অনলাইন ডেস্ক : কোলেস্টেরল সমস্যায় জর্জরিত নন, এমন মানুষ আজকের দিনে বিরল। বিশেষ করে শহর ও নগরের ব্যস্ত জীবন যাত্রায় মানুষ যত বেশি বাইরের খাবারে অভ্যস্ত হচ্ছে, কোলেস্টেরলের মত উপাদান রক্তে তত বেশি আধিপত্য বিস্তার করছে। চিকিৎসকদের মতে, এর থেকে সোরিয়াসিসের মত চর্মরোগের এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। তাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রথম থেকেই কিছু নিয়ম মেনে চলুন। আজকের পাতায় রইল এমন কিছু খাবারের সন্ধান, যা আপনার খারাপ কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
১) সবুজ শাকসব্জি বেশি করে খান। বেগুন, ঢেঁড়স, টমেটো, পেঁয়াজ, রসুন, ব্রকলি ইত্যাদিতে যে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে, তা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
২) ফল প্রতিদিন নিয়ম করে খেতে হবে। নাশপাতি, আপেল, আঙুর, কমলালেবু এবং ডালিম রক্তে কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩) নানা ধরণের বাদামও কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক। আখরোট, কাঠ বাদাম, কাজু বাদাম, আমন্ড ও পেস্তা—এগুলো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রতিদিন ৩/৪ টে করে খাওয়া যেতে পারে।
৪) রাজমা, ছোলা (চানা), ও মটরশুঁটি জাতীয় দানাশস্য খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
৫) ওটস্ কোলেস্টেরল কম রাখতে সহায়ক। তাই সকালে জলখাবারে প্রতিদিন ওটস্ খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৬) গ্রিন টি বা সবুজ চা আজকাল অনেকেই ভালোবাসেন। ওজন কমানো ও হজমশক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি এই সবুজ চা রক্তে কোলেস্টেরলকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৭) কোলেস্টেরল কম রাখার আরেকটি ভালো উপায় হল রান্নায় অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করা। এই তেলে রয়েছে মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন ই –যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৮) গবেষণায় দেখা গেছে, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এই উপাদানের সবচেয়ে ভালো উৎস হল মাছ। আপনার দুপুর ও রাতের খাবারে সপ্তাহে অন্তত তিনদিন মাছের পদ রাখুন। এছাড়া জলপাই বা শিম জাতীয় খাদ্যতেও ওমেগা থ্রি রয়েছে।
তবে এইসব খাওয়ার পাশাপাশি আপনাকে অবশই কিছু বিধিনিষেধ মানতে হবে। প্রথমত, ধূমপান ও মদ্যপান সম্পূর্ণ রূপে ছাড়তে হবে। এ দুটোই রক্তে খুব দ্রুত কোলেস্টেরল বাড়িয়ে তোলে। দ্বিতীয়ত, ডিপ ফ্রাই খাবার, বেশি তেল- মশলাযুক্ত খাবার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিপ্স এগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে। তাছাড়া রেড মিট, ঘি, বাটার, ডিমের কুসুম এগুলোও এড়িয়ে চলতে হবে। চিকিৎসকেরা বলেন, কুসুমসহ ডিম সপ্তাহে দু-তিনদিন খাওয়ায় যেতে পারে; এর বেশি নয়। আইসক্রিম, কেক, পেস্ট্রি এবং মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলোও বাদ দিতে হবে। এই খাবারগুলো ওজন বৃদ্ধি করা, রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তোলার পাশাপাশি কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণও অনেক বেশি বাড়িয়ে তোলে। তাই এই সমস্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে নিজেকে দূরে রাখুন এবং স্বাস্থ্যকর খাবারের সাথে মিত্রতা বাড়ান। দেখবেন, কোন রকম ওষুধপত্র ছাড়াই আপনার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। আর কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকা মানে আপনার হার্টও সুরক্ষিত থাকা।