অনলাইন ডেস্ক : জাল এফিডেভিট কাণ্ডে এবার শিলচর জেলা বার সংস্থা থেকে বহিষ্কার করা হলো এক আইনজীবীকে। জেনিস সুলতানা বড়লস্কর নামে এই মহিলা আইনজীবীকে আগেই বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল বার সংস্থার ডিসিপ্লিনারি কমিটি। এরপর মঙ্গলবার সংস্থার জেনারেল কাউন্সিল এই সুপারিশে অনুমোদন জানায়। প্রসঙ্গত শিলচর জেলা বার সংস্থার ইতিহাসে জেনিস সুলতানাই প্রথম মহিলা আইনজীবী যাকে অভিযোগের ভিত্তিতে বহিষ্কার করা হলো সংস্থা থেকে।
বহিস্কার নিয়ে বার সংস্থার সভাপতি নীলাদ্রি রায়কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আইনজীবী হিসাবে জেনিস নৈতিকতার সব মাপদণ্ড পার করে ফেলেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। জানা গেছে, এদিন জেনারেল কাউন্সিলের সভায় ডিসিপ্লিনারি কমিটির রিপোর্টের কথা তুলে ধরে উপস্থিত সদস্যদের মতামত জানতে চাওয়া হয়।
তখন বক্তব্য রাখেন দেবাশীষ সোম, মহবুব আলম মজুমদার, ইমাদ উদ্দিন বুলবুল ও রেজামন্দ আলি বড়ভূইয়ারা । বক্তাদের কেউ কেউ তুলনামূলকভাবে নরম সাজা দেওয়ার পক্ষে মত ব্যাক্ত করলেও বিশেষত ইমাদ উদ্দিন বুলবুল চড়া সুরে বহিষ্কারের পক্ষে মত ব্যক্ত করেন। তিনি ডিসিপ্লিনারি কমিটির রিপোর্টকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উদাহরণ হিসেবে বিগত দিনে সাহাবদ্দিন বড়ভূঁইয়া এবং কিরনেন্দু দত্ত চৌধুরীর মত বরিষ্ঠ আইনজীবীদের বহিস্কারের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। সবশেষে আলোচনাক্রমে জেনিসকে বহিষ্কারেরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।
প্রসঙ্গত বিগতদিনে এজেলায় কর্মরত এক এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে বেশ কিছু এফিডেভিট করার অভিযোগ রয়েছে জেনিসের বিরুদ্ধে। এসব এফিডেভিটের বেশিরভাগই ব্যবহৃত হয়েছে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে। ওই এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটও একজন মহিলা।
খবরের সূত্র অনুযায়ী, বার সংস্থার অভ্যন্তরীণ তদন্তে জেনিসের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০টি এফিডেভিট-এর ক্ষেত্রে জালিয়াতি ধরা পড়েছে। সূত্রটি জানান, প্রাথমিকভাবে কয়েকটি জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ার পর তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। তবে এরপরও তিনি এই কারবার চালিয়ে যান । যার দরুন তার বিরুদ্ধে এবার এমন কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হলো।
এদিকে অন্য এক বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, ব্যাপারটা ইতিমধ্যে খোলসা হয়ে যাওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে বার সংস্থার সঙ্গে। এই অবস্থায় জালিয়াতি নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে এজাহার দায়ের করার সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্রটি জানান, গোটা জালিয়াতি কান্ডে আরও কিছু লোকের জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে যথাযথ তদন্ত হলে বেরিয়ে আসতে পারে অনেক কিছুই।