অনলাইন ডেস্ক : সোমবার রাতে পশ্চিম গারোপাহাড় জেলা সদর তুরায় মিনি সচিবালয় তথা মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে হামলার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে এ পর্যন্ত দুই মহিলা সহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
যে ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা যথাক্রমে পশ্চিম গারোপাহাড় জেলার ডালু জারংপাড়ার জনৈক লিউইন সাংমার ছেলে বার্থো সি সাংমা (১৯), দক্ষিণ গারোপাহাড় জেলার ডপিল সঙ্গিত্তালের জনৈক মিকেক মারাকের ছেলে ব্রেগরিমসেং এস মারাক (১৯), দক্ষিণ গারোপাহাড় জেলার গঙ্গা অ্যাওয়ের সিজু গ্রামের গার্নেট এ সাংমার ছেলে পাংচু আর সাংমা (১৮), পশ্চিম গারোপাহাড় জেলার টিকরিকিল্লার মাচোকগ্রে গ্রামের ক্রিন্দিয়ার্থ সি সাংমার ছেলে কিমকিম কে সাংমা (৩২), দক্ষিণ-পশ্চিম গারোপাহাড়ের আমপাতি এলাকার মোরেঙ্গাপাড়ার কার্বি এম সাংমার ছেলে লাস্টবার্থ এম মারাক (২৩), দক্ষিণ গারোপাহাড়ের বাঘমারা আরসি কম্পাউন্ড এলাকার প্রয়াত সোলরেন এন সাংমার ছেলে সাংরা আর মারাক (৩২), দক্ষিণ-পশ্চিম গারোপাহাড়ের আমপাতি এলাকার সোনামিতের ক্লোনিশ সি মারাকের ছেলে গ্রেটস্টার এন মারাক (২৭), পশ্চিম গারোপাহাড়ের আড়াইমাইল এলাকার রিংগি সঙ্গিত্তালের জনৈক সোনেন্দ্র জি মমিনের ছেলে সালসেং সি মমিন (২৮),পশ্চিম গারোপাহাড়ের ডালু এলাকার পুরাখসিয়ার প্রয়াত ডালিম ডি শিরার ছেলে ব্রেন্ডিপ আর মারাক, পশ্চিম গারোপাহাড়ের আড়াইমাইল এলাকার ডাকোপগ্রের জনৈর সালমান কে সাংমার ছেলে আকারনিক এম সাংমা (২১), তুরা ডাকোপগ্রের আইটিআই কোয়ার্টারের নেডিবির্থ এ সাংমার ছেলে খুশবন্ত এম সাংমা (৩৩), দক্ষিণ গারোপাহাড়ের সিজু এলাকার সেংচেং আর মারাকের ছেলে তেংচাং ডি সাংমা, দক্ষিণ-পশ্চিম গারোপাহাড়ের মহেন্দ্রগঞ্জের চাপাহাটি এলাকার প্রয়াত ইনেং মারাকের ছেলে তেংমা সি মারাক, দক্ষিণ গারোপাহাড়ের বাঘমারার ডোপাগ্রাম এলাকার প্রয়াত বোরহান ডি মারাকের ছেলে জাসেং সি মারাক, দক্ষিণ গারোপাহাড়ের সিজু এলাকার গার্নেট এ সাংমার ছেলে গামচু আর সাংমা (২০), দক্ষিণ-পশ্চিম গারোপাহাড়ের ডামালগ্রে অঞ্চলের হাটমারি গ্রামের জনেক স্টার্লিং এ মারাকের ছেলে কেবিন সি মারাক (২৮), পশ্চিম গারোপাহাড়ের দোবাসিপাড়ার জনৈক লিকসন কে সাংমার মেয়ে বেলিনা এম মারাক (৩২) এবং পশ্চিম গারোপাহাড়ের তুরা আকংগ্রের কালিজান আর মারাকের মেয়ে দিলশে সি মারাক (৪০)।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গতকাল সোমবার রাতে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা তুরায় তাঁর সচিবালয়ে আত্মসমর্পণকারী গারো জঙ্গি সংগঠন ‘আচিক কনশিয়াস হোলিস্টিকলি ইন্টিগ্রেটেড ক্রিমা’ (এসিএইচআইকে বা আচিক) এবং ‘গারো হিলস স্টেট মুভমেন্ট কমিটি’ (জিএইচএসএমসি)-র নেতাদের সঙ্গে ‘প্রত্যাবর্তনমূলক’ রিজার্ভেশন রোস্টার বাস্তবায়ন সম্পর্কে বৈঠকে বসেছিলেন। তখন মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় প্রাঙ্গণে জড়ো হয়েছিলেন বহু মানুষ। ভিতরে যখন বৈঠক চলছে, তখন আচমকা মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে অবিরত ইট-পাথরের ঢিল ছোঁড়া শুরু হয়। পুলিশ উন্মত্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। বিশৃঙ্খলায় পাঁচ পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজন মহিলা পুলিশ আধিকারিকও আছেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা চিকিৎসা ভাতা ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সশরীরে গিয়ে আহত পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীদের খোঁজখবর নিয়ে চিকিৎসায় যাতে তাঁদের কোনও খামতি না হয়, সেজন্য ডাক্তারদের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে উত্তাল পরিস্থিতির পর মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা জানান, তাঁদের দাবি-দাওয়া ইত্যাদির সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সমাধান করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ঐকমত্যে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা যখন চলছে, তখন কতিপয় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি সহিংসতা অবলম্বন করে। তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। রাজ্য পুলিশের জনৈক শীর্ষ আধিকারিক জানান, প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে গারো উগ্রপন্থীদের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। তবে পুলিশের কাছে গোটা ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিং থাকায় আক্রমণকারীদের শনাক্ত করতে সহজ হয়েছে। তিনি জানান, ধৃত ১৮ জনের সবাই কেউ বিজেপি, আবার কেউ কেউ তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী। আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, জানিয়েছেন শীর্ষ পুলিশ অফিসার।