অনলাইন ডেস্ক : ড্রাগস বা বার্মিজ সুপারি নয়, করিমগঞ্জ জেলার অন্তর্গত বদরপুর পুলিশের অভিযানে বিদেশে তৈরি তিনটি পিস্তল সহ তিন যু- ডাকাতকে আটক করার পাশাপাশি একই রাতে করিমগঞ্জের কায়স্থগ্রাম থেকে সিনেমার কায়দায় আগ্নেয়াস্ত্র সমেত কুখ্যাত পাঁচ ডাকাতকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, উত্তর করিমগঞ্জের বালিয়া নরসিংহ মন্দিরে ডাকাতিকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড নিলামবাজারের সালিম উদ্দিনের নেতৃত্বে করিমগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে ভয়ংকর ডাকাতির পরিকল্পনার তথ্য লাভ করে করিমগঞ্জ জেলার পুলিশ। ডাকাত দলের সাথে আগ্নেয়াস্ত্র থাকার খবর লাভ করে গোটা জেলায় পুলিশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। খোদ পুলিশ সুপার পার্থপ্রতিম দাস এবং ডিএসপি হেডকোয়ার্টার গীতার্থ দেবশর্মা সাদা পোশাকে অভিযান নামেন। শনিবার রাত অনুমানিক ১২টা নাগাদ কায়স্থগ্রাম লেভেল ক্রসিঙে গেইট ফেলে এই সফল অভিযান চালায় পুলিশ।
রেলগেইটের আশপাশে লুকিয়ে ছিল পুলিশের প্রায় ৩০ জনেক এক বিশাল দল। তাঁরা এক সাথে চারিদিক থেকে ঘেরাও করলে সাফল্য মেলে। ধৃত ডাকাত দলের কাছ থেকে উদ্ধার হয় পাঁচটি বন্দুক সহ বেশ কিছু সংখ্যক সক্রিয় গুলি। আটক করা হয় করিমগঞ্জের সুতারকান্দি এলাকার আব্দুল লতিফ ও জমির উদ্দিন, লঙ্গাই কর্ণমধু এলাকার বাসিন্দা মইনুল হক, নিলামবাজারের হালিম উদ্দিন এবং কাছাড় জেলার কালাইনের মণির উদ্দিন নামের পাঁচ দুর্ধর্ষ ডাকাতকে। আজ রবিবার করিমগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) অমিতরাজ চৌধুরী এই খবর দিয়ে জানান, গতকাল রাতেই তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। বিশেষ সূত্রে অভিযানে নামে পুলিশের দল। এর পর পাঁচ ডাকাতকে আটক করার পাশাপাশি তাদের হেফাজত থেকে বন্দুক, পিস্তল সহ পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এএসপি জানান, ধৃতদের রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের তদন্তকারী দল বহু তথ্য লাভ করেছে। এই কাণ্ডে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে, জানান চৌধুরী। তিনি জানান, ধৃত পাঁচজনের মধ্যে একজনের ক্রিমিনাল রেকর্ড রয়েছে। যার দরুন পুলিশ গুরুত্ব সহকারে বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে। আজ ধৃত পাঁচজনকে আদালতে তোলা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশে তাদের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, শনিবার মধ্যরাতে করিমগঞ্জ জেলার অন্তর্গত বদরপুর পুলিশের অভিযানে উদ্ধার হয়েছে বিদেশে তৈরি তিনটি পিস্তল। এর সঙ্গে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র মজুতের অভিযোগে তিন যুব-ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত তিন ডাকাতকে বদরপুর থানাধীন দত্তপুর গ্রামের সাব্বির আহমেদ, কবির আহমেদ এবং ধনলাল রবিদাস বলে পরিচয় পাওয়া গেছে। তাদের হেফাজত থেকে একটি কার এবং একটি মোটর বাইকও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
আজ রবিবার বদরপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের কাছে খবর ছিল, একটি বড়সড় ডাকাতির উদ্দেশ্যে কতিপয় দুর্বৃত্ত এই অঞ্চলে হানা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। ওই দলের গতিবিধির ওপর নজরদারি রাখতে গতকাল মধ্যরাতে অভিযান চালিয়েছিল বদরপুর থানার পুলিশ। অভিযান চলাকালীন এএস ০২ জেড ৮১১৭ নম্বরের একটি অল্টো কার, বিআর ০১ বিকিউ ৩৬৭৯ নম্বরের ডিস্কভার মডেলের মোটর বাইক এবং দুটি মোবাইল ফোনের হ্যান্ডসেট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃত সন্দেহভাজন ডাকাতরা পুলিশের কাছে প্রদত্ত বয়ানে নাকি স্বীকার করেছে, পিস্তলগুলি তারা নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর থেকে কিনে এনেছে। তবে কোথায়, কার বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি করার পরিকল্পনা তাদের ছিল সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, জানিয়েছে পুলিশ। ধৃত সবার বিরুদ্ধে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র আইনের নির্দিষ্ট ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে।