অনলাইন ডেস্ক : চব্বিশ ঘন্টার বেশি সময় অতিক্রান্ত হলেও অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশি যুবকের হদিস পাওয়া যায় নি । বুধবার অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর রাতের বেলা যুবকটির বাংলাদেশের মটর সাইকেল বাজেয়াপ্ত করে করিমগঞ্জ পুলিশ । এরপর থেকে করিমগঞ্জ সহ বরাক উপত্যকা ছাড়াও ত্রিপুরা, মিজোরাম ইত্যাদি রাজ্যে খোঁজ শুরু হয়েছে । পরিস্থিতির খবর নিতে বৃহস্পতিবার বিএসএফের ডিআইজি সিপি মিনা করিমগঞ্জে ছুটে আসেন । সুতারকান্দি তে ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে এই ইস্যু নিয়ে ফ্ল্যাগ মিটিং অনুষ্ঠিত হয় । বাংলাদেশি যুবকের এভাবে ভারতে প্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দু দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তারা । তবে বাংলাদেশ বিজিবি বাইকের নম্বর অনুযায়ী যুবকটি কে শনাক্ত করেছে বলে একটি বিশেষ সূত্রে খবর পাওয়া গেছে ।
করিমগঞ্জ জেলার সুতারকান্দি ইন্দো বাংলা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি যুবকের ভারতে প্রবেশের ঘটনা নিয়ে উপত্যকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে । বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর চোখের সামনে দিয়ে ব্যারিগেড অতিক্রম করে এভাবে বাংলাদেশি যুবকের প্রবেশ সীমান্ত সুরক্ষা কে প্রশ্ন চিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে । বুধবার বিকেলে ঘটনার পর পুলিশ ও বিএসএফ উভয়ে তল্লাশি শুরু করেন । রাতের বেলা শহরের মদন মোহন রোড এলাকা থেকে যুবকটির সিলেট-হ-১৪ ৯৬৩৮ নম্বরের বাংলাদেশের মটর সাইকেল বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ । রাতের বেলা বোম স্কোয়াড এবং গোয়েন্দা কুকুর নিয়ে পুলিশ মটর সাইকেল টি চেক করে থানায় নিয়ে যায় । অবশ্য কোনো বিস্ফোরক বা অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া যায় নি । পরবর্তীতে বিএসএফের তরফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় । মটর সাইকেলের নম্বর দিয়ে প্রাথমিক ভাবে মানুষ টিকে শনাক্ত করেছে বিজিবি । তবে তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে সেই যুবকের নাম প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না । এদিকে গত ২৪ ঘন্টা ধরে এই যুবক কোথায় কি করছে এ বিষয় রীতিমত ভাবিয়ে তুলেছে পুলিশ প্রশাসন কে । জানা গেছে যুবকটির সঙ্গে দুটি বেগ রয়েছে সেটা সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল । কি উদ্দেশ্য নিয়ে এভাবে এই যুবক ভারতে প্রবেশ করলো এনিয়ে দুশ্চিন্তায় পুলিশ ও বিএসএফ ।
এদিকে সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে মটর সাইকেল টি উদ্ধার হয়েছে । আর যে স্থানে মটর সাইকেল উদ্ধার হয়েছে সেটা ব্যবসায়ী এলাকা । বিগত দিনে সোনার একটা বড় কালোবাজারি এই বিস্তর এলাকায় সক্রিয় ছিল । এখনও কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী এই কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে । যদিও বাংলাদেশি যুবকের আসার কোনো নিশ্চিত কারণ এখনো জানা যায় নি । বৃহস্পতিবার বিএসএফের ডিআইজি সিপি মিনা করিমগঞ্জে ছুটে আসেন । বাংলাদেশ বিজিবি এবং পুলিশের সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিং অনুষ্ঠিত হয় । সেখানে এই ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় । যুবকটির বাকি তথ্য খুঁজে বের করতে বাংলাদেশ নিরাপত্তা রক্ষী কাজ শুরু করে দিয়েছে । এইভাবে বাংলাদেশি নাগরিকের ভারতে প্রবেশ প্রথম ঘটনা এবং দুর্বল পয়েন্টগুলি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে বিএসএফ । অন্যদিকে, সীমান্তের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ঠিকমতো কাজ করছে না ।ব্যারিকেডগুলো ঠিকভাবে স্থাপন করা হয়নি এবং রাস্তার অবস্থাও করুণ। এর পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যাও আছে যেগুলো সঠিকভাবে যত্ন না নিলে জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষতি হতে পারে বলে অভিযোগ । সরকারি সূত্রে জানা গেছে, সুতারকান্দি স্থলবন্দর এলাকায় ৪৭টি সিসিটিভি ক্যামেরার মধ্যে মাত্র ২১টি কাজ করছে বাকি ক্যামেরাগুলি বিকল । ডিআইজি জানান, ল্যান্ডপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এলপিএআই) বাণিজ্যের উপর আরও বেশি মনোযোগ দিচ্ছে এবং অন্যান্য দিকগুলিকে উপেক্ষা করছে যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। ব্যাবসার পাশাপাশি নিরাপত্তার উপর আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে । এছাড়া বিএসএফ জোয়ান দের রোদ বৃষ্টির মধ্যে কাজ করতে হয় অথচ সঠিক কোনো শেডের ব্যাবস্থা নেই । তিনি জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং এর পর কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে।তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা অতীতে কখনও ঘটেনি। আগামী তে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেটা নিশ্চিত করা হবে । পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিএসএফের কাছ থেকে অধিক তথ্য পাওয়ার পরই পুলিশ আরো জোর তদন্ত আরম্ভ করবে । যদিও বর্তমানে অসম সহ ত্রিপুরা, মিজোরাম ইত্যাদি এলাকায় পুলিশ খোঁজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে ।