অনলাইন ডেস্ক : সুভাষচন্দ্র বসু থাকলে দেশভাগ হত না, শনিবার বলেছেন দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। এই মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীর ভূয়সী প্রশংসা করে তাঁকে একজন সাহসী মানুষ হিসাবে বর্ণনা করেছেন ডোভাল। আর সাহসিকতার দৃষ্টান্ত হিসাবে কংগ্রেসে মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে সুভাষচন্দ্র বসুর বিরোধের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে। তিনি বলেছেন, সুভাষ চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন গান্ধীকে। সেটা যথেষ্ট সাহসী কাজ ছিল।
খুবই কম কথার মানুষ ডোভাল শনিবার দিল্লিতে বণিক সভার অনুষ্ঠানে বারে বারে সুভাষচন্দ্র বসুর অবদানের কথা বলতে গিয়ে নাম না করে জওহরলাল নেহরু-সহ কংগ্রেসের তৎকালীন নেতৃত্বের দিকে আঙুল তুলেছেন। এমনকী একথা বলেছেন, সুভাষচন্দ্র বসু তখন থাকলে জিন্নাহও দেশভাগের দাবি পুনর্বিবেচনা করতে আগ্রহী ছিলেন। মিতবাক ডোভালের কথার আসল উদ্দেশ্য বুঝতে অসুবিধা হয়নি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা যে আরএসএস এবং বিজেপির এজেন্ডা মতো দেশভাগের পুরো দায় কংগ্রেসের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তা অনুধাবন করে তাঁকে দেশভাগ নিয়েই পাল্টা তির নিক্ষেপ করেছে কংগ্রেস।
দলের জনযোগাযোগ বিভাগের প্রধান প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘একটা কথা ডোভাল বলেননি যে বাংলা ভাগের কারিগর ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। আর বঙ্গভঙ্গের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন নেতাজির দাদা শরৎচন্দ্র বসু।’ প্রসঙ্গত, বাংলার নেতা শ্যামাপ্রসাদ রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের সহযোগিতায় ভারতীয় জনসংঙ্ঘ নামে দল গড়ে তুলেছিলেন। সেই দল আর নেই। তবে আজকের বিজেপি আসলে আদি জনসংঙ্ঘ। জয়রাম জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, দেশভাগে হিন্দুত্ববাদীরা কী ভূমিকা নিয়েছিল।
আসলে দেশভাগের আগে বাংলা ভাগ নিয়ে বঙ্গ-কংগ্রেসের মধ্যেও দুটি মত ছিল। বিধানচন্দ্র রায়-সহ বেশ কয়েকজন ভাগের পক্ষে ছিলেন। অন্যদিকে, শরৎ বসু শুধু বাংলা অখণ্ড রাখার পক্ষপাতী ছিলেন তাই-ই নয়, তিনি যুক্ত বাংলা নামে একটি পৃথক দেশ বা রাষ্ট্রের প্রস্তাব করেছিলেন। হোসেন শাহিদ সোহরাওয়ার্দীকে নিয়ে তিনি সোদপুরের আশ্রমে গিয়ে গান্ধীজির সঙ্গে দেখা করে যুক্ত বাংলা নামে পৃথক রাষ্ট্রের দাবি পেশ করলে বসু তাতে সম্মত হন। তিনি বলেন, বাঙালিরা যদি এক সঙ্গে থাকতে পারে তার চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে। কিন্তু ততদিনে বাংলাভাগের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ে গিয়েছে। নেতাজি থাকলে দেশভাগ হত না, ডোভালের এই বক্তব্যকে বিপরীতধর্মী প্রশ্ন বলে কটাক্ষ করেছেন জয়রাম।