অনলাইন ডেস্ক : হিংসাজর্জর মণিপুরে কথিত কুকি জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বিএসএফ-এর এক জওয়ান। এছাড়া আসাম রাইফেলস-এর দুই জওয়ান গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘায়েল হয়েছেন। আহতদের বায়ুসেনার বিমানে কাকচিঙের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে যৌথবাহিনী জঙ্গিদের পাকড়াও করতে চিরুনি তালাশি চালিয়েছে বলে সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে। নিহত জওয়ানকে বিএসএফ-এর কনস্টেবল রঞ্জিত যাদব বলে পরিচয় পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার ডিমাপুরে অবস্থিত সেনাবাহিনীর স্পিয়ার কর্পস সদর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলার সীমান্তবর্তী কাকচিং জেলাধীন সুগনু থানার অন্তর্গত সেরউ-এর বিস্তীর্ণ অঞ্চলে গতকাল রাতে বিএসএফ, আসাম রাইফেলস, অন্য কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী কম্বিং অপারেশন চালিয়েছিল। তখন আচমকা যৌথবাহিনীর ওপর হামলা চালায় কুকি জঙ্গিরা। হামলার পাল্টা জবাব দেয় যৌথবাহিনীও। জঙ্গিরা জঙ্গলের ঝোপ এবং নাগরিকদের বসতবাড়ির আড়াল থেকে গেরিলা হামলার আদলে গুলি বর্ষণ করতে থাকে। উভয় পক্ষের মধ্যে সারা রাত অবিরাম গোলাগুলি চলে।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত মঙ্গলবার ভোররাত প্রায় ৪:১৫ মিনিট নাগাদ জঙ্গিদের গুলিতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র এক এবং আসাম রাইফেলস-এর দুই জওয়ান গুলিবিদ্ধ হন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের কাকচিঙের (মন্ত্রীপুখরি) জীবন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তাররা বিএসএফ-এর জওয়ান কনস্টেবল রঞ্জিত যাদবকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মণিপুরে হিংসার বিরাম নেই। ৩ মে থেকে গত এক মাসে একটি দিনের জন্যও রাজ্য হিংসমুক্ত থাকেনি। সোমবার বেশি রাতে রাজধানী ইম্ফলের অদূরে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিন জন মারা গিয়েছেন। নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীরা কুকি জঙ্গি গোষ্ঠীর লোক।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুর সফরে গিয়ে পনেরো দিনের জন্য শান্ত থাকার আর্জি জানিয়েছিলেন বিবদমান দুই পক্ষকেই। কুকি এবং মৈতেই সম্প্রদায়ের নেতাদের মুখোমুখি বসিয়ে কথা দিয়েছিলেন, পনেরো দিন রাজ্য শান্ত থাকলে দু পক্ষের দাবিই সরকার বিবেচনা করবে। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিল্লিতে পা রাখার পর দিন থেকেই নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে দুই পক্ষের।
এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার দিল্লিতে মণিপুরের নাগা বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ১০ নাগা বিধায়কের চারজন বিজেপির। মণিপুরের জনসংখ্যার একাংশ জাতিগতভাবে নাগা। নাগাল্যান্ড সরকার ইতিমধ্যে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে নাগাদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। নাগাদের সঙ্গে কুকিদের জাতিগত নৈকট্য থাকলেও চলতি সংকটে তারা কোনও পক্ষে যোগ দেয়নি।