অনলাইন ডেস্ক : স্লগ ওভারে ফের এক টুইস্ট। বাদশার পর এবার ভোট লড়াইয়ে নেই সম্রাট!! অর্থাৎ শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার ‘ হাই প্রোফাইল ‘ বিজিএমে প্রার্থীত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী। বাহুবলি পার্ট থ্রির অংশ না হলেও দারুণ একটা ট্যাকটিক্যাল মুভ দিলেন শেষবেলায় । সম্ভবত বিধায়কের ওকালতিতেই বহুল জনপ্রিয়, অজাতশত্রু শিবব্রত দত্তকে বিজিএমের রণাঙ্গনে নিজেদের ‘ মুখ’ করল পদ্ম ব্রিগেড। সভাপতি পদে বাবুল হোড়ের দিকে শক্ত একটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন শিবব্রত দত্ত। চমকের ‘ পঞ্চতন্ত্র ‘ – এ এখানেই ফুলস্টপ পড়েনি। চূড়ান্তরকমের সেটিং টেটিংয়ের পর সচিব পদে শাসক গোষ্ঠীর বসন পরে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেখা যাবে ডিএসএসর বাগানের আরেক পরিচিত ফুল চন্দন শর্মাকে। সোমবার ম্যারাথন বৈঠকের পর চূড়ান্ত একটা সিদ্ধান্তে পৌছতে পারেন দীপায়নরা। সেইসঙ্গে প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল তাদের প্যানেল। যদি না কোনও ‘ নাটকীয় ‘ ফেরবদল ঘটে !!
ঘটা করে বাদশার প্রার্থীত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতা দখলের পুরো স্টোরিটাই পাল্টে গিয়েছিলো। তাই গেরুয়া শিবির ক্যাটালগের পাতা পাল্টে পাল্টে সম্ভাব্য সম্ভাবনা গুলো দেখছিলো। কখনও দেবাশীষ সোম, যীশু গুপ্ত হয়ে শিবব্রত দত্ত – গ্রাফে উঠানামা করছিলো কিছু নাম। কিন্তু চূড়ান্ত একটা সেটিং যেন কিছুতেই আর হয়ে উঠছিলো না। আসলে ময়দানে নামতে রাজি করানো যাচ্ছিলো না শিবব্রত দত্তকে। শেষঅবধি ‘হ্যাঁ ‘ বললেন শিবু দা। তবে এরথেকেও বড় চমক। ফাঁকা পোস্টে চার পাঁচটা গোল দিয়ে জনপ্রিয় শিবব্রত দত্তকে বাবুল হোড়ের সামনে বসিয়ে বিজেন্দ্রপ্রসাদ সিংয়ের মতই প্রার্থীত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন বিধায়ক দীপায়ন। আপাতত কিংমেকার হয়েই বিজিএমে দেখা যাবে শিলচরের বিধায়ককে। সভাপতি পদে যেমন শিবব্রত তেমনি সচিব পদেও অপ্রত্যাশিত ছিলেন চন্দন?? বাদশার প্রস্থানে অনেকগুলি নাম উঠে এসেছিলো। তবে চন্দন সেইঅর্থে আন্ডারডগই ছিলেন। অবশ্য ডিএসএর প্রশাসনিক ক্ষেত্রে চন্দন শর্মা বেশ চেনা নাম। সেজন্যই সম্ভবত তাঁর উপর আস্থা রেখেছেন দীপায়নরা।
সবঠিকঠাক করতে গিয়ে অনেক অচেনা নামই সমৃদ্ধ হয়েছে দীপায়নদের প্যানেলে। সহ সভাপতি পদে সুবিমল ধর ( ক্রীড়া ), নন্দদুলাল রায় ( রেফারি – আম্পায়ার ), নীলাভ মজুমদার ( আদার গেমস ), অজয় চক্রবর্তী ( সাংস্কৃতিক ) প্রসেনজিৎ ভট্টাচাৰ্য ( স্টেডিয়াম ) তো আগে থেকেই ছিলেন। এবার এই পদে নাম খুদাই হয়েছে আশুতোষ রায় ( প্রশাসন ) এবং অনিমেষ সেনগুপ্তের ( সুইমিং )। নেই রাজার দেশে রয়েছেন ড. সিদ্ধার্থ ভট্টাচাৰ্য। তাঁর নাম বাদ দিয়েই প্যানেল ফাইনাল করেছে পদ্ম শিবির। সূত্রের দাবি মানলে ডাক্তার বাবুর বিরুদ্ধে ভোটযুদ্ধে যেতে তেমন একটা আগ্রহী নন বর্ষীয়ান আশুতোষ রায়। অনিমেষ সেনগুপ্তও একইভাবে দুটানায় রয়েছেন। সূত্রটি আরও বলেছে, একে তো ভোটে লড়তে হবে, তারউপর আবার প্ৰিয় লোক রতন সিংয়ের বিরুদ্ধে – তাই এখনই ভেবে চলেছেন অনিমেষ সেনগুপ্ত।
বাদবাকি পদগুলিতে তেমন একটা হেরফের হয়নি। এজিএস পদে আগের মতই রয়েছেন অরিজিৎ গুপ্ত ( মেজর স্পোর্টস ), দেবাশীষ সোম ( প্রশাসন )। চন্দন শর্মার প্রমোশন হওয়ায় এজিএস আদার গেমসে পৃথ্বীশ পালের বিরুদ্ধে এখন কোনও ভল্লালদেব নেই। হয়তো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরবর্তী সমিতিতে তাঁর নাম দেখা যেতে পারে। একই কথা প্রযোজ্য বিকাশ দাসের বেলায়ও। উত্তম চৌধুরী সরে দাঁড়ানোয় বিকাশ এখন প্রতিপক্ষহীন। কোষাধক্ষ্য পদে শাসক শিবিরের প্রথম পছন্দ পূবালীর বুদ্ধদেব চৌধুরী। শুধু নিজেদের ক্যাডার দিয়ে হবে না। তাই নতুন নতুন ক্লাব থেকেও লোক আমদানি করছেন দীপায়নরা। যাতে ‘ নিরপেক্ষ ‘ ভোটগুলিও তাদের পক্ষেই কথা বলে। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে প্যানেলে স্থান পেয়েছেন নিরঞ্জন দাস (ক্রিকেট )। শাসক শিবিরে সচিব পদের পছন্দরা হলেন – সুদর্শন চৌধুরী ( হকি ), সুখেন সরকার ( সুইমিং ), মিঠুন রায় ( ফিজিক্যাল ), সত্যজিৎ দাস ( মাইনর গেমস ), হিমাদ্রি শেখর দাস ( আম্পায়ার), সমর রায় (রেফারি ), শান্তুনু রায় ( বলস ), প্রণব কল্যাণ দে ( সাংস্কৃতিক ), আশীষ চৌধুরী ( স্টেডিয়াম ), কৌশিক রায় ( গ্রাউন্ড ), অনিমেষ চন্দ ( ইন্ডোর )।
হাতে একসপ্তাহ সময়ও হাতে নেই। তাই এই সূচিতে আর বদলের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে বাদশা -দীপায়ন বিহীন এই ব্রিগেডের জন্য যে কঠিন লড়াই সামনে রয়েছে, তা আর বলার
অপেক্ষা রাখে না।