অনলাইন ডেস্ক : সোমবার থেকে শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এরপর আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক। এসবের মাঝেই আগামীকাল বুধবার সরস্বতীপূজো। তাই এবার দেবী সরস্বতীকে ঘিরে পরীক্ষার্থীদের অনেকেই একটু বেশি ভক্তিশীল। তবে এর মাঝেই পরীক্ষাকে ঘিরে পুজো আয়োজনের ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন বিভিন্ন স্কুলের কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে, এমন অনেক স্কুলের কর্তৃপক্ষই পুজোর আয়োজনে অনেকটা কাটছাঁট করতে বাধ্য হয়েছেন।
মেয়েদের স্কুল বলে শিলচর ডিএনএনকে গার্লস হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে প্রতিবছর বাণীবন্দনাকে ঘিরে একটু বেশিই উৎসাহ দেখা যায়। তবে এবার ওই স্কুলে আয়োজন অনেকটাই সংক্ষিপ্ত। স্কুলে অনুষ্ঠিত হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। এর জন্য “সিট প্ল্যান”-থেকে ধরে আনুষাঙ্গিক সব ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করতে হবে আগেভাগেই। অন্যান্য বছরের মতো এবার আড়ম্বরে পুজো করতে গেলে বিঘ্নিত হতে পারে সেসব প্রক্রিয়া। তাই পূজো সেরে নেওয়া হচ্ছে অনেকটা সংক্ষিপ্তকারে । স্কুলের শিক্ষক পরিতোষ দে জানিয়েছেন, এবার পরিস্থিতির চাপে পুজোয় অন্যান্য ক্ষেত্রে কাটছাঁটের পাশাপাশি খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণ সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া হয়েছে।
তবে নরসিং হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষক কৃষ্ণেন্দু রায় জানান, তাদের স্কুলে কিছু অতিরিক্ত জায়গা থাকায় খিচুড়ি প্রসাদের ব্যবস্থা করাটা সম্পূর্ণ বর্জন করা হয়নি। যদিও সবকিছুই হবে তুলনামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত পরিসরে। অন্যান্য বছরের মতো এবার আর ঢালাও ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। নারসিং হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের মতোই মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক দুটি পরীক্ষারই কেন্দ্র রয়েছে সরকারি বালক বিদ্যালয়েও। তবে ওই স্কুলের অধ্যক্ষ পারভীন সুলতানা জানিয়েছেন কিছুটা অসুবিধা হলেও তারা পুজোকে ঘিরে আয়োজনে কোনও খামতি রাখতে চাইছেন না। কারণ বুধবার পুজোর পরদিন বৃহস্পতিবার উচ্চমাধ্যমিকের কোনও পরীক্ষা নেই, আর মাধ্যমিক শুরু হচ্ছে শুক্রবার। তাই একটু কষ্ট হলেও বুধবার পুজো সেরে বৃহস্পতিবার দিনটাতেই পরীক্ষাকে ঘিরে সব প্রস্তুতি সেরে নেবেন।
পালংঘাট সিসিজেসি হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলও মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক দুটো পরীক্ষারই কেন্দ্র। স্কুলের শিক্ষক পুলক দাস জানিয়েছেন তারা এবার পুজো আয়োজন করলেও সবকিছুই সেরে নেওয়া হবে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। অন্যান্য বছরের মত দিনভর পুজোকে ঘিরে মাতামাতি হবে না। কারণ মাধ্যমিকে পরীক্ষার “সিট প্ল্যান”-সহ অন্যান্য অনেক কাজ সেরে রাখতে হবে পূজোর দিন বুধবারের মধ্যেই। একই কথা জানিয়েছেন কাটিগড়া সিদ্ধেশ্বর হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ মিহির নাগও। তিনি জানান, ওই স্কুলের মূল ভবনে হচ্ছে পরীক্ষা। তাই বাধ্য হয়ে অনেকটাই সংক্ষিপ্তকারে পুজোপর্ব সারা হবে স্কুলের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া প্রাথমিক স্কুলের ভবনে।
আড়ম্বর ছেড়ে সংক্ষিপ্তকারে পূজো, এবার এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে পরীক্ষা কেন্দ্র থাকা জেলার বেশিরভাগ স্কুলেই। নরসিং হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের কৃষ্ণেন্দু রায় জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের এধরনের পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়নি। পরীক্ষা শুরু হয়েছে সরস্বতী পূজোর পর। এবার পরীক্ষার মধ্যেই পূজো পড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই বেশিরভাগ স্কুল কর্তৃপক্ষকে আয়োজনে লাগাম টানতে হচ্ছে অনেকটাই।