অনলাইন ডেস্ক : অসম পুলিশে আক্ষরিক অর্থেই শুরু হয়ে গেল জোয়ানদের ভুঁড়ি পরীক্ষা। রাজ্য পুলিশপ্রধান জ্ঞানেন্দ্ৰপ্ৰতাপ সিংহের ভুঁড়ি পরীক্ষা দিয়েই বুধবার এই কাজ শুরু হয়। কেননা, তাঁর ভুঁড়ি মেপেই ডিজিটাইজড বিএমআই ( বডি মাস ইনডেক্স ) নামে এই প্রক্রিয়া যাত্রা শুরু করে। গুয়াহাটির কাহিলিপাড়ায় চতুৰ্থ আসাম ব্যাটালিয়ন ছাউনি চত্বরে ডিজিপি জিপি সিং নিজে বিএমআই টেস্ট করিয়ে এই প্ৰক্ৰিয়ার সূচনা করেন। পরীক্ষায় ডিজিপি-র বিএমআই রিপোর্ট এসেছে ২৫। ডিজিপি সিংহের ওজন ৭৫ কিলোগ্ৰাম এবং উচ্চতা ১৭২.৮ সেন্টিমিটার। সে অনুযায়ী তিনি সম্পূৰ্ণ ফিট বলে বিএমআই টেস্টের রেজাল্ট এসেছে। উল্লেখ্য, বিএমআই টেস্টে এক ব্যক্তির ওজন কিলোগ্ৰাম এবং বৰ্গ সেন্টিমিটারে উচ্চতা বিভক্ত করলে যে ফলাফল আসবে, সেটা তাঁর বয়স অনুযায়ী সঠিক কি না-তা দেখা হয়। ডিজিপির পর একেক জন করে পুলিশের শীৰ্ষ থেকে উপস্থিত অন্য পদ মর্যাদার আধিকারিক, কনস্টেবল ও জওয়ানদের বিএমআই টেস্ট হয়েছে। পুলিশ-প্রধান জিপি সিং রাজ্যের সব পুলিশকর্মীকে মেদ কমাতে দৈনিক ৬ থেকে ৭ কিমি হাঁটার পরামর্শ দিয়েছেন। সঙ্গে কম তেল, কম চিনি, কম নুন-সম্পন্ন খাদ্য খাবার নিদান দিয়েছেন ডিজিপি। এছাড়া ডিউটিতে আসার সময় সঙ্গে ঘরোয়া টিফিন নিয়ে আসার পরামৰ্শ দিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের উদ্দেশ্যে বলেছেন, যত সম্ভব সিঙাড়া, মিষ্টি ইদ্যাদি খাওয়ার অভ্যাস কমানো উচিত।ডিজিপি জানান, আজ থেকে যে বিএমআই টেস্ট প্ৰক্ৰিয়া জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে, তা চলবে চারদিন। যে সকল পুলিশ কর্মী এই চারদিনের বিএমআই টেস্টে ফেল করবেন, মেদ কমাতে তাঁদের আরও তিন মাস সময় দেওয়া হবে। তিন মাস পর তাঁদের আবার বিএমআই টেস্ট করাতে হবে। তখনও যদি ফেল করেন তা-হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মীদের স্বেচ্ছামূলক অবসরে পঠানো হবে, জানিয়েছেন জ্ঞানেন্দ্ৰপ্ৰতাপ সিং। এ প্রসঙ্গে ডিজি সিং বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নির্দেশে রাজ্য পুলিশকে আরও স্বাস্থ্যবান ও ফিটনেস করে গড়ে তোলার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে এই বিএমাই।‘ এই পরীক্ষায় ডিজিপি সহ ২৫ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। ‘গত ১৬ মে আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে, তিনমাস পর কর্মরত সব পুলিশকর্মীর বিএমাই শুরু করবো।‘ জানান তিনি। বলেন, এরই অঙ্গ হিসেবে ৬৭,০০০ পুলিশকর্মীর স্বাস্থ্যের নানা তথ্য সংগ্রহ করেছি। রাজ্যের ৩৬টি স্থানে তাদের স্বাস্থ্য ও ভুড়ির মাপজোক নেওয়ার কাজ সম্পন্ন হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে মেদবহুল পুলিশকর্মী অর্থাৎ ৩০ বিএমআই-র ওপরে যারা পড়বেন, তাদের দেড়্গাঁও পুলিশ ট্রেনিং কলেজে এসে সরকারি চিকিৎসক,পুষ্টিবিদদের পরামর্শে প্রয়োজনে তিনমাসের জন্য থেকে ৩০ বিএমআই-র নীচে নামা অবধি থাকতে হবে। ডিজি জিপি সিং আরও জানান, ‘এক বছরের মধ্যে ২৮ বিএমআই এবং জোয়ানদের ব্লাড সুগার ও ব্লাড প্রেশারের ডাটাবেস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছি আমরা।‘ পুরো ডাটাবেস হাতে আসার পর জওয়ানদের প্রয়োজনীয় ডাক্তারি সহায়তা দেওয়া হবে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই এ কাজে সম্ভাব্য সব সহযোগিতায় রাজি হয়েছে বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, বরিষ্ঠ পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে পুলিশ বাহিনী থেকে ‘ডেড উড’-দের ছাঁটাই ছাড়াও, যারা মদ্যপায়ী, ব্যাপক মেদবহুল এবং যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হবে হবে বলে কড়া ভাষায় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়ে দিয়েছেন।