অনলাইন ডেস্ক : নাবালিককে ফুসলিয়ে জঙ্গলে নিয়ে হত্যার পর লুকিয়ে ফেলা হয়েছিল মৃতদেহ। এই ঘটনায় কাছাড়ের জেলা ও দায়রা জজ বিপ্রজিত রায়ের আদালত যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শুনালো প্রৌঢকে। সাজাপ্রাপ্ত ইসলাম উদ্দিন লস্কর (৬০) জয়পুর থানা এলাকার ছত্রদয়াল প্রথম খন্ডের বাসিন্দা।
সুফিয়া বেগম (পরিবর্তিত নাম) নামে বছর ১৫র নাবালিকার পরিবার জয়পুর থানা এলাকারই অন্য এক স্থানের বাসিন্দা। ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর সোফিয়া,তার মা ও পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে জয়পুর এলাকারই ধরমপুরে তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিল। রাতে হঠাৎ সোফিয়া ওই বিয়ে বাড়ি থেকে নাপাত্তা হয়ে যায় । এ নিয়ে তার মা জয়পুর থানায় এক মিসিং রিপোর্ট করেন। এর ভিত্তিতে খোঁজখবর করে পুলিশ জানতে পারে ৬ নভেম্বর রাত ৭টা নাগাদ কিছু জিনিসপত্র কিনে দেবার লোভ দেখিয়ে ইসলাম উদ্দিন সোফিয়াকে বিয়ে বাড়ি থেকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। এরপর ৮ নভেম্বর গ্রেফতার করা হয় ইসলাম উদ্দিনকে। গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে সোফিয়াকে বিয়ে বাড়ি থেকে ফুসলিয়ে ইসলাম উদ্দিন কাছেই এক জঙ্গলের ভেতর নিয়ে যায়। সেখানে তাকে হত্যা করে ঘটনার কথা যাতে প্রকাশ না পায় এর জন্য মৃতদেহ লুকিয়ে রেখে চলে আসে।
ইসলাম উদ্দিনের কাছ থেকে এই তথ্য পেয়ে পুলিশ তাকে সঙ্গে নিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ ইসলাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে সোফিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ এনে চার্জশিট পেশ করে। পুলিশের চার্জশিটে ইসলাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (৩)/৩০২/২০১ ধারা সহ পক্সো আইনের
৪,৮ ও ১০ নম্বর ধারায় অভিযোগ আনা হয়। তবে এসবের মাঝে সোফিয়ার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যে তথ্য বেরিয়ে আসে সে অনুযায়ী, তাকে ভোঁতা কোনও সামগ্রী দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হলেও তার শরীরে ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি। এই অবস্থায় আদালতে ধর্ষণ সম্পর্কিত ধারা গুলো বাদ দিয়ে ইসলাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (হত্যা) এবং ২০১ (অপরাধের প্রমাণ লুকিয়ে রাখা বা নষ্ট করা) ধারায় শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। বিচার প্রক্রিয়া শেষে বুধবার আদালত রায় ঘোষণা করে। এতে ইসলাম উদ্দিনকে দোষী সাব্যস্ত করে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শুনানোর সঙ্গে সঙ্গে জরিমানা করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা। জরিমানা অনাদায়ে তাকে ভোগ করতে হবে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড। এছাড়া ২০১ ধারায় ৭ বছর সশ্রম কারাবাসের সাজা শুনিয়ে সঙ্গে জরিমানা করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে জরিমানা অনাদায়ে তাকে ভোগ করতে হবে আরও ১ মাসের কারাদণ্ড। দুটি সাজা চলবে একই সঙ্গে।