অনলাইন ডেস্ক : অবশেষে মিলল স্বস্তি ! স্কুল সমূহের উপপরিদর্শকের নির্দেশকে ঘিরে টানা ১৪ দিন উৎকণ্ঠার প্রহর গোনার পর বৃহস্পতিবার কিছু শর্তসাপেক্ষে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো-কে শিলচর আরবান এলাকার সরকারি নিম্ন ও উচ্চপ্রাথমিক স্কুলে নাচ গান এবং অঙ্কণ প্রশিক্ষণের অনুমতি দিলেন জেলাশাসক রোহন কুমার ঝা। শর্ত রাখলেন, পুরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ প্রদানকারী সংস্থাগুলোকে নির্দিষ্ট হারে আদায় করতে হবে মাশুল। অবশ্য শিল্পী মহল কিংবা প্রশিক্ষণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মকর্তারা এতে আপত্তি করেননি। ফলে গোটা এপিসোডের যবনিকাপাত ঘটে এদিন।
গত ১১ আগস্ট এক নির্দেশে শিলচর আরবান এলাকার সরকারি নিম্ন ও উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সবধরনের বেসরকারি পাঠদানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন স্কুল সমূহের উপপরিদর্শক। এতে দীর্ঘদিন ধরে ওইসব স্কুলে বেসরকারি উদ্যোগে চলে আসা নাচ গান, অঙ্কন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যায়। শিল্পী মহল থেকে শুরু করে শিলচরের সংস্কৃতিমনষ্ক ব্যক্তিবর্গ এর প্রতিবাদ জানান। বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ সহ বিভিন্ন দল সংগঠন এর প্রতিবাদ জানায়। রাতারাতি জেলা শিল্পী সমিতি নাম দিয়ে গঠন করা হয় যৌথ প্ল্যাটফর্ম। পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের তরফে জেলাশাসককে স্মারকপত্র প্রদান করে নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
অবশেষে জেলাশাসকের আহ্বানে এদিন শিল্পী সমিতির কর্মকর্তারা জেলা শাসকের কার্যালয়ে এক বৈঠকে মিলিত হন। দীর্ঘ আলোচনার পর জেলাশাসক জানান, রাজ্য সরকারের নিয়ম অনুযায়ী সরকারকে একটি নির্দিষ্ট হারে মাশুল প্রদান করলে তবে-ই সরকারি স্কুলগুলোতে বেসরকারি সংগীত প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সংগীত প্রশিক্ষণ সহ অন্যান্য শিক্ষাদান কর্মসূচি চালিয়ে যেতে পারবে। শিলচর পুর এলাকার স্কুলগুলোর জন্য মাসকাবারে ৫০০ এবং পঞ্চায়েত এলাকায় জমা দিতে হবে ৩০০ টাকা। সেই সঙ্গে শিলচর পুরসভা থেকে নিতে হবে ট্রেড লাইসেন্স-ও। এ জন্য বছরে আরও ৫০০ টাকা প্রদান করতে হবে। জেলাশাসক এক মৌখিক নির্দেশে জানান, সরকারি প্রক্রিয়া পূরণ করতে যেহেতু কিছুটা সময়ের প্রয়োজন, তাই ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে প্রতিটি স্কুলে গান-বাজনার শিক্ষাদান প্রক্রিয়া আগে যেমন চলছিল তেমনই চলবে। এতে সহমত পোষণ করেন জেলা শিল্পী সমিতির কর্মকর্তারা। ধন্যবাদ জানান জেলাশাসক রোহন কুমার ঝা-কে। এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিডিসি রাজীব রায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক অন্তরা সেন, জেলা শিল্পী সমিতির পক্ষে নিখিল পাল, প্রদীপ, আচার্য, শ্যামল সাহা, অরুণ পাল, সম্মিলিত মঞ্চের পক্ষে অজয় কুমার রায়,বিশ্বজিৎ দাস,সুবীর ভট্টাচার্য, গোরা চক্রবর্তী,ঋষিকেশ চক্রবর্তী, চন্দন মজুমদার, সত্যজিৎ বসু জয়, সমাজকর্মী রাজেশ দেব, সজল বনিক, নন্দন দাস। বরাক বঙ্গ-র পক্ষে ছিলেন সব্যসাচী পুরকায়স্থ।