অনলাইন ডেস্ক : প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার সারা রাজ্যের সঙ্গে শিলচরেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে জেলাশাসক মারফত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকপত্ৰ প্রদান করে অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স এসোসিয়েশন। সংগঠনের পক্ষ থেকে এদিন সাড়ে এগারোটা নাগাদ জেলাশাসক কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হয়ে প্রথমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে স্মারকপত্র প্রদান করে। বিক্ষোভ শেষে সংগঠনের জেলা সভাপতি মন্মত নাথ বলেন, আসাম সরকারের শক্তি মন্ত্রক রাজ্যের বিদ্যুৎ গ্ৰাহকদের বর্তমানে ব্যবহৃত ডিজিটেল মিটারকে সরিয়ে প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু করেছে। গত ১২ জানুয়ারি আসাম সরকার কেবিনেট বৈঠকে রাজ্যে ৪৪ লাখ প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপনের জন্য ৪৩৬২ কোটি টাকার অনুমোদন দেয়। অথচ বৰ্তমানে ব্যবহৃত ডিজিটেল মিটার অতি সুক্ষ্মভাবে বিদ্যুতের পরিমাপ করতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও লক্ষ লক্ষ ডিজিটেল মিটারকে ডাষ্টবিনে ফেলে নতুন করে প্ৰিপেইড মিটার স্থাপন কেন করা হচ্ছে বা কার স্বাৰ্থে করা হচ্ছে তা জনগণ বুঝতে পারছেন।
তিনি আরও বলেন, রাজ্য সরকার ঋণগ্রস্ত হওয়াতে টাকার অভাবে বহু প্রকল্প ঘোষণা করেও শুরু করেনি বা অৰ্ধসমাপ্ত রেখেছে, তখন সরকারের কোষাগার থেকে বিশাল অংকের অর্থ খরচ করে প্ৰিপেইড মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্ত চরম জনবিরোধী। তিনি বলেন এটি একটি জনবিরোধী পদক্ষেপ এবং প্ৰিপেইড মিটার সাধারণ গ্ৰাহকদের স্বাৰ্থ ক্ষুন্ন করবে ও প্ৰিপেইড মিটার প্ৰস্তুতকারী কোম্পানিগুলোকে লাভবান করবে। স্মারকপত্রে উল্লেখ করা হয় যে বিদ্যুৎ একটি অপরিহাৰ্য ও অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা। বিদ্যুৎ ছাড়া আধুনিক সভ্যতা এক মূহুৰ্তও চলে না। অথচ সরকার অপরিহাৰ্য এই পরিষেবাকে ক্ৰমান্বয়ে লাভজনক পণ্যে রূপান্তরিত করছে। প্ৰিপেইড মিটারের অর্থই হচ্ছে গ্ৰাহকদের বিদ্যুৎ ব্যবহারের পূর্বে টাকা জমা দিতে হবে। অৰ্থাৎ মিটার রিচাৰ্জ করলে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যাবে। লক্ষ লক্ষ গ্ৰাহক থেকে অগ্ৰিম টাকা সংগ্রহ করে কোম্পানির মতো সরকার ব্যবসা করবে যা সম্পূৰ্ণ অনৈতিক। এই ব্যবস্থা দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষকে বিপদে ফেলবে। কারণ সময়মতো রিচাৰ্জের টাকা বহু দরিদ্র, নিম্নবিত্ত মানুষ দিতে পারবে না। অন্যদিকে এই ব্যবস্থায় একজন গ্ৰাহক কত ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করে কত টাকা বিল দিচ্ছে তারও কোনো হিসাব জানতে পারবে না। ফলে বন্টন কোম্পানির গ্ৰাহকদের লুন্ঠনের পথ প্ৰশস্ত হবে।
স্মারকপত্রে এও উল্লেখ করা হয় যে কোনো গ্ৰাহক সময়মতো রিচাৰ্জ না করলে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং পুনরায় রিচাৰ্জ করতে হলে পুনঃসংযোগ স্থাপনের জন্য রিচাৰ্জ থেকে টাকা কেটে নেওয়া হবে। কখনও মিটার খারাপ হলে তা মেরামতি বা নতুনকরে মিটার স্থাপনের পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে। প্ৰিপেইড মিটারের যেহেতু মিটার রিডার ও বিলিং ষ্টাফের প্ৰয়োজন থাকবে না তাই হাজার হাজার কর্মচারীর চাকুরি হারানোর আশংকাও রয়েছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয় যে প্ৰিপেইড মিটার সম্পূৰ্ণরূপে গ্ৰাহক স্বাৰ্থবিরোধী। তাই প্ৰিপেইড মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্ৰত্যাহার করতে হবে। স্মারকপত্র প্রদান কালে সেখানে উপস্থিত ছিলেন চাম্পালাল দাস, অঞ্জন কুমার চন্দ, হানিফ আহমেদ বড়ভূঁইয়া, হিল্লোল ভট্টাচার্য, ইউনিশ আলী চৌধুরী, খাদেজা বেগম লস্কর প্রমুখ। এছাড়াও আজ হাইলাকান্দি,কামরূপ মেট্ৰো, গোয়ালপাড়া, শালমারা, নলবাড়ী, ধুবুরী, তেজপুর, মঙ্গলদৈ, লক্ষ্মীমপুর ইত্যাদি স্থানে অনুরূপ কার্যসূচি পালিত হয়।