অনলাইন ডেস্ক : হিংসার আগুনে টগবগ ফুটছে পাহাড়ি রাজ্য মণিপুর (Manipur)। সরকারের শান্তি প্রক্রিয়ার প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করেই কুকি ও মৈতেই মণিপুরীদের মধ্যে জাতিদাঙ্গা চলছে। বুধবার থেকে রাজধানী ইম্ফলের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চল, বিষ্ণুপুর জেলায় ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। গুলিতে প্রাণ গিয়েছে এক যুবকের। আহত হয়েছেন দু’জন। বিষ্ণুপুর জেলায় উত্তেজিত জনতা রাজ্যের পূর্ত মন্ত্রী কে গোবিন্দদাসের বাড়িতে ভাঙচুর এবং লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ফের সংঘর্ষ বাধায় নতুন করে সেনা এবং আধা সামরিক বাহিনীকে তলব করা হয়েছে। জারি হয়েছে কার্ফু।
অন্যদিকে বিভিন্ন ঘোষ্ঠীর সঙ্গে দফায় দফায় শান্তি বৈঠকে বসছেন সেনাকর্তা এবং রাজ্য প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। মণিপুরে কুকি-মৈতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে ২১ দিন ধরে চলা হিংসাত্মক সংঘর্ষের মধ্যে সে রাজ্যে তিন দিনের সফরে পৌঁছেছেন সেনাকর্তা লেফ্টেন্যন্ট জেনারেল আরপি কালিতা। প্রথম থেকেই রাজ্যে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে সেনা। সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকার গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে শান্তি বৈঠক করেছেন সেনাকর্তারা। একই চেষ্টায় রাজ্য সরকার। বার্তা দেওয়া হচ্ছে, হিংসা কোনও পথ নয়। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ, সেনাকর্তা এবং রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আমলারা দফায় দফায় বৈঠক করছেন। তবু শান্তি ফিরছে না।
গত ৩ মে থেকেই মণিপুরে সংখ্যাগুরু মৈতেই জনজাতির সঙ্গে রক্তাক্ত সংঘাত চলছে কুকি-ঝোমি ও অন্য আদিবাসীদের। এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৭১ জন। আহত হয়েছেন ৩০০ জনের বেশি। ১,৭০০ বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পোড়ানো হয়েছে ২০০টি যানবাহন। মণিপুরে জনগোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই নতুন নয়। কয়েকশো বছর ধরে তা চলছে। তবে এবার তা ভিন্ন মাত্রা ধারণ করেছে। বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, মণিপুরে সংখ্যাগুরু মৈতেইরা তফসিলি উপজাতির তকমা দাবি করে বারুদের স্তূপে আগুন দিয়েছে। গত এপ্রিল মাসে রাজ্য সরকারকে মৈতেইদের দাবি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এর ফলে কুকি-ঝাোমি ও টাংখুল নাগাদের মতো রাজ্যের সংখ্যালঘু আদিবাসীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছে। শুরু হয়েছে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ।