক সময় প্রকৃতির ডাক এলে শরীরী তরল বর্জ্য নির্গমন করে দেন সেখানে। এতে থানা চত্বরে দুর্গন্ধে টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। এছাড়া অনেক মহিলাও অভিযোগ করেন যে এভাবে পিছন মোড়ে প্রাকৃতিক কর্ম সারতে থাকা পুরুষদের পাশ দিয়ে যেতে তাদের লজ্জিত হতে হয়। এই অবস্থায় কিছুদিন ধরে বুঝিয়ে শুনিয়ে এমন কর্ম থেকে বিরত থাকার পন্থা অবলম্বন করা হয়েছিল। কিন্তু কে শুনে কার কথা। বুঝানো হলেও কেউ এসব কানে তুলতে রাজি হচ্ছিলেন না। তাই এদিন অবলম্বন করা হয়েছে ভিন্ন পন্থা।
প্রসঙ্গত বছর দশেক আগেও তৎকালীন সদর থানার পুলিশ আধিকারিকরা একদিন এই পন্থা নিয়ে ছিলেন।ওইদিন আটক করা হয়েছিল ৩৯ জনকে। সেদিন যাদের আটক করা হয়েছিল তাদের মুচলেকা নিয়ে ছাড়া হয়। এদিন অবশ্য পুলিশ সেই রাস্তায় যায়নি। পুলিশের এক সূত্র জানান, স্রেফ সতর্ক করে দিতে এদিন ২৬ জনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাদের যেতে দেওয়া হয় এমনিতেই। তবে ভবিষ্যতে এসব চলতে থাকলে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।