অনলাইন ডেস্ক : এক ইউটিউবার টিমের দুই সদস্য অনুপম রাজকুমার ও শিবানী সিনহা বেরিয়েছিলেন রাম-সীতা সেজে । বিভিন্ন মন্দিরে ঘোরাঘুরির সময় তাদের পদধূলি নিতে ও তাদের সঙ্গে সেলফি উঠতে পড়ে যায় হুড়োহুড়ি। সোমবার রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠাকে ঘিরে শিলচরে এভাবেই উথলে উঠে ভক্তিরস।
অযোধ্যার নবনির্মিত রামমন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠাকে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই শিলচর ছিল ভক্তিরসে টইটুম্বুর। দীপাবলীর সাজে সেজে উঠে শহর যেন পরিণত হয় রামনগরীতে। এদিন দুপুরে “অভিজিৎ মুহূর্তে” প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর “রাম আয়েঙ্গে” -দীর্ঘদিনের এই অপেক্ষা শেষ হতেই উথলে উঠতে শুরু করে ভক্তিরস। শবরীর প্রতীক্ষা শেষে “স্বপ্নপূরণ” হতেই ভক্তরা আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে দিতে শুরু করেন জয় শ্রীরাম ধ্বনি।
এদিন সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন মন্দির এবং রাস্তার মোড়ে মোড়ে আয়োজন করা হয় পূজা ও ভজন-কীর্তনের। আর এসবকে ঘিরে সমাগম ঘটে প্রচুর ভক্তের। তুলাপট্টির এলাকার নরসিংহ আখড়া এবং শ্যামসুন্দর মন্দিরেতো ভক্তদের ঢল নামতে দেখা যায়। প্রাণপ্রতিষ্ঠার লগ্ন চাক্ষুষ করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় লাগানো হয়েছিল জায়ান্ট স্ক্রিন। প্রাণ প্রতিষ্ঠাপর্ব উতরে যাওয়ার পরই বিভিন্ন পূজাস্থলিতে শুরু হয় প্রসাদ বিতরণ। দিনভর চলতে থাকে তা।
গত কয়েকদিন ধরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যাচ্ছিল আলোর রোশনাই। এদিন সন্ধ্যার পর সংযোজন ঘটে প্রদীপের। সঙ্গে আবার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় রামায়ণ ভিত্তিক নানা অনুষ্ঠান। এতে ত্রেতাযুগে সেই বনবাস ও লঙ্কাবিজয় সেরে রামের ফিরে আসার লগ্নে যেভাবে অযোধ্যায় দীপাবলি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল, সেভাবেই যেন ঝলমল করে ওঠে শহর।
এসবের মাঝে এদিন কোনও মন্দিরভিত্তিক শহরের মতো সরকারি ফরমানে দিনের ভাগে শিলচরে মাছ মাংস বিক্রি হয়নি। আর এদিনই অনেক বিয়ের অনুষ্ঠান থাকায় এর দরুন অনেক পরিবারকে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। যদিও ভক্তির আবেগে অনেকে মেনে নিয়েছেন এই অসুবিধাটুকু।
এদিন অবশ্য শুধু যে মাছ মাংস বিক্রি বন্ধ ছিল এমন নয়। শহরে এদিন বাইরের লোক আসেননি বললেই চলে। তাই সরকারি ফরমান না থাকা সত্ত্বেও খোলেনি বেশিরভাগ দোকানপাটই। আর অর্ধ দিবস ছুটির নামে বিভিন্ন সরকারি কার্যালয় ছিল প্রায় বন্ধই। এসবের দরুন রাস্তায় বাণিজ্যিক যানবাহনও ছিল তুলনামূলকভাবে অনেক কম। সবমিলিয়ে ভক্তদের বিভিন্ন মন্দির ও রাস্তার মোড়ের পূজাস্থলিতে ঘুরে বেড়াতে কোনও বেগ পেতে হয়নি। মাঝে মাঝেই “জয় শ্রীরাম”ধ্বনি দিয়ে তারা চষে বেড়িয়েছেন শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের নানা মন্দির ও পূজা স্থলীতে।