অনলাইন ডেস্ক : ইঞ্জিনিয়ারদের উপর তার ভরসা রয়েছে। তারা যখন বলছেন কাজ ভালো হয়েছে তখন, তিনিও মেনে নিচ্ছেন একথা। তবে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কাজ নিয়ে কিছু অভিযোগ উঠেছে। পরবর্তীতে যদি দেখা যায়,এসব অভিযোগ সত্যি, তবে ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে যেতে তিনি মোটেই ভাববেন না। বৃহস্পতিবার শিলচর বেতু কান্দিতে বাঁধের কাজ পরিদর্শনে গিয়ে একথা বলার পাশাপাশি জনসম্পদ বিভাগের মন্ত্রী পীষূষ হাজারিকা বিভাগীয় এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আবু ইউসুফ মহম্মদ কে জামানকে সতর্ক করে বলেন-“জামান সাহেব, দেখবেন আমাকে যেন জনতার গালি শুনতে না হয়।”
বুধবার বরাক উপত্যকাটা সফরে এসে করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দিতে বিভাগীয় কাজকর্ম পরিদর্শনের পর বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে ফিরে যাওয়ার আগে মন্ত্রী কাছাড় জেলায় শিলচরের বেতুকান্দি সহ অন্যান্য স্থানে বাঁধের নির্মাণ কাজ ও স্লূইস গেট পরিদর্শন করেন। বেতুকান্দিতে পরিদর্শনের পর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথাবার্তা বলার সময় তিনি কাজের মান নিয়ে উত্থাপিত প্রশ্নে বল ঠেলে দেন জল সম্পদ বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের কোর্টে। বলেন, কাজ নিয়ে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে কিছু অভিযোগ ঘটেছে। এ নিয়ে তিনি ইঞ্জিনিয়ারদের জিজ্ঞেস করেছেন, তারা বলেছেন কাজ ভালো হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারদের কারিগরি জ্ঞান রয়েছে, তিনি নিজে এই জ্ঞানের অধিকারী নন। ইঞ্জিনিয়াররা যখন বলছেন, কাজ ভালো হয়েছে তখন তাদের উপর ভরসা করে তা মেনে নিচ্ছেন তিনি। তবে পরবর্তীতে যদি দেখা যায় স্থানীয় লোকেদের অভিযোগ সঠিক, তবে ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে যেতে তিনি ভাববেন না মোটেই। রেয়াত করা হবে না কাউকেই।
তিনি আরও বলেন, স্লূইস গেটের কাজ শেষ হয়ে গেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই এই গেট দিয়ে মহিষাবিলের জল নিষ্কাশন যথাযথ হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। আর বাঁধ তৈরি হয়ে গেছে প্রায় ৭০ শতাংশ। বাকি অংশ পাট্টা জমির সমস্যার দরুন আটকে রয়েছে আটকে
রয়েছে। মানুষ জমি না ছাড়লে তড়িঘড়ি করে তার পক্ষে তো কিছু করা সম্ভব নয়। এনিয়ে গুয়াহাটিতে ফিরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন। সঙ্গে তিনি পাট্টা জমি এড়িয়ে বিকল্প জমির উপর দিয়ে বাঁধ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব কিনা তা জরিপ করে দেখতে নির্দেশ দেন জেলা শাসককে।
বেতুকান্দিতে বাঁধের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পলিমাটি, এতে তৈরি হচ্ছে দুর্বল বাঁধ। শুরু থেকেই এলাকাবাসী এমন অভিযোগ তুলছেন। এদিন
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার আগে যখন তিনি ইঞ্জিনিয়ারদের কাছ থেকে কাজকর্মের খোঁজখবর নিচ্ছিলেন তখন এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কে জামানকে এ নিয়ে জিজ্ঞেস করেন। জামান কাজ যথাযথভাবেই হচ্ছে বলে জানালে মন্ত্রী তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তার কথায় তিনি ভরসা করছেন। তবে কাজ নিয়ে তাকে(মন্ত্রীকে) যেন জনতার গালি শুনতে না হয়।
বাঁধের কাজ পরিদর্শনের সময় স্থানীয় লোকেরা তার কাছে এই অভিযোগও করেন যে, কাজের দরুন তাদের যাতায়াত করাটাই মুশকিল হয়ে পড়েছে। একথা শুনে মন্ত্রী তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, বাঁধ তৈরি হয়ে যাওয়ার পর উপর দিয়ে যাতায়াতের সুবিধার জন্য পাকা করে দেওয়া হবে।
বেতুকান্দির আগে মন্ত্রী বেরেঙ্গায়ও বাঁধের কাজ পরিদর্শন করেন। বেরেঙ্গা ও বেতুকান্দির পর তিনি শিলচরের অন্নপূর্ণাঘাট, বড়খলার মানিকপুরে জল সম্পদ বিভাগের কাজ পরিদর্শন শেষে যান কাটিগড়া মহাদেবপুরে। সেখানে স্লূইস গেট পরিদর্শন শেষে গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যান।