অনলাইন ডেস্ক : মণিপুরে চলমান সহিংসতায় নিজের টুইটার হ্যান্ডলে দীর্ঘ এক আবেগঘন পোস্ট করেছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা। ৬২ দিন ধরে মণিপুরে চলমান জাতিগত সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডলে নিজের ব্ল্যাক-অ্যন্ড হোয়াইট একটি ছবি সহ আবেগ সংবলিত দু লাইনের ক্যাপশন লিখেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘হুয়েন উইল ইট স্টপ?’ (কখন এ সব থামবে?)।
এর পর আবেগের সঙ্গে দীর্ঘ বক্তব্য পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা। দীর্ঘ পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘গত ৩ মে থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় ইতিমধ্যে মণিপুরে ১২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং ৩ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। যদিও আমরা অনেক সদিচ্ছা, প্রত্যাশা এবং বুকভরা আশা করি, পরিস্থিতি শীঘ্রই উন্নত হবে। কিন্তু পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কখন এ সমব থামবে? আমি আমার মণিপুরি জো ভাইদের সমবেদনা জানাই, যাঁরা তাঁদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন, তাঁদের বাড়িঘর এবং পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে, তাঁদের জন্য ঈশ্বরের কাছে আমার অবিরাম প্রার্থনা রইল। করুণাময় ঈশ্বর আপনাদের এই বিপর্যয়কর ঘটনার মধ্যেও শক্তি এবং প্রজ্ঞা দান করুন।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘লিঙ্গ ও বয়স নির্বিশেষে, চার্চ পোড়ানো, নৃশংস হত্যাকাণ্ড এবং সমস্ত ধরনের সহিংসতার ছবি ও ভিডিও ক্লিপ আমি আর দেখতে চাই না। যদি শান্তির জন্য মীমাংসাই একমাত্র উপায় থাকে, তা-হলে আমরা কি সেই পথ বেছে নেব না? অনেক প্রাণ হারিয়েছে, সর্বত্র রক্তপাত, শারীরিক নির্যাতন এবং ভুক্তভোগীরা যেখানেই সম্ভব আশ্রয় খুঁজছেন। কোনও সন্দেহ ছাড়াই যাঁরা হিংসার শিকার হচ্ছেন তাঁরা আমার আত্মীয়, আমার নিজের রক্ত। আমদের কি শুধু নীরব থেকে পরিস্থিতি শান্ত করা সম্ভব? আমি তা মনে করি না!’
‘আমি অবিলম্বে শান্তি ও স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানাই। শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য অবিলম্বে উপায়গুলি সন্ধান করা ভারতের দায়িত্বশীল এবং আইন মান্যকারী নাগরিকদের দায়িত্ব এবং অপরিহার্য কর্তব্য। মানবিক স্পর্শে উন্নয়ন এবং সব-কা সাথ সব-কা বিকাশ আমার মণিপুরের জো জাতি-উপজাতিদের জন্যও প্রযোজ্য!’ জোরামথাঙ্গা তাঁর সোশাল মিডিয়া পোস্টে যোগ করেছেন।
সামাজিক মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী শেষে লিখেছেন, ‘মণিপুরে নৃশংস সহিংসতার ফলে মিজোরামে প্রায় ১২ হাজার বাস্তুচ্যুত আশ্রয় নিয়েছেন। ইতিমধ্যে মণিপুর, মায়ানমার এবং বাংলাদেশ (রোহিঙ্গা) থেকে উদ্বাস্তু অথবা আইডিপিস ৫০ হাজারের বেশি মিজোরামের বাসিন্দা। তাই আমি কামনা করি এবং প্রার্থনা করি, কেন্দ্রীয় সরকার মানবিক ভিত্তিতে অবিলম্বে আমাদের দিকে যেন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।’