অনলাইন ডেস্ক : আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় বহুচর্চিত রাম মন্দিরের উদ্বোধন। এর জন্য প্রস্তুতি বর্তমানে তুঙ্গে। ওইদিনই মন্দিরে রামলালার মূর্তি স্থাপন করে “প্রাণ প্রতিষ্ঠা” করা হবে। এর জন্য তৈরি করা হয়েছে রামলালার চারটি মূর্তি । এই চারমূর্তির মধ্যে শেষ পর্যন্ত একটি মূর্তিকে মন্দিরে স্থাপনের জন্য চূড়ান্ত করা হবে।
রামমন্দিরের “রাম কথা কুঞ্জ”র জন্য মূর্তি তৈরি করছেন শিলচর ইটখোলা রামকৃষ্ণ পল্লীর বাসিন্দা শিল্পী রঞ্জিত মন্ডল। রাম মন্দিরকে ঘিরে যাবতীয় ব্যস্ততার মাঝেও রঞ্জিত তার বাবার বাৎসরিক শ্রাদ্ধ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার শিলচরে এসে পৌঁছেছেন। শুক্রবার নিজের বাড়িতে বসে তিনি জানান, ২২ জানুয়ারি মন্দির উদ্বোধন এবং রামলালার মূর্তির প্রতিষ্ঠা হলেও সম্পূর্ণ তিনতলা মন্দির তৈরি হতে লেগে যাবে আরও কয়েক বছর। বর্তমানে একতলার কাজ শেষ হয়ে গেছে, চলছে দ্বিতলের কাজ। নিচেরতলায় মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে মন্দির উদ্বোধন করা হবে ২২ জানুয়ারি।
রামলালার মূর্তি প্রসঙ্গে তিনি জানান, এ নিয়ে রাম মন্দির ট্রাস্ট সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা কেউ যাতে কোনও প্রশ্ন তোলার অবকাশ না পান, সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছেন। কর্নাটকের দুজন এবং রাজস্থানের দুজন মিলিয়ে দেশের প্রথম সারির চারজন শিল্পী পৃথক পৃথকভাবে গড়ে তুলেছেন রামলালার চার মূর্তি। শেষ পর্যন্ত সবদিক বিচার বিবেচনা করে এই চারমূর্তির মধ্যে যে মূর্তি সেরা বলে মনে হবে সেই মূর্তিই স্থাপন করা হবে মন্দিরে।
মন্দিরকে ঘিরে নিজের কর্মকাণ্ড নিয়ে রঞ্জিত জানান, মূল মন্দির গড়ায় তার কোনও ভূমিকা নেই। মন্দিরের সামনেই গড়ে তোলা হবে “রাম কথা কুঞ্জ”। এই “রাম কথা কুঞ্জ”-য় পুত্র লাভে রাজা দশরথের যজ্ঞ থেকে ধরে রাম- রাবণের যুদ্ধ শেষে রামের রাজঅভিষেক পর্যন্ত অধ্যায় এক হাজার মূর্তির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে। এসব মূর্তি তৈরি করছেন তিনি। রামকথা কুঞ্জের সব মূর্তি তৈরিরই দায়িত্ব বর্তেছে তার উপর। বেশ কিছু শ্রমিককে সঙ্গে নিয়ে তিনি এসব মূর্তি তৈরি করছেন। ইতিমধ্যে হনুমানের লঙ্কাকাণ্ড পর্যন্ত অধ্যায়ের মূর্তি তৈরি হয়ে গেছে। এই অধ্যায় পর্যন্ত ফুটিয়ে তোলার জন্য তৈরি করা হয়েছে প্রায় সাতশত মূর্তি। বাকি প্রায় তিনশত মূর্তি তৈরির কাজ। রামকথা কুঞ্জের মূল কাঠামো তৈরির পর এতে সংস্থাপন করা হবে এসব মূর্তি। তার অনুমান রাম কথা কুঞ্জ পূর্ণাঙ্গ রূপ পেতে লেগে যাবে আরও ২-৩ বছর।
রাম মন্দির তৈরীর ক্ষেত্রে এভাবে তার জড়িত হতে পারাটা পূর্বজন্মের কোনও পুণ্যের ফসল বলে উল্লেখ করে তিনি জানান, বর্তমানে মন্দির উদ্বোধনের আগে সংশ্লিষ্ট সবারই ব্যস্ততার শেষ নেই। বাবার শ্রাদ্ধের জন্য তিনি শিলচরে এলেও, শীঘ্রই ফিরে যাবেন অযোধ্যায়।
রাম মন্দিরকে ঘিরে হিন্দি বলয়ে উৎসাহের কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, শিলচরে বসে তা অনুধাবন করা সম্ভব নয়। হিন্দি বলয়ের লোকেদের সঙ্গে কথা বললেই বুঝা যায়, রামলালা দর্শণের জন্য তাদের যেন আর তর সইছে না।