অনলাইন ডেস্ক : অর্থ সংকটে ধুঁকছে শিলচর পুরসভা, উন্নয়নমূলক কাজকর্ম ব্যহত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আটকে রয়েছে কর্মচারীদের বেতনও। এর বিপরীতে আবার বিভিন্ন ক্ষেত্রের কর এবং বিভিন্ন বাজারের স্টলগুলোর ভাড়া সহ ট্রেড লাইসেন্স ফি বকেয়া পড়ে রয়েছে ১০ কোটির চেয়েও বেশি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই ১০ কোটির মধ্যে বিভিন্ন সরকারি কার্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের কর বাবদ বকেয়ার পরিমাণ ১ ,৬৮ ,৪৩ ৭৭৫ ‘ ৫৫ টাকা। এরমধ্যে বকেয়া পুরকরের পরিমাণ ১,৩৫,৫৫৭২৫’৫৫ টাকা এবং জলকর ৩২,৮৮০৫০’০০ টাকা।
পুরসভার এক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত যে হিসেব কষা হয়েছে সে অনুযায়ী,সরকারি কার্যালয়গুলোর মধ্যে কর বাবদ সবচেয়ে বেশি ৩৫,২৪৬১৫’৪৫ টাকা (পুরকর-৩,১৫৭৯৮৫’৪৫ টাকা এবং জলকর ৩,৬৬৬৩০ টাকা) বকেয়া রয়েছে পূর্ত বিভাগের। এরমধ্যে বিভাগীয় রোড ডিভিশনের কার্যবাহী বাস্তূকারের কার্যালয়ের পুরকর বাবদ বকেয়া ১৯,০৫২৬০’২০ টাকা এবং জলকর বকেয়া রয়েছে ২,৮৩৭০৫ টাকা। পূর্ত(ভবন) বিভাগের কার্যবাহী বাস্তূকারের কার্যালয়ের পুরকর বকেয়া রয়েছে ৯,৬২৯২৫’২৫ টাকা এবং জলকর ৭,২৪২৫ টাকা। পূর্ত (ভবন) বিভাগের অতিরিক্ত মূখ্য বাস্তুকারের কার্যালয়ের পুরকর বকেয়া রয়েছে-২,৮৯৮০০ টাকা এবং জলকর ১০৫০০টাকা।
পূর্ত বিভাগের পর বকেয়ার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পুলিশ বিভাগ। এই বিভাগের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের নামে বকেয়া রয়েছে ২২,১৪০১৮ ‘ ৮৫ টাকা । এরমধ্যে পুরকর ১৫,৫৫৬৪৮’৮৫ টাকা এবং জলকর ৬৫,৮৩৭০ টাকা। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের পর তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেলাআয়ুক্তের কার্যালয়। বকেয়ার পরিমাণ ১৬,৩৮৬৫৬’৫৮ টাকা। পুরকর ১৪,৫২১৩৬’৫৮ টাকা এবং জল কর ১৮৬৫২০ টাকা।
সূত্রটি জানান বকেয়া করের পরিমাণ ১০ লক্ষ টাকার চেয়ে বেশি, এমন সরকারি কার্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নাম রয়েছে শিলচর সরকারি বালক উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ডিস্ট্রিক্ট এলিমেন্টারি এডুকেশন অফিসারের কার্যালয় এবং জল সম্পদ বিভাগের কার্যালয়। সরকারি বালক উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বকেয়ার পরিমাণ ১৩,৬১৮১৪’৯৫ টাকা,, জেলা প্রাথমিক শিক্ষাধিকারিকের কার্যালয়ের-১০,২৩৭৩৯’২৮ টাকা এবং জল সম্পদ বিভাগের কার্যালয়ের নামে বকেয়া রয়েছে ১৪,২২৮৫৩’৪৪ টাকা।
সূত্রটি জানান বিশাল পরিমাণ বকেয়া আদায়ের জন্য গত জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বৈঠকে বিভিন্ন বিভাগীয় অধিকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। তখন সব বিভাগ থেকেই তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত কোনও বিভাগ এক টাকাও মেটায়নি। এই অবস্থায় সোমবার বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী এক অনুষ্ঠান উপলক্ষে পুরসভার কার্যালয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট পুরকর্মীরা এনিয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জানা গেছে বিধায়ক সরকারি বিভাগ গুলো যাতে বকেয়া কর মিটিয়ে দেয় এনিয়ে উদ্যোগী হবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এদিকে সব মিলিয়ে যে ১০ কোটি টাকা পুরসভার প্রাপ্য রয়েছে এ নিয়ে সূত্রটি জানান, এর মধ্যে সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে পুরকরের পরিমাণ ৭কোটি,৭৫ লক্ষ,৫৯০ টাকা। পুরসভার অধীন বিভিন্ন বাজারের স্টলের ভাড়া বাবদ ব্যবসায়ীদের কাছে প্রাপ্য রয়েছে প্রায় ২ কোটি এবং ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণ বাবদ প্রাপ্য রয়েছে প্রায় ১ কোটি।