অনলাইন ডেস্ক : অসমে ফুলের বাজার বাড়াতে ‘স্টেট ফ্লোরিকালচার মিশন’ স্থাপন, থানাগুলির উন্নয়ন, নতুন রাজভবন নিৰ্মাণ, জেলাশাসকের কাৰ্যালয়ে কৰ্মরত কৰ্মচারীদের পদবীর নয়া নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য ক্যাবিনেট।
সোমবার ডিব্ৰুগড়ে জেলাশাসকের সভাগৃহে আয়োজিত আসাম ক্যাবিনেট বৈঠকের পর আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে বৈঠক গৃহীত সিদ্ধান্তগুলির তথ্য দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, আজ অসম মন্ত্ৰিসভার বৈঠকে গৃহীত রাজ্য পুষ্প কৃষি অভিযান, থানার উন্নয়ন, নতুন রাজভবন নিৰ্মাণ, জেলাশাসকের কাৰ্যালয়ের পদবীর নয়া নামকরণ, পাণ্ডু জলবন্দরকে জাতীয় সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করা সহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত রাজ্যের সামগ্ৰিক উন্নয়নে গুরুত্বপূৰ্ণ ভূমিকা গ্ৰহণ করবে বলে আশাবাদী তিনি।
তিনি বলেন, ধান, মাছের পর এবার অসমে ফুলের বজার বাড়ানোর প্রচেষ্টা করবে রাজ্য। বলেন, রাজ্যে একটি বিশাল ফুলের বাজার রয়েছে, তবে অর্কিড থেকে শুরু করে অন্যান্য জাতের ফুল পশ্চিমবঙ্গ, এমন-কি থাইল্যান্ড থেকে সংগ্রহ করা হয়। তাই রাজ্যের প্ৰায় ২০ হাজার কৃষককে ‘স্টেট ফ্লোরিকালচার মিশন’-এর সঙ্গে জড়িত করে ফুলের বাজার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বছরের শুরুতে গত ১ জানুয়ারি পূৰ্ব-অসমের গোলাঘাট জেলান্তর্গত গ্রামীণ খুমটাইয়ে একটি বিশেষ কার্নিভালে বোগেনভিলা, গোলাপ, রজনীগন্ধা এবং আরও অনেক প্রজাতির ফুলের প্রদর্শন করা হয়েছে। জুগিবাড়ি গ্রামীণ পর্যটন কেন্দ্রে দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ‘ফ্লাওয়ার কার্নিভাল’-এ ১০ হাজারের বেশি দর্শনার্থী এসেছিলেন, বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
ড. শর্মা বলেন, প্রস্তাবিত কর্মসংস্থানের সঙ্গে রূপায়িত করা হবে রাজ্য পুষ্প কৃষি অভিমান। তিন বছরের মধ্যে ২,২০০ থেকে ৩,২৮৮ হেক্টরকে নিয়ে এর জন্য এলাকার সম্প্রসারণ করা হবে। গ্রীষ্ম এবং শীতকালীন মোরিগোল্ড, গ্লেডিওলাস, টিউব রোজ ক্রিসেন্থিয়ামের। সুরক্ষিত পরিবেশে জার্বেরা, অর্কিড, গ্রীন ফলিয়েজ, ডাসরোজ এবং অ্যান্থুরিয়াম ফুলের চাষ হবে। এছাড়া ধূপ তৈরি প্রতিষ্ঠান, অত্যাবশ্যক ও সুগন্ধি তেল উৎপাদন গোষ্ঠী গঠন করবে সরকার। পাইকারি বাজারের সুবিধা এবং ফুলের খুচরা বিপণিগুলির বিকাশ ঘটানো হবে। প্রথমাস্থায় রাজ্য সরকার এর জন্য ১৫০ কোটি টাকা খরচ করবে। বলেন, ধান, মাছের পর ফুলের বাজার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি অৰ্থনীতির বিকাশ ঘটিয়ে অসমকে আত্মনিৰ্ভরশীল হিসেবে গড়া হবে।
‘মিশন ফর অভারঅল ইমপ্রোভমেন্ট অব থানা ফর রেসপনসিভ ইমেজ’ সংক্ষেপে ‘মৈত্রী’ প্রকল্প সম্পর্কে গৃহীত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মৈত্রী প্রকল্পের বলে মৈত্রী সোসাইটিকে ৩০০ কোটি টাকার অর্থ আবণ্টন এবং অনুমোদন দেওয়া হবে। রাজ্যের প্ৰত্যেকটি থানার পরিকাঠামো উন্নয়ন, ইন্টারনেট সংযোগ এবং সাইবার ক্রাইম শনাক্ত করতে মৌলিক সরঞ্জামের বিকাশ ঘটানো হবে। ড্ৰাগস এবং সাইবার ক্রাইম ইত্যাদির মতো অপরাধের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি কিশোর অপরাধী ও লিঙ্গ-জনিত হিংসার ক্ষেত্ৰে পরামৰ্শদান প্ৰক্ৰিয়া প্রচলনের সিদ্ধান্ত আজ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া দিব্যাঙ্গদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হবে।
এছাড়া তিনি জানান, তেজপুরে নিৰ্মাণ করা হবে একটি নতুন রাজভবন। সারা অসম জেলা প্রশাসন কর্মচারী সংস্থার দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে জেলাশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত কয়েকটি পদবীর নয়া নামাকরণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী কনিষ্ঠ সহায়ক এখন থেকে কনিষ্ঠ জেলা প্রশাসনিক সহায়ক, জ্যেষ্ঠ সহায়ককে জ্যেষ্ঠ জেলা প্রশাসনিক সহায়ক, মুখ্য সহায়ককে জেলা প্রশাসনিক মুখ্য সহায়ক পর্যবেক্ষক সহায়ককে জেলা পর্যবেক্ষক মুখ্য সহায়কের পদবীর নয়া নামাকরণ করা হয়েছে।
পাণ্ডু বন্দরকে জাতীয় সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, ডিপোজিট প্রকল্পের অধীনে ১৫৩.০৪ কোটি টাকার চুক্তি মূল্যে ২৭ নম্বর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আইডব্লিউএআই-এর পাণ্ডু টার্মিনাল পর্যন্ত পথ নির্মাণ হবে। এই পথ বন্দরে বর্ধিত বাণিজ্যিক কাজকর্মে যানজট থেকে স্বস্তি প্রদান করবে। আশা ব্যক্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজকের মন্ত্রিসভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলি রাজ্যের সামগ্ৰিক উন্নয়নে গুরুত্বপূৰ্ণ ভূমিকা গ্ৰহণ করবে বলে মনে করেন তিনি।