অনলাইন ডেস্ক : সারাদিনে মোট তিন দফা চেষ্টার পর রবিবার সোনাপুর সুড়ঙ্গের ধস আপাতত সরাতে সক্ষম হয়েছে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া। ফলে এদিন বিকেলের দিকে সাময়িকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে ৬নং জাতীয় সড়ক। তবে ঠিক কোন সময় যে ফের অঘটন ঘটবে, সেই আশংকায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাই রবিবারও সেই একই অনুরোধ জানিয়েছে পূর্ব জয়ন্তিয়া হিলস প্রশাসন। বলেছে, যথাসম্ভব এই রাস্তা এড়িয়ে চলা উচিত। অথবা জল বা অন্যান্য খাদ্যবস্তু সঙ্গে নিয়ে সেপথে পা বাড়াতে হবে।
গত ৯ দিন ধরে বেহাল শিলং রোড। ১০জুন, শনিবার মেঘালয়ের পূর্ব জয়ন্তিয়া হিলস জেলার সোনাপুরে জাতীয় সড়কের উপর নামে ধস। তবে সেদিনের ধস ছিল তূলনামূলক ছোট। কাদা, জলের মিশ্রণ ছিল শুধু। ফলে মাত্র কয়েকঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে ধস সরাতে সক্ষম হয়েছিল পূর্ত বিভাগ এবং ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া। সেই শুরু! এই এক সপ্তাহের বেশি সময়ে ঠিক কতবার যে ওই একই স্থানে ধস পড়েছে, তার কোনও হিসেব নেই। বস্তুত, প্রতিদিনই বার কয়েক ধস পড়ে বন্ধ থাকে শিলচর-গুয়াহাটি যান চলাচল। এই অঞ্চলে ধস নামা বরাকের মানুষের গা সোয়া ব্যাপার হয়ে যাওয়ায় কেউ তেমন মাথা ঘামাননি। কিন্তু গত তিনদিন সোনাপুরে যা ঘটলো, তা একেবারে তিতিবিরক্ত করে দিয়েছে। খবর মতে, শুক্রবার থেকে বিশালাকার ধস পড়ে সোনাপুর সুড়ঙ্গের মুখে। যা পরিস্কার করতে রীতিমতো হিমশিম খায় সেখানকার সরকার। কোনও দিন ঘন্টা দুয়েকের জন্যও খুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি জাতীয় সড়ক। ফলে কয়েক হাজার যানবাহন আটকা পড়ে সোনাপুর টানেলের এপারে-ওপারে। শনিবার থেকে তো দেখা দেয় খাদ্যাভাব। তাই বিষয়টি নিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় কনরাড সাংমা সরকার। ফলে এদিন বিকেল থেকে কাজে লাগানো হয় বেশি লোক। ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া-র অফিসাররাও নামেন কাজে। আনা হয় কাদা-মাটি সরানোর আধুনিক যন্ত্র। সেখানকার এক সিমেন্ট কারখানার বিশালাকার যন্ত্র (গাড়ি) এনে কাজ চলে প্রায় পুরো রাত। তাই ভোর হতেই প্রথম দফায় ছাড়া হয় ছোট বাহন। এতে গুয়াহাটি থেকে আসার পথে আটকে থাকা বহু শিশু, মহিলা নিস্তার পান। কিন্তু বেশি সময় স্থায়ী হয়নি সেই প্রক্রিয়া। সুত্র জানায়, সকাল ৮টার আগে আরেকবার নামে ধস। ফলে বন্ধ হয়ে যায় গাড়ি। তখন বৃষ্টিও খুব বেশি। কিছু সময় অপেক্ষার পর ফের সাফাইয়ের কাজে হাত দেয় সংশ্লিষ্টরা। ঘন্টা দুইয়ের লড়াইয়ের পর ফের যেতে দেওয়া হয় হাল্কা বাহন। এরপর আবার নামে ধস। এভাবে চলতে থাকা প্রকৃতি ও মানুষের অসম লড়াই। শেষমেশ বিকেল ২টা থেকে রাস্তা ওয়ান ওয়ে করে ছাড় দেওয়া হয় যানবাহন। তখিন থেকে অবশ্য ভারি বৃষ্টিও হয়নি। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত সচল রয়েছে সোনাপুরের জাতীয় সড়ক।
এদিকে, ওয়ান ওয়ে করে যান চলাচলে সবুজ সংকেত দিলেও আকাশের দিকে চেয়ে আছেন ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া-র হর্তাকর্তা সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। এক বার্তায় পূর্ব জয়ন্তিয়া হিলস পুলিশ জানায়, আপাতত রাস্তা খুলে দেওয়া হলেও তা সম্পুর্ন নির্ভর করছে বৃষ্টির উপর। বৃষ্টি নামলে ফের জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই পারতপক্ষে এই রুট ত্যাগ করে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে জনসাধারণকে অনুরোধ জানিয়েছে তারা। তবে যাদের কোনও বিকল্প নেই তারা সোনাপুর হয়ে যাওয়ার আগে জল, বিস্কুট বা হাল্কা খাবার সঙ্গে রাখতে অনুরোধ করেছে মেঘালয় পুলিশ।