অনলাইন ডেস্ক : ২০১৩ সালের আসাম পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সরকারের উচ্চ পদে চাকরি পাওয়া ২১জন আধিকারিকদের বরখাস্ত করলেন রাজ্যপাল গোলাব চাঁদ কাটারিয়া। এপিএসসি ‘ক্যাশ-ফর-জব’ কেলেঙ্কারি নিয়ে একটি উচ্চস্তরীয় তদন্তের পর ৩৪ জন সরকারি আধিকারিক এবং পুলিশের বিরুদ্ধে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল। এর উপর ভিত্তি করে ইতিমধ্যে দুজন পুলিশ আধিকারিকদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
এবার রাজ্যপাল নিজেই পরপর ১১ জন পুলিশ আধিকারিক এবং ১০ জন সরকারি আধিকারিকদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন কাছার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম), কল্যাণ কুমার দাস এবং হাইলাকান্দির পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপঙ্কর দত্ত।২০১৩ সালে এপিসসির অধীনে আয়োজিত সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বেশ কিছু অনিয়ম চোখে পড়ে এবং অভিযোগ ওঠে যারা চাকরি পেয়েছে তারা পরীক্ষায় যে নম্বর পেয়েছিল তার থেকে অনেক বেশি নম্বর দেখিয়ে চাকরিতে নিযুক্তি দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে তাদের নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা নেওয়া হয়েছিল।
রাজ্যপাল ৩০ নভেম্বর ২১ জন আধিকারিকের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, গৌহাটি হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারক বিকে শর্মার নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে সেখানে বলা হয়েছে এসব আধিকারিকরা টাকার বিনিময়ে অতিরিক্ত মার্ক পেয়েছিলেন এবং সেটা দেখিয়ে তাদের চাকরি হয়। রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘অবৈধ প্রক্রিয়ায় যে চাকরি হয়েছে সেটাকে সিভিল সার্ভিস হিসেবে আখ্যা দেওয়া যাবে না। এই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পুলিশ ইতিমধ্যে মামলা গ্রহণ করেছে এবং বিভাগীয় তদন্ত চলছে। রাজ্য সরকারের স্বচ্ছতা এবং জনগণের বিশ্বাসকে মাথায় রেখে মাথায় রেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছি এই ২১ জন আধিকারিককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে।’
যে ১১ জন এসিএস আধিকারিকদের বরখাস্ত করা হয়েছে তারা হলেন, কল্যাণ কুমার দাস (কাছাড় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ক্রাইম) দীপঙ্কর দত্ত (হাইলাকান্দির এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার), মিতুমনি দাস (বঙ্গাইগাও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার), রুমি টিমুঙপি (আসাম পুলিশ হেডকোয়ার্টারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার), ফারুক আহমেদ (দক্ষিণ শালমারা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার), কুলপ্রদীপ হাজারিকা (ভিজিলেন্স অ্যান্টি করাপশন বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার), নীলাঞ্জন গগৈ (কাহিলী পাড়ার বর্ডার বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার), নন্দিনী কাকতি (গুয়াহাটির অতিরিক্ত ডিসিপি), অনল জ্যোতি দাস (ডিমা হাসাও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার), শাহজাহান সরকার (যোরহাট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ক্রাইম) এবং ঐশ্বর্য জীবন বড়ুয়া (উদালগুড়ি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার)। অন্যান্য সরকারি আধিকারিক যারা বরখাস্ত হয়েছেন, এরা হলেন, আকাশী দেওরা (জোরহাটের জেলাশাসক), ধ্রবজ্যোতি হাঁটিবড়ুয়া, হীতেশ মজুমদার, ধিরজ কুমার জৈন, সৌরভ প্রাণ শর্মা, গীতার্থ বড়ুয়া, বিচিত্র গোপাল নাথ, রাকেশ দাস, বিকাশ শর্মা এবং চন্দ্র ধর ডেকা। রাজ্যপাল বৃহস্পতিবার এদের বরখাস্ত করার নোটিশ দিয়েছিলেন তবে সেটা শুক্রবার তাদের হাতে পৌঁছায়। নোটিশ পাওয়ার পর প্রত্যেক আধিকারিক গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন এবং সেখানে তারা অসম পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (এসআইটি)-র মুখোমুখি হবেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় ইতিমধ্যে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে এবং আগামীতে আরও কয়েকজন আধিকারিক গ্রেফতার হতে পারেন বলে জানা গেছে।