অনলাইন ডেস্ক : সাত-আট মাস ধরে মাসোহারা পাচ্ছেন না জলমিত্ররা। দিন কাটছে অর্ধাহারে। অথচ সেই জলমিত্রদের পারিশ্রমিক আদায়ের বিনিময়ে কমিশন দাবি করছে একাংশ গাঁও পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। এই গুরুতর অভিযোগ সারা আসাম পিএইচই অস্থায়ী শ্রমিক কর্মচারী পরিষদের।
বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার কাছাড়ের জেলা আয়ুক্তকে স্মারকপত্রের মাধ্যমে নালিশ জানিয়েছে পরিষদের কাছাড় জেলা কমিটি। সেই সঙ্গে জলমিত্রদের মাসোহারা দ্রুত মিটিয়ে দিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে জেলা আয়ুক্তের। স্মারকপত্রের প্রতিলিপি প্রেরণ করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, বিভাগীয় মন্ত্রী জয়ন্ত মল্ল বরুয়া, পিএইচই-র শিলচর সংমণ্ডল ১ ও ২-র কার্যবাহী বাস্তুকার -সহ জেলা পরিষদের সিইও’কে।
স্মারকপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘবছর বিনা বেতনে পরিষেবা প্রদানের পর ২০২২-র জুলাইয়ে সরকার অসমে কর্মরত জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগের অস্থায়ী কর্মীদের জল মিত্র হিসাবে নিযুক্তি দেয়। শুরুতে কাছাড় জেলার জল মিত্ররা গাঁও পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ১২ থেকে ১৫ মাস পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের তহবিল থেকে তাদের পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন। তারপর থেকে বেশিরভাগ গাঁও পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে জিপি সচিবরা নানা অজুহাতে জল মিত্রদের পারিশ্রমিক প্রদান করেননি। কিছু গাঁও পঞ্চায়েত আবার পারিশ্রমিক রিলিজ করার বিনিময়ে দাবি করেন মোটা অংকের কমিশন। স্বল্প পারিশ্রমিকে কাজ করা জলমিত্ররা সেই কমিশন দিতে পারেননি।
এছাড়া পারিশ্রমিকের ব্যাপারে বিভিন্ন খণ্ড উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-ও জল মিত্রদের এই বলে বিভ্রান্ত করছে যে, তাদের কাছে জলমিত্রদের জন্য কোনও তহবিল নেই। কখনও বলা হচ্ছে, জল মিত্রদের পারিশ্রমিক মুক্ত করার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাদের কাছে কোনও নির্দেশ আসেনি। নিটফল, বেশিরভাগ জলমিত্র গত ৭-৮ মাস ধরে তাদের বৈধ পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
এসব কথা উল্লেখ করে স্মারকপত্রে বলা হয়, জল মিত্রদের প্রায় সবারই স্ত্রী-সন্তান-সহ পরিবারে রয়েছেন একাধিক সদস্য। পারিবারের দায়দায়িত্বের পাশাপাশি রয়েছে শিক্ষা ও চিকিৎসার খরচ। এমন পরিস্থিতিতে লাগাতার কয়েকমাস বেতন বন্ধ থাকার কারণে চরম আর্থিক সংকটে ভুগছেন জলমিত্ররা। এছাড়া বিভাগীয় দায়িত্ব পালনের জন্যও দূরদূরান্তে যেতে হয় তাদের। বর্তমানে সেই যাওয়া আসার মাশুল আদায় করা এবং নিয়মিত পরিষেবা প্রদান বজায় রাখা তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এ ব্যাপারে জেলা আয়ুক্তের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছে পরিষদের জেলা কমিটি। এদিন স্মারপত্র প্রদান করেছেন সংস্থার জেলা সভাপতি সামিম আহমদ লস্কর, সম্পাদক সুব্রত দাস, বিজিত শর্মা, মনজুর আহমদ মাঝারভূইয়া, রাধাকান্ত সিংহ, লুৎফুর রহমান লস্কর, নেপালচন্দ্র দাস সহ অন্যান্যরা।