অনলাইন ডেস্ক : অসম সহ গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সর্বাঙ্গীন বিকাশ ঘটাতে অপরিসীম গুরুত্ব প্রদান করছেন প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদী। রবিবার ‘অমৃত ভারত স্টেশন’ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষ্যে গুয়াহাটির পার্শ্ববর্তী নারেঙ্গি রেলস্টেশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
‘অমৃত ভারত স্টেশন’ প্রকল্পের অধীনে আজ উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের অন্তর্গত দেশের ৫০৮-এর সঙ্গে অসমের ৩২, ত্রিপুরার তিন, একটি করে নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়, পশ্চিমবঙ্গে ১৬টি, বিহারে তিনটি সহ ৫৬টি স্টেশনকে পুনঃবিকাশের জন্য ভার্চুয়ালি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অসমে ‘অমৃত ভারত স্টেশন’ প্রকল্পের অধীনে ভিস্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নারেঙ্গি রেলস্টেশনে অসমের রাজ্যপাল গোলাপচাঁদ কাটারিয়া, সাংসদ (রাজ্যসভা) তথা মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব পবিত্র মার্ঘেরিটা, গুয়াহাটির সাংসদ কুইন ওজা, গুয়াহাটির মেয়র মৃগেন শরণিয়া, উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের চিফ জেনারেল ম্যানেজার চেতনকুমার শ্ৰীবাস্তব সহ বিভাগীয় এবং সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক ও সমাজের বিশিষ্ট নাগরিকদের উপস্থিতিতে বক্তব্য পেশ করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, আমাদের দেশ এখন স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছে। প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদী ২০৪৭ সাল পর্যন্ত ভারতের রূপান্তর এবং বিকাশ-যাত্ৰাকে অমৃতকাল হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এই অমৃতকালে মানবসম্পদ, শিক্ষা, ক্ৰীড়া, অন্যান্য পরিকাঠামো ইত্যাদি সব ক্ষেত্ৰে ভারত বিশ্বের সৰ্বোচ্চ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারত বিশ্বগুরুর আসনে উপবিষ্ট হতে সক্ষম হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বৰ্তমান ভারতবৰ্ষের অৰ্থনীতি বিশ্বের প্ৰথম পাঁচটি রাষ্ট্ৰের মধ্যে অন্তৰ্ভুক্ত হয়েছে। অতি কম দিনের মধ্যে ভারতবৰ্ষ বিশ্বের তৃতীয় সৰ্ববৃহৎ অৰ্থনৈতিক রাষ্ট্ৰ হিসেবে পরিগণিত হবে। শর্মা বলেন, রূপান্তরের যাত্ৰায় প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদী সমগ্ৰ দেশের ৫০৮টি রেলওয়ে স্টেশনকে আধুনিক স্তরে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা গ্ৰহণ করেছে, যাতে আগামী ২৫ বছরে ভারতীয় রেলওয়েকে আরামদায়ক যাত্ৰা হিসেবে গড়ে তোলা যায়। এর জন্য অমৃত ভারত স্টেশন-এর পরিকল্পনা করা হয়েছে, বলেন তিনি। আরও বলেন, অসমের ৫০টি রেলওয়ে স্টেশনকে অমৃত ভারত স্টেশনে রূপান্তরিক করার পদক্ষেপ রাজ্যবাসীর কাছে গৌরবের বিষয়। এর মধ্যে আজ থেকে ৩২টি রেলওয়ে স্টেশনের পুনঃবিকাশের কাজে শুভারম্ভ হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব বলেন, এই সব রেলওয়ে স্টেশন নিৰ্মাণের ফলে যাত্ৰীদের নতুন অভিজ্ঞতা প্ৰদান করবে। বন্দেভারত ট্রেনের সূচনা হওয়ার পর আজ যাত্ৰীরা বিমানের পরিবৰ্তে রেলে যাত্ৰা করতে চান। বন্দেভারত এক্সপ্ৰেস সম্পূর্ণ দেশীয় প্ৰযুক্তিতে নিৰ্মাণ করা হয়েছে। এটা বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকৰ্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আরও বলেন, উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের অধীনে বহু নতুন কাজ শুরু হয়েছে। এখন রেল বিভাগ জীবাস্ম ইন্ধনের পরিবর্তে বৈদ্যুতিক রেলপথের ব্যবস্থা করেছে। উত্তর-পূৰ্বাঞ্চলের সব মিটারগজ ব্ৰডগজে রূপান্তরিত হয়েছে, বলেন মুখ্যমন্ত্রী। শর্মা বলেন, ভারতীয় রেলওয়ে অসমবাসীকে বগিবিল সেতু উপহার দিয়েছে। এ বছর রেল বাজেটে উত্তর-পূৰ্বাঞ্চলের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর ফলে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়েতে দ্ৰুত পরিবৰ্তন সম্ভব হবে বলে মনে করেন হিমন্তবিশ্ব। তিনি বলেন, গুয়াহাটি রেলওয়ে স্টেশনকে জাপানের রেলওয়ে স্টেশনের আদলে প্ৰায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিকভাবে গড়ে তোলা হবে। একদিনেই অসমের ৩২টি রেল স্টেশনকে আধুনিকীকরণ করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করায় মুখ্যমন্ত্ৰী প্ৰধানমন্ত্ৰী এবং রেলমন্ত্ৰী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।