অনলাইন ডেস্ক : আবার ধস পড়ে বন্ধ হয়ে গেল শিলং রোড। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেই কুখ্যাত সোনাপুর সুড়ঙ্গের মুখে বড় আকারের ধস নামায় বন্ধ হয়ে পড়ে যান চলাচল। বিকেলের দিকে ধস সারাইয়ের কাজে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হাত দিলেও এসংবাদ লেখা পর্যন্ত অচল রয়েছে ৬নং জাতীয় সড়ক। উল্লেখ্য, এদিনের ধসে আটকা পড়েন করিমগঞ্জের জেলাশাসক মৃদুল যাদব সহ এএসটিসি চেয়ারম্যান মিশনরঞ্জন দাসও।
আসলে হাতেগোনা কয়েকটি দিন স্বাভাবিক ছিল শিলচর-গুয়াহাটি সড়ক। বৃষ্টির ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে যান চলাচল করছিল ৬নং জাতীয় সড়কের সোনাপুর অঞ্চল দিয়ে। কিন্তু ইদের দিনে নেমে এলো সেই দু:সংবাদ! আগের প্রায় ২৪ ঘন্টা ধরে লাগাতার বৃষ্টি হওয়ায় এদিন পড়ন্ত দুপুরে নামে ধস। সোনাপুর টানেলের সেই পুরানো জায়গায়, একই কায়দায়। পুর্ব জয়ন্তিয়া পাহাড় থেকে বৃষ্টির সঙ্গে নেমে আসে কাদা-জল। অন্যান্য দিন থাকে পাথর মিশ্রিত জল, বৃহস্পতিবার নামে একেবারে ক্ষীর! বড় সাইজের কোনও পাথর নেই। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জল-কাদার এই ‘মশলা’-র পরিমান এতটাই যে আস্ত কোনও মানুষ ডুবে যাবে। অন্যদিন কেবল কালাইন দিকে ধসের অংশবিশেষ পড়লেও বৃহস্পতিবার উভয় দিকে বিস্তৃত হয়। শিলং দিকেও লোভা সেতুর গোড়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে পাহাড়ের তাণ্ডব। ফলে গাড়ি পারাপারের কোনও সম্ভাবনা নেই। এমনকি পায়ে হেঁটে কোনও লোক পার হওয়ারও জো নেই। এমতাবস্থায় সুড়ঙ্গের উভয় দিকে স্বাভাবিকভাবেই আটকা পড়ে যানবাহন।
এদিকে, কয়েকদিনের ফুরসত মেলায় অনেকটা নিশ্চিন্ত ছিলেন সুড়ংগের দেখাশোনার দায়িত্বপ্রাপ্তরা। আশপাশে ছিলেন না কেউ। পুলিশ কিংবা পূর্ত বিভাগ, ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া ইত্যাদির কোনও কর্মীই ধারেকাছে ছিলেন না। তাই হটাৎ করে আটকা পড়া যানবাহন আর যাত্রীদের হা করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় ছিল না। যদিও ঘন্টা দু’য়েক পর সরেজমিনে পৌঁছেন সংশ্লিষ্টরা। তখনও বৃষ্টি পড়ছিল অঝোর। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিকেল ৩টা নাগাদ যান চলাচল সাময়িক বন্ধ বলে সরকারি বিজ্ঞপ্তি দেয় ইস্ট জয়ন্তিয়া হিলস পুলিশ। তখন থেকেই শুরু হয় ধস সারাইয়ের কাজ। রাতে এ সংবাদ যখন তৈরি হচ্ছে, তখনও বন্ধ রয়েছে সোনাপুর টানেল।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার গুয়াহাটি থেকে করিমগঞ্জ ফিরছিলেন জেলাশাসক মৃদুল যাদব। বাড়ি আসছিলেন করিমগঞ্জের বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথা অসম রাজ্যিক পরিবহন নিগমের চেয়ারম্যান মিশনরঞ্জন দাস। তাঁরা উভয়ই আটকা পড়েন সোনাপুর। মিশনবাবু সেখানে দাঁড়িয়েই করেন ফেসবুক পোস্ট। জেলাশাসক ও তাঁর যৌথ ছবি আপলোড করে বর্ণনা করেন দূর্দশার কথা। লোভা নদীর উপরে থাকা সেতুতে দাঁড়িয়ে পূর্ব জয়ন্তিয়া পাহাড়ের লীলা দেখা ছাড়া কিছু করার ছিল না বিজেপি নেতা কিংবা জেলাশাসকের! তবে বরাক উপত্যকাবাসীর গা সোয়া হতে চলা এই দূর্গতির কথা তাঁরা উপর মহলে জানালেন কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।